রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে কাদের

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কোনো সহযোগিতা করেছে কি?

নিজস্ব প্রতিবেদক

মিয়ানামারের সেনাবাহিনীর অত্যাচারে বাংলাদেশে আসা বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ায় আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সম্প্রদায়ের প্রশংসা লিপ সার্ভিস দেয়া ছাড়া আর কোনো সহযোগিতা বাংলাদেশ পেয়েছে নাকি, সেই বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

মন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গাদের স্থানান্তর নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। আমার মনে হয় এটা উচিত নয়। আমাদের ওপর কত কাল আর বোঝা আপনারা চাপিয়ে রাখবেন, সমস্যার জন্য দায় কি শুধু বাংলাদেশের? আপনাদের কারো কি কিছু করণীয় ছিল না? আপনারা কি কেউ পেরেছেন মিয়ানমারকে উদ্বুদ্ধ করতে? একমাত্র হেগে একটা বিচার হচ্ছে? গাম্বিয়ার একটা অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে, এছাড়া আন্তর্জাতিক সম্প্র্রদায়ের পক্ষ থেকে প্রশংসা করা আর লিপ সার্ভিস দেয়া ছাড়া তেমন কোনো সহযোগিতা কি আমরা পেয়েছি? আমাদের ওপর যে অভ্যন্তরীণ চাপ পড়েছে, এদের স্থানান্তর না করলে আমাদের যেখানে পাঁচ লাখ লোকের বাস, সেখানে এত লোককে কীভাবে জায়গা দেব?

গতকাল ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে ত্রাণ সমাজকল্যাণ উপকমিটি আয়োজিত সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের মাঝে মাস্ক বিতরণ অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়ে তিনি কথা বলেন।

রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তরের কথা তুলে ধরে কাদের বলেন, আমরা জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্র্রদায়ের কাছে বারবার আহ্বান জানিয়েছে। আজ এখানে আমাদের পরিবেশ, ট্যুরিজম, ইকোনমিসহ সবকিছুই ক্ষতির সম্মুখীন এবং আমরা বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছি। আমরা নিজেরাও করোনা, আম্পান উপর্যুপরি বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। এমন পরিস্থিতির মধ্যেও ভাসানচরে একটি সুন্দর জায়গা করেছি, সেখানে রোহিঙ্গাদের কেউ কেউ ভিজিট করে এসেছে, তারা খুশি হয়েছে। সেখানে জীবন ব্যবস্থা, এমনকি কর্মসংস্থানেরও ব্যবস্থা রয়েছে। আমরা তো মনে করি, আপনারা নিজেরাও (আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়) এদের সম্মানের সঙ্গে বা শান্তিপূর্ণভাবে নিজ দেশে ফেরার ব্যবস্থা করতে পারেননি বা অন্য কোনো দেশেও রোহিঙ্গাদের স্থানান্তর করতে পারেননি।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরো বলেন, দেশের অভ্যন্তরে রোহিঙ্গাদের ভিড় কমাতে সেখানে তাদের জন্য একটা ব্যবস্থা করার উদ্যোগ নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রোহিঙ্গারাই দেখেশুনে উদ্বুদ্ধ হয়ে যাচ্ছেন। সেখানে তাদের ভালোর জন্যই আমরা এটি করেছি। অথচ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কেউ কেউ এখন বিরোধিতা করছেন।

স্থানীয় নির্বাচনে নৌকার বিদ্রোহী বা বিরোধীতাকারীদের আগামীতে দলীয় মনোনয়ন দেয়া হবে না জানিয়ে কাদের বলেন, বিদ্রোহী হয়ে পার পাওয়ার কোনো উপায় নেই। লুকিয়ে-চাপিয়ে কেউ বিদ্রোহী হয়েও যদি নমিনেশন চান, সেটি কিন্তু আমরা অনুসন্ধান করি এবং এটি আমরা নজরদারিতে রেখেছি। আগেভাগেই বলে দিয়েছি, আমাদের সিদ্ধান্ত ধরনের কাউকে মনোনয়ন দেয়া হবে না। এছাড়া আরেকটা বিষয় বলতে চাই, শুধু বিদ্রোহীরা না, বিদ্রোহের পেছনে যারা মদদদাতা, তিনি মন্ত্রী হোন, এমপি হোন, অথবা দলের কোনো বড় নেতা হোন, কারো ব্যাপারে কোনো ছাড় নেই। তাদেরও শাস্তির আওতায় আসতে হবে।

অনুষ্ঠানে ধানমন্ডি প্রান্তে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, ত্রাণ সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, স্বাস্থ্য জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা এবং উপদপ্তর সম্পাদক সায়েম খানসহ আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের নেতারা।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন