তালিকাভুক্ত কোম্পানির শেয়ারদর, লেনদেন ও ইপিএসে অস্বাভাবিক উত্থান-পতনের বিষয়ে তদন্তের জন্য মঙ্গলবার উভয় স্টক এক্সচেঞ্জকে দেয়া নির্দেশ স্থগিত করেছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। গতকাল কমিশনের পক্ষ থেকে এ স্থগিতাদেশের চিঠি উভয় স্টক এক্সচেঞ্জের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা বরাবর পাঠানো হয়েছে। ফলে কমিশনের পাঠানো আগের চিঠির কোনো কার্যকারিতা থাকল না।
চিঠিটির কার্যকারিতা স্থগিতের বিষয়ে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম বণিক বার্তাকে জানান, পুঁজিবাজার ও বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত কমিশন এর কার্যকারিতা স্থগিত করেছে।
মঙ্গলবারের ওই চিঠিতে দেশের শেয়ারবাজারে ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে যেসব কোম্পানির শেয়ারদরে ৫০ শতাংশের বেশি পরিবর্তন হবে, সেসব শেয়ার লেনদেনের ক্ষেত্রে কোনো অনৈতিক চর্চার আশ্রয় নেয়া হয়েছে কিনা, দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জ কর্তৃপক্ষকে তা খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেয় বিএসইসি।
শুধু দর বৃদ্ধিই নয়, ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে যেসব কোম্পানির শেয়ারের দাম ৫০ শতাংশের বেশি কমবে, সেগুলোর বিষয়েও খতিয়ে দেখতে বলেছিল বিএসইসি। এছাড়া তালিকাভুক্ত যেসব কোম্পানির বার্ষিক বা প্রান্তিক শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) আগের হিসাব বছর বা প্রান্তিকের চেয়ে ৫০ শতাংশ বা তার বেশি কমবে অথবা বাড়বে এবং এক মাসে যেসব কোম্পানির গড় লেনদেনের পরিমাণ আগের ছয় মাসের গড় লেনদেনের চেয়ে পাঁচ গুণের বেশি বাড়বে, সেসব কোম্পানির শেয়ারের এসব পরিবর্তনের নেপথ্যের কারণও তদন্ত করতে বলে বিএসইসি।
এর বাইরে মূল্যসংবেদনশীল তথ্য প্রকাশের আগের ১০ কার্যদিবসে যেসব কোম্পানির শেয়ারদর ও লেনদেন ৩০ শতাংশ বা তার বেশি ওঠানামা করবে, সেসব কোম্পানির বিষয়েও তদন্তের নির্দেশ দেয়া হয়েছিল। এ ধরনের কোনো ঘটনা শনাক্ত হওয়ার ৪৫ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত শেষ করে তাদের নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাছে প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছিল চিঠিতে।
ওই চিঠির বিষয়ে বিএসইসের মুখপাত্র জানিয়েছিলেন, এই আদেশ জারির পর উল্লিখিত শর্তগুলোর আওতায় যদি কোনো ঘটনা ঘটে, তবে সেগুলো খতিয়ে দেখবে স্টক এক্সচেঞ্জ কর্তৃপক্ষ। অর্থাৎ সাম্প্রতিক সময়ে যেসব অস্বাভাবিক দর ও লেনদেন বৃদ্ধির ঘটনাগুলো ঘটেছে, সেগুলো এ আদেশের আওতায় পড়বে না। ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা ঘটলে সেগুলো তদন্তের আওতায় আনা হবে। তবে চিঠিটির কার্যকারিতা স্থগিত হওয়ায় পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত এ ধরনের কোনো তদন্ত পরিচালিত হবে না।