সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অনন্য দৃষ্টান্ত পার্বত্য শান্তি চুক্তি —পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং বলেছেন, শান্তি চুক্তির পর অঞ্চলের উন্নয়ন কার্যক্রমে নতুন গতির সঞ্চার হয়েছে। অঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে নতুন রাস্তাঘাট নির্মাণ করা হয়েছে। পার্বত্যবাসীর উন্নয়নে গড়ে উঠেছে নতুন নতুন স্বাস্থ্যকেন্দ্র, বিভিন্ন সরকারি-আধা সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, ক্ষুদ্র কুটির শিল্প প্রভৃতি। স্থাপিত হয়েছে রাঙ্গামাটি মেডিকেল কলেজ, রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। ভূমি বিষয়ক বিরোধ নিষ্পত্তির উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। বোর্ডের কার্যক্রম আরো গতিশীল সুসংহত করার লক্ষ্যে বর্তমান সরকার পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড আইন-২০১৪ প্রণয়ন করেছে। এতে একদিকে মানুষের কর্মসংস্থান বাড়ছে, অন্যদিকে জীবনযাত্রার মান উন্নত হচ্ছে। শান্তি চুক্তির সফল বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে পার্বত্য এলাকায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি আর পারস্পরিক সহনশীলতার এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপিত হয়েছে। গতকাল পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তির ২৩তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, অঞ্চলভিত্তিক পরিকল্পনার মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রামের সামগ্রিক উন্নয়নের জন্য ১৯৭৩ সালেই বঙ্গবন্ধু একটি আলাদা বোর্ড গঠনের নির্দেশ দিয়েছিলেন। ১৯৭৫ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি রাঙ্গামাটির বিশাল জনসভায় বঙ্গবন্ধু জাতীয় সংখ্যালঘুদের অধিকার অবশ্যই রক্ষা করা হবে মর্মে প্রতিশ্রুতি দিয়ে অঞ্চলের উন্নয়নে নানা কর্মসূচির ঘোষণা দেন। বঙ্গবন্ধুই প্রথমবারের মতো পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি ছাত্রছাত্রীদের মেডিকেল প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় কোটায় ভর্তির সুযোগ করে দেন।

তিনি আরো বলেন, পার্বত্য এলাকার যেসব এলাকায় বিদ্যুৎ পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে না, সেসব এলাকায় ১০ হাজার ৮৯০টি পরিবারের মধ্যে সোলার প্যানেল স্থাপনের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়েছে। আরো ৪২ হাজার ৫০০টি পরিবারের মাঝে হোম সোলার সিস্টেমের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। চার হাজার পাড়াকেন্দ্রের মাধ্যমে অঞ্চলের নারী শিশুদের মৌলিক স্বাস্থ্যসেবা শিশুদের প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা প্রদানের জন্য টেকসই সামাজিক সেবা প্রদান করা হচ্ছে। রূপকল্প-২০২১ বাস্তবায়নে পার্বত্য চট্টগ্রামে অগ্রাধিকারভিত্তিক উন্নয়ন একান্ত অপরিহার্য। সে লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় অনগ্রসর প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের উন্নয়নে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। সময় তিনি শান্তিপূর্ণ সমৃদ্ধ পার্বত্য চট্টগ্রাম বিনির্মাণে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রামের সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য বাসন্তী চাকমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান নব বিক্রম কিশোর ত্রিপুরা, কৃষি সচিব মো. মেসবাহুল ইসলাম, তথ্য কমিশনের সচিব সুদত্ত চাকমা প্রমুখ।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন