মাস্ক ব্যবহারের সুবিধা

কসমেটিক সার্জারিতে ঝোঁক বেড়েছে দক্ষিণ কোরীয়দের

বণিক বার্তা ডেস্ক

গত ডিসেম্বরের মাঝামাঝিতে নাকের কসমেটিক সার্জারি করিয়েছিলেন রিয়ু হান-না নামে ২০ বছর বয়সী এক তরুণী। বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া এই দক্ষিণ কোরীয় তরুণীর এমন উদ্যোগ নেয়ার বেশ সরল একটি কারণ রয়েছে। নতুন বছরে ভ্যাকসিন সবার কাছে পৌঁছে গেলে মহামারী নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে এবং তখন হয়তো মাস্ক পরার বাধ্যবাধকতা উঠে যাবে। সেই সময়টা আসার আগে মাস্ক পরার সুবিধা কাজে লাগিয়ে মুখের ওপর কাঁচি চালাতে দিলেন রিয়ু।

পুরো ২০২০- কোর্সগুলো অনলাইনে সম্পন্ন করা রিয়ুু বলেন, বাড়িতে অবস্থান করার সুযোগ এবং বাইরে বেরোলে মাস্ক পরার কারণে মানুষের মনোযোগ থেকে দূরে থাকা যায়। কারণে সিদ্ধান্ত নেয়া।

তিনি বলেন, আমি সবসময় নাকের কসমেটিক সার্জারি করাতে চাইতাম। আমার মনে হয়েছে, ২০২১ সালে ভ্যাকসিন গ্রহণ করার সঙ্গে মুখ থেকে মানুষের মাস্ক খুলে ফেলার আগে এটা একটা সেরা সুযোগ। কাজটা সম্পন্ন করতে তার খরচ হয়েছে ৪৪ লাখ ওন বা হাজার ১৩ ডলার। তিনি আরো বলেন, অস্ত্রোপচারের পর ক্ষত এবং ফোলা থাকবে কিন্তু আমরা যেহেতু মুহূর্তে মাস্ক পরে থাকি, তাই বিষয়টা সহায়ক হবে। এমন চিন্তা শুধু রিয়ুরই নয়, বরং অসংখ্য ফ্যাশনসচেতন দক্ষিণ কোরীয় নারী পুরুষ আরো সুন্দর হওয়ার আশায় সার্জনের কাঁচির নিচে নিজেকে সঁপে দিয়েছেন। 

দক্ষিণ কোরিয়ায় ধরনের অস্ত্রোপচারের চাহিদা ব্যাপকভাবে বেড়ে গেছে। অনেক অর্থনৈতিক খাত সংকুচিত হলেও ২০২০ সালে চাঙ্গা ছিল কসমেটিক সার্জারি হার বৃদ্ধি। অবশ্য মহামারীর আগেও দক্ষিণ কোরিয়াকে কসমেটিক সার্জারির তীর্থভূমি হিসেবে বিবেচিত করা হতো। দেশটির বৃহত্তম অনলাইন কসমেটিক সার্জারি প্লাটফর্ম গ্যাংনাম উন্নির মতে২০২০ সালে শিল্পের আকার দাঁড়িয়েছে হাজার ৭০ কোটি ডলার। যা কিনা আগের বছরের তুলনায় বেড়েছে দশমিক শতাংশ। পাশাপাশি আশা করা হচ্ছে চলতি বছর খাতের আকার দাঁড়াবে হাজার ১৮০ কোটি ডলার।

কসমেটিক সার্জনরা বলছেন, রোগীরা তাদের মুখের সবকিছু নিয়েই আগ্রহী, যেগুলো মাস্কের ভেতর সহজেই আড়াল করে রাখা যায়, সেগুলো নিয়ে তো বটেই। যেমন নাক ঠোঁট। এছাড়া যে অংশগুলো মাস্ক দিয়ে আড়াল করে রাখা যায় না, তা নিয়ে আগ্রহ রয়েছে। যাকে অনেকেই করোনাকালে সৌন্দর্যের মানদণ্ড হিসেবে বিবেচনা করছেন।

ওয়াহলিন প্লাস্টিক সার্জারি ক্লিনিকের সার্জন পার্ক চেওল- বলেন, চোখ, ব্রু, নাক কপালের মতো যেসব অংশ দৃশ্যমান রয়েছে, সেগুলো নিয়ে সার্জিক্যাল নন-সার্জিক্যাল উভয় ধরনের অনুসন্ধান চলছে।

ক্রিসমাস প্লাস্টিক সার্জারি ক্লিনিকের পরিচালক শিন সাং-হো বলেন, অনেক মানুষ সরকার থেকে পাওয়া জরুরি প্রণোদনার অর্থ হাসপাতাল ক্লিনিকগুলোয় খরচ করেছে। ফলে ২০২০ সালের তৃতীয় চতুর্থ প্রান্তিকে রাজস্ব অনেকটাই বেড়ে গেছে।

শিন আরো বলেন, মনে হয় খরচটা অনেকে জেদ করে করছে। আমার ধারণা, গ্রাহকরা নিজেদের নভেল করোনাভাইরাসজনিত অবদমিত ক্ষোভ-ক্রোধকে এভাবে প্রকাশ করছেন।

সরকারি উপাত্তে দেখা গেছে, লকডাউনে ১৪ দশমিক ট্রিলিয়ন উন বা হাজার ২৯৫ কোটি ডলার নগদ অর্থ সহায়তা দিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া সরকার। এর মধ্যে  ১০ দশমিক শতাংশই ব্যয় হয়েছে হাসপাতাল ফার্মেসিগুলোয়। সুপারমার্কেট রেস্টুরেন্টের পর খাতেই বেশি খরচ করেছে সাধারণ মানুষ। যদিও কী ধরনের হাসপাতালে ব্যয় করা হয়েছে তা উল্লেখ করা হয়নি।

এদিকে গ্যাংনাম উন্নির উপাত্তে দেখা গেছে, গত বছর তাদের ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৬৩ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৬ লাখ। তারা ১০ লাখ কাউন্সেলিং সেশনের অনুরোধ করেছে, যা পূর্ববর্তী বছরের প্রায় দ্বিগুণ। মহামারীর কারণে বিদেশী গ্রাহকদের কোনো সেবা দেয়া যায়নি। ফলে স্থানীয় আঞ্চলিক গ্রাহকদের ওপরই তারা নির্ভর করেছেন। রয়টার্স অবলম্বনে

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন