গত এক বছরে নভেল করোনাভাইরাস মহামারী আমাদের নানামুখী বাস্তবতার মুখোমুখি করেছে। এটি এমন অনেক প্রশ্ন আমাদের সামনে হাজির করেছে, যা নিয়ে আমরা হয়তো এর আগে কখনই ভাবিনি। তেমনই একটি প্রশ্ন হচ্ছে নভেল করোনাভাইরাস ভোক্তা হিসেবে আমাদের আরো নৈতিক করেছে কিনা? সম্প্রতি প্রকাশিত একাধিক সমীক্ষা বলছে, ভোক্তা হিসেবে অনেকে মনে করেন এই মহামারী তাদের আরো বেশি নৈতিক করে তুলেছে।
যারা মনে করেন মহামারী তাদের আরো নৈতিকতাসম্পন্ন মানুষে পরিণত করেছে, তাদেরই একজন যুক্তরাজ্যের কিম্বার্লি বার্ড। তিনি বলেন, নভেল করোনাভাইরাস পরিবেশগত দিক থেকে তাকে আরো নৈতিক ভোক্তায় পরিণত করেছে। ইংল্যান্ডের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের শহর ইয়েওভিলের ৩২ বছর বয়সী এই অধিবাসী আরো বলেন, মহামারীকালীন বছরটি আমাকে অতিরিক্ত গাড়ি চালানোর কুফল সম্পর্কে শিক্ষা দিয়েছে। পাশাপাশি আমি আমার ব্যবহূত পণ্যগুলোর দিকে যখন তাকাই এবং আরো বেশি পরিবেশবান্ধব বিকল্পের সন্ধান করি। যতটা সম্ভব আমি পণ্যগুলো পুনর্ব্যবহার করছি। যা আমার প্রয়োজন নেই, তা হয়তো দান করে দিচ্ছি কিংবা সরিয়ে ফেলছি। তবে এমন নয় যে এ তালিকায় তিনি একাই আছেন।
কভিড-১৯-এর মহামারী এবং সে-সংক্রান্ত লকডাউন আমাদের অনেকের অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তাকে অনেকটাই বাড়িয়ে দিয়েছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে যে কেউ হয়তো ভাবতে পারে যে বাজার করার সময় আমরা নীরবে আমাদের নৈতিকতা এবং পরিবেশগত উদ্বেগ সরিয়ে রেখেছি। কিন্তু একাধিক প্রতিবেদন ও গবেষণা বলছে, করোনাভাইরাস আমাদের মনকে আরো ভালো এবং স্বাস্থ্যকর পৃথিবী তৈরির দিকে চালিত করেছে। অ্যাসেনচুর নামে একটি পরামর্শ সংস্থার জরিপ বলছে, ভোক্তারা এ সময় নাটকীয়ভাবে বিকশিত হয়েছে এবং মহামারী শুরুর পর থেকে ৬০ শতাংশের মাঝে আগের তুলনায় অধিক পরিবেশবান্ধব, টেকসই কিংবা নৈতিক কেনাকাটার প্রবণতা দেখা গেছে।
অ্যাসেনচুর আরো বলেছে, এই ৬০ শতাংশের মাঝে দশজনের নয়জনই জানিয়েছে, তারা ভবিষ্যতেও এই অভ্যাস ধরে রাখবে।
অন্যদিকে গবেষণা সংস্থা কানতারের একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, কভিড-১৯-এর পর থেকে ভোক্তারা আগের চেয়ে বেশি টেকসই পণ্যের দিকে নজর দিচ্ছে। ইপসোস মোরির একটি বৈশ্বিক জরিপে উত্তরদাতারা বলছে, করোনাভাইরাসের পর অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের ক্ষেত্রে জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়ে গুরুত্ব দেয়া জরুরি।
বিবিসি অবলম্বনে