নিউইয়র্ক টাইমসকে সাক্ষাত্কার

‘ফেজ-ওয়ান’ বাণিজ্য চুক্তি পাল্টাবেন না বাইডেন

বণিক বার্তা ডেস্ক

গত মাসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট জো বাইডেনের জয় নিশ্চিত হওয়ার পর অনেকেই ধারণা করেছিলেন ক্ষমতায় আসার পর তিনি হয়তো চীন ইস্যুতে তার পূর্বসূরি রিপাবলিকান ডোনাল্ড ট্রাম্পের গৃহীত নীতিগত পদক্ষেপ থেকে পিছু হটবেন। তবে নিউইয়র্ক টাইমসকে দেয়া এক সাক্ষাত্কারে বাইডেন বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র চীনের মধ্যে বর্তমানে যে ফেজ-ওয়ান বাণিজ্য চুক্তি বলবৎ রয়েছে, তিনি তা বাতিল করবেন না। অবশ্য চীন বিষয়ে তার প্রশাসনের ভবিষ্যৎ নীতি কী হওয়া উচিত, সে বিষয়ে মিত্র দেশগুলোর সঙ্গে পুঙ্খানুপুঙ্খ আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন বাইডেন। খবর ব্লুমবার্গ।

চলতি বছরের শুরুতে চীনের সঙ্গে ফেজ-ওয়ান বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর করে যুক্তরাষ্ট্র। নিউইয়র্ক টাইমসের কলামিস্ট থমাস ফ্রায়েডম্যানের সঙ্গে আলাপচারিতায় বাইডেন জানিয়েছেন, বিদায়ী মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলে চুক্তি হলেও তিনি তাত্ক্ষণিকভাবে এটি বাতিলের পরিকল্পনা করছেন না।

তিনি বলেন, আমি তাত্ক্ষণিক কোনো পদক্ষেপ নেব না। যে শুল্ক চালু রয়েছে, তা থেকে যাবে। বিদ্বেষমূলক মনোভাব থেকে আমি কোনো সিদ্ধান্ত নেব না। বাইডেন জানান, হোয়াইট হাউজে যাওয়ার পর তিনি প্রথমে যা করবেন তা হলো, এই বাণিজ্য চুক্তির চুলচেরা বিশ্লেষণ। এছাড়া বিষয়টি নিয়ে এশিয়া ইউরোপে যুক্তরাষ্ট্রের বন্ধুপ্রতিম দেশগুলোর সঙ্গেও আলোচনা করবেন তিনি, যেন তাদের মধ্যকার মৈত্রী আরো সুসংহত হয় এবং সব দেশ মিলে অভিন্ন কৌশলগত সিদ্ধান্ত নেয়া যায়। তিনি বলেন, আমি মনে করি, চীনসংক্রান্ত কৌশলের বিষয়টি নিয়ে আমাদের মিত্র দেশগুলোর সবারই চিন্তাভাবনা একই। প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর আমার প্রধান অগ্রাধিকারমূলক বিষয় হবে এসব দেশকে আবার এক করা।

গত জানুয়ারিতে স্বাক্ষর হওয়া চুক্তি অনুযায়ী, ২০২১ সালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র থেকে পণ্য আমদানি ২০ হাজার কোটি ডলার বাড়ানোর বিষয়ে সম্মত হয় চীন। তবে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ খুব একটা সহজ হবে না দেশটির জন্য। কারণ অক্টোবর শেষের উপাত্তে দেখা গেছে, চলতি বছর যে পরিমাণ পণ্য আমদানির প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, তার মাত্র ৪৪ শতাংশই সম্পন্ন করতে পেরেছে তারা। এই ফেজ-ওয়ান বাণিজ্য চুক্তির অধীনে যুক্তরাষ্ট্র চীন শত শত কোটি ডলারের পণ্যের ওপর থেকে শুল্ক প্রত্যাহার করেছে।

বণিজ্য চুক্তি নিয়ে পটপরিবর্তনমূলক কোনো সিদ্ধান্ত না নিলেও ক্ষমতা গ্রহণের পর চীনের অনৈতিক চর্চা সামাল দিতে পারবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন বাইডেন। তার মতে, এসব অনৈতিক চর্চার মধ্যে রয়েছে মেধাস্বত্ব চুরি, অন্যায্য মূল্য নির্ধারণের মাধ্যমে প্রডাক্ট ডাম্পিং, নিজেদের প্রতিষ্ঠানগুলোকে অনৈতিক ভর্তুকি সুবিধা দেয়া, মার্কিন কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে প্রযুক্তি নিয়ে তাদের চীনা প্রতিদ্বন্দ্বী কোম্পানিগুলোর কাছে হস্তান্তর ইত্যাদি।

নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের গবেষণা উন্নয়ন, অবকাঠামো এবং শিক্ষা খাতে সরকারি যেসব বিনিয়োগ করা হবে, সেখানে ডেমোক্রেটিক রিপাবলিকানউভয় দলেরই মতামত পরামর্শ গ্রহণের চর্চা গড়ে তুলবেন তিনি, যেন ঐকমত্যের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত গ্রহণের মাধ্যমে চীনের সঙ্গে আরো ভালোভাবে প্রতিযোগিতা করা যায়। তিনি বলেন, আমি একটি বিষয় নিশ্চিত করতে চাই যে যুক্তরাষ্ট্রকে এগিয়ে রাখার জন্য আমরা সম্ভাব্য সব ধরনের বিনিয়োগ করার মাধ্যমে যুদ্ধজয়ের চেষ্টা চালাব।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন