করোনা মহামারীতেও ওয়ালটন টিভির রফতানি বেড়েছে ১০ গুণ

নিজস্ব প্রতিবেদক

করোনা মহামারীর প্রভাবে ২০২০ সালে বৈশ্বিক বাণিজ্যে অচলাবস্থার সৃষ্টি হলেও বাংলাদেশের রফতানি খাত অর্থনীতিতে স্বস্তির খবর দিল ওয়ালটন। ২০১৯-এর তুলনায় ২০২০ সালে ১০ গুণ বেশি টেলিভিশন রফতানির মাধ্যমে জাতীয় অর্থনীতি রফতানি আয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে বাংলাদেশী ইলেকট্রনিকস জায়ান্ট ওয়ালটন।

গতকাল রাজধানীতে ওয়ালটন করপোরেট অফিসে হাইয়েস্ট টেলিভিশন এক্সপোর্ট ইন-২০২০ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে তথ্য জানানো হয়। অনুষ্ঠানে ভার্চুয়াল মাধ্যমে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব হাফিজুর রহমান, গ্রিসে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আশুদ আহমেদ, বাংলাদেশে অবস্থিত ডেনমার্ক দূতাবাসের ডেপুটি অ্যাম্বাসেডর রেফিকা হায়াত এবং হেড অব ডেনিশ ট্রেড মিশন আলী মুশতাক বাট।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ভাইস চেয়ারম্যান এসএম শামছুল আলম, পরিচালক রাইসা সিগমা হিমা রিফাহ তাসনিয়া স্বর্ণা, ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী গোলাম মুর্শেদ, উপব্যবস্থাপনা পরিচালক হুমায়ূন কবীর, ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ইউনিটের (আইবিইউ) প্রেসিডেন্ট এডওয়ার্ড কিম, ওয়ালটন টিভির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা প্রকৌশলী মোস্তফা নাহিদ হোসেন, নির্বাহী পরিচালক ফিরোজ আলম এবং ইউরোপে ওয়ালটনের হেড অব বিজনেস প্রকৌশলী তাওসিফ আল মাহমুদ।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, স্থানীয় চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি ওয়ালটন ২০১০ সাল থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নিজস্ব কারখানায় তৈরি টেলিভিশন রফতানি করছে। বর্তমানে বিশ্বের ৩৫টিরও বেশি দেশে রফতানি হচ্ছে ওয়ালটনের তৈরি টিভি। ২০১৯ সালের তুলনায় ২০২০ সালে জার্মানি, গ্রিস, আয়ারল্যান্ড, পোল্যান্ড, স্পেনসহ বিশ্বের অনেকগুলো দেশে ১০ গুণ বেশি রফতানি হয়েছে ওয়ালটন টেলিভিশন।

অনুষ্ঠানে বাণিজ্য মন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, আমাদের লক্ষ্য ২০২১ সালে ৪৮ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রফতানি। সে লক্ষ্য অর্জনে ওয়ালটন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। আমি অত্যন্ত আনন্দিত, টেলিভিশন রফতানির ক্ষেত্রে আমরা জায়ান্ট হয়ে উঠছি। শুধু টেলিভিশন নয়, ইলেকট্রনিকস খাতের সব ক্ষেত্রেই আমাদের দেশীয় প্রতিষ্ঠান ওয়ালটন চমত্কার কাজ করছে।

অতিরিক্ত সচিব হাফিজুর রহমান বলেন, রফতানি আয় কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে ওয়ালটন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। করোনা মহামারীতেও স্থানীয় চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি ওয়ালটন দেশের রফতানি আয় বৃদ্ধিতে অবদান রেখেছে। আমার বিশ্বাস, সাশ্রয়ী মূল্যে উচ্চমানের পণ্য সরবরাহের কারণে ওয়ালটন বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলের বাজার ধরতে পেরেছে। ওয়ালটন দেশের জন্য খ্যাতি সম্মান বয়ে আনছে।

এদিকে কভিড-১৯ পরিস্থিতির মধ্যেও সর্বোচ্চ পরিমাণ টিভি রফতানির জন্য এক -মেইল বার্তায় ওয়ালটনকে অভিনন্দন জানিয়েছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত জার্মান রাষ্ট্রদূত পিটার ফাহরেনহল্টজ।

স্থানীয় আন্তর্জাতিক বাজারে ওয়ালটনের প্রবৃদ্ধির বর্তমান ধারাকে যৌবনকাল বলে আখ্যায়িত করেন ওয়ালটন হাই-টেকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী গোলাম মুর্শেদ। তিনি বলেন, ইতোমধ্যেই বিশ্ববাজারে ওয়ালটনের যুগ শুরু হয়েছে। ইলেকট্রনিকস প্রযুক্তিপণ্য খাতে আমরা বিশ্বে বাংলাদেশের পতাকা আরো উঁচুতে তুলে ধরে দেশকে সম্মানিত করতে এবং দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিতে অবদান রাখতে চাই। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, রফতানির ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় নীতিসহায়তা পেলে ইলেকট্রিক ইলেকট্রনিকস শিল্প খাত হবে বাংলাদেশের শীর্ষ রেমিট্যান্স অর্জনকারী খাত।

ওয়ালটন টিভির সিইও প্রকৌশলী মোস্তফা নাহিদ হোসেন বলেন, বাংলাদেশের শীর্ষ টিভি রফতানিকারক প্রতিষ্ঠান ওয়ালটন। আধুনিক বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ওয়ালটন যুগোপযোগী ডিজাইন সর্বাধুনিক প্রযুক্তির টেলিভিশন উৎপাদন করছে। ওয়ালটন টিভির অত্যাধুনিক প্রযুক্তি উচ্চমানের প্রতি আত্মবিশ্বাস তৈরি হওয়ায় বৈশ্বিক ক্রেতাদের কাছ থেকে ব্যাপক সাড়া মিলছে। বিশ্বের সেরা পাঁচটি টেলিভিশন প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের তালিকায় পৌঁছানোর মিশন নিয়ে আমরা কাজ করছি। পাশাপাশি ২০২৩ সালের মধ্যে পাঁচটি মহাদেশীয় অঞ্চলের সব দেশে ওয়ালটনের তৈরি টেলিভিশন রফতানির টার্গেট নেয়া হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন