ফাইজারের টিকার অনুমোদন দিল যুক্তরাজ্য

আগামী সপ্তাহ থেকে প্রয়োগ

বণিক বার্তা ডেস্ক

নভেল করোনাভাইরাস মহামারী প্রতিরোধে বিশ্বজুড়ে নজর ছিল ভ্যাকসিন আবিষ্কারের দিকে। সে অপেক্ষার পালা শেষ করে যুক্তরাষ্ট্র, চীন, রাশিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে একের পর এক ভ্যাকসিন আবিষ্কারের খবর আসতে থাকে। এতে মানুষের মধ্যে কিছুটা আশার সঞ্চারও হয়েছিল। তবে আশাজাগানিয়া এসব আবিষ্কার নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর পর্যবেক্ষণ ও অনুমোদনের পূর্ববর্তী ধাপগুলো পেরোনোর একেবারে শেষ পর্যায়ে রয়েছে। এরই মধ্যে বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে ফাইজার ও বায়োএনটেক উদ্ভাবিত করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন অনুমোদন দিয়েছে যুক্তরাজ্য। দেশটিতে আগামী সপ্তাহ থেকে এই টিকার প্রথম ডোজের প্রয়োগ শুরু হবে বলে জানিয়েছে সরকার। খবর সিএনএন।

বিশ্বজুড়ে মরণঘাতী ভাইরাসটি মোকাবেলার জন্য প্রভাবশালী দেশগুলোর আবিষ্কার হওয়া ভ্যাকসিনের অনুমোদন কার্যক্রম দ্রুত শেষ করার জন্য শুরু থেকেই জোরেশোরে কাজ করছে নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো। এরই অংশ হিসেবে যুক্তরাজ্যের নিয়ন্ত্রক সংস্থা জরুরি ভিত্তিতে মার্কিন জায়ান্ট প্রতিষ্ঠান ফাইজার ও তাদের অংশীদার বায়োএনটেক আবিষ্কৃত ভাইরাসের অনুমোদন দিল। এর মাধ্যমে করোনাভাইরাস প্রতিরোধের পথ উন্মোচন হলো বলে মনে করেন যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্য সচিব ম্যাট হ্যানকক।

এ অনুমোদনের ফলে ভ্যাকসিন প্রাপ্তির দৌড়ে প্রথম দেশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়নকে পেছনে ফেলতে সক্ষম হয়েছে যুক্তরাজ্য। ফাইজারের প্রধান নির্বাহী আলবার্ট বাওরলা জরুরি অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে যুক্তরাজ্য সরকারের এমন দ্রুত অনুমোদনকে মরণঘাতী ভাইরাসটি প্রতিরোধে স্মরণীয় ঘটনা বলে উল্লেখ করেছেন।

যুক্তরাজ্য সরকার এরই মধ্যে ভ্যাকসিনের প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে দুই কোটি নাগরিকের জন্য চার কোটি ডোজের ক্রয়াদেশ দিয়ে রেখেছে। এ বিষয়ে হ্যানকক বিবিসিকে বলেন, আগামী সপ্তাহে দেশটি আট লাখ ডোজ ভ্যাকসিন পাবে। আর এ ক্রয়াদেশের বিপরীতে আগামী বছরের শুরুতে বাকিগুলো উৎপাদনের পরিপ্রেক্ষিতে সরবরাহ করা হবে। 

ভ্যাকসিন প্রয়োগের ক্ষেত্রে কাদের অগ্রাধিকার দেয়া হবে, সে বিষয়টিও উল্লেখ করেছেন দেশটির স্বাস্থ্য সচিব। তিনি জানান, করোনা প্রতিরোধের অংশ হিসেবে ভ্যাকসিনের প্রয়োগের ক্ষেত্রে প্রবীণ নিবাসে থাকা ব্যক্তি, স্বাস্থ্যকর্মী ও তুলনামূলকভাবে খারাপ অবস্থায় থাকা ব্যক্তিরা অগ্রাধিকার পাবে।

ফাইজারের এ ভ্যাকসিনের অনুমোদনের বিষয়ে এক বিবৃতিতে যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, কয়েক মাস ধরে ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল ও মেডিসিনস অ্যান্ড হেলথকেয়ার প্রোডাক্টস রেগুলেটরি এজেন্সির (এমএইচআরএ) বিশেষজ্ঞদের কঠোর পর্যবেক্ষণের পর এটি অনুমোদনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সব ক্ষেত্রেই ভ্যাকসিনের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সর্বাত্মকভাবে নিয়ন্ত্রণমূলক নীতি অনুসরণ করা হয়েছে।

এর আগে গত মাসে ফাইজার দাবি করে, তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালে তাদের উদ্ভাবিত ভ্যাকসিন করোনাভাইরাস প্রতিরোধে ৯৫ শতাংশ  কার্যকর। অল্পবয়সী থেকে প্রবীণ—সব বয়সীদের ক্ষেত্রে এটি কার্যকর এবং এটির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে উদ্বেগের কোনো কারণ নেই। 

ফাইজারের এ ভ্যাকসিনের অনুমোদনকে যুগান্তকারী ঘটনা উল্লেখ করে টুইট করেছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। সেখানে তিনি বলেন, ভ্যাকসিনের মাধ্যমে জীবন রক্ষার পাশাপাশি সর্বোপরি দেশের অর্থনীতি আবার চাঙ্গা হওয়া শুরু করবে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন