বাইডেনকে ৩২ সংগঠনের চিঠি

প্রশাসনে টেক জায়ান্টদের প্রভাব কমান

বণিক বার্তা ডেস্ক

হোয়াইট হাউজে স্থানান্তরের তদারকি করতে নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ট্রানজিশন দল প্রশাসনে টেক সমালোচকদের চেয়ে প্রযুক্তি সংস্থাগুলোর নির্বাহীদের নাম বেশি রয়েছে। তারা শেষ পর্যন্ত প্রশাসনের চিন্তাকে প্রভাবিত করতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে। এজন্য অ্যান্টিট্রাস্ট, ভোক্তা অ্যাডভোকেসি, শ্রম প্রগতিশীল বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কাজ করা ৩২টি সংগঠন বাইডেনের ট্রানজিশন দল প্রশাসনে টেক জায়ান্টগুলোর প্রভাব কমানোর আহ্বান জানিয়েছে। প্রেসিডেন্টের কাছে পাঠানো একটি চিঠিতে তারা আহ্বান জানায়। খবর রয়টার্স বিজনেস ইনসাইডার।

ওই চিঠিতে বাইডেনের প্রশাসনিক কর্মকর্তা, লবিস্ট এবং অ্যালফাবেট, অ্যাপল মাইক্রোসফটের মতো সংস্থাগুলোর পক্ষে কিংবা তাদের সঙ্গে কাজ করা পরামর্শদাতাদের বাদ দেয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। সংগঠনগুলোর যুক্তি, সংস্থাগুলোর ব্যবসায়িক অনুশীলন গ্রাহক মার্কিন অর্থনীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।

গ্রাহক অধিকার, অ্যান্টিট্রাস্ট সংস্কার, শ্রম প্রগতিশীল বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কাজ করা সংগঠনগুলো চিঠিতে স্বাক্ষর করেছিল। স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে রয়েছে পাবলিক সিটিজেন, আমেরিকান ইকোনমিক লিবার্টিজ প্রজেক্ট, ওপেন মার্কেটস ইনস্টিটিউট, প্রগ্রেসিভ ডেমোক্র্যাটস অব আমেরিকা, দ্য রিভলভিং ডোর প্রজেক্ট অ্যাথেনা।

চিঠিতে বলা হয়েছে, আমরা বিশ্বাস করি, আপনার প্রশাসনকে অবশ্যই একচেটিয়া টেক জায়ান্ট সংস্থাগুলোর উত্থাপিত হুমকির বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে। আপনি যদি সরকার গঠনে সংস্থাগুলোর ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে আনেন, তাহলে আমরা সেই সংস্থাগুলোকে জবাবদিহিতার আওতায় আনতে পারব। আমরা বিশ্বাস করি সিলিকন ভ্যালি আপনার প্রশাসনের মধ্যে একটি ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্ক নির্বাচনের আগে দেয়া আপনার প্রতিশ্রুতিকে পূরণ করবে।

বিষয়ে সংস্থাগুলো তাত্ক্ষণিকভাবে মন্তব্যের অনুরোধে সাড়া দেয়নি। মাইক্রোসফট ব্যতীত সব সংস্থা তাদের ব্যবসায়িক অনুশীলনের জন্য ফেডারেল রাষ্ট্রীয় তদন্তের মুখোমুখি হচ্ছে।

এর আগে ১০ নভেম্বর বাইডেন তার ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস এজেন্সি রিভিউ টিমস-এর জন্য নামের একটি তালিকা প্রকাশ করেছিলেন। দলগুলোর সদস্যরা যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিটি সরকারি সংস্থায় যাবে এবং প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন থেকে বাইডেন প্রশাসনের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের পরিকল্পনা করবে।

প্রটোকল আর্স টেকনিকার প্রতিবেদন অনুযায়ী, সেই তালিকায় অ্যামাজন, উবার, লিংকডইন, ল্যাফট, এয়ারবিএনবি, ড্রপবক্স স্ট্রাইপসহ প্রযুক্তি দুনিয়ার বড় সংস্থাগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তবে তালিকায় সরাসরি ফেসবুক, টুইটার বা অ্যাপলের কেউ ছিল না। তালিকায় গুগলের কোনো কর্মীর নাম না থাকলেও তাদের প্যারেন্ট সংস্থা অ্যালফাবেটের মালিকানাধীন একটি সংস্থার কর্মীর নাম ছিল। তালিকায় বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন, চ্যান-জাকারবার্গ ইনিশিয়েটিভ শ্মিট ফিউচারসহ সিলিকন ভ্যালির সঙ্গে যুক্ত বড় জনহিতকর সংস্থার কর্মকর্তারাও রয়েছেন। তালিকায় নাম থাকা ব্যক্তিরা বাইডেন প্রশাসনে স্থায়ী চাকরি পাচ্ছেন এমন নয়। তবে তারা অন্তত কিছু সময় প্রশাসনের সঙ্গে কাজ করবেন।

বাইডেন প্রশাসন কীভাবে বড় টেক সংস্থাগুলোকে পরিচালনা করবেন সে সম্পর্কে নামগুলোর মাধ্যমে খুব বেশি ইঙ্গিত পাওয়া যায় না। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, বাইডেন-হ্যারিস প্রশাসনে জনগণের গোপনীয়তা নিয়ন্ত্রণ, ভোক্তা সুরক্ষা বাজারে প্রতিযোগীদের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষার মতো বিষয়গুলোতে বিশেষ জোর দিয়ে প্রযুক্তি খাতে কঠোর ব্যবস্থা নিতে পারে। আবার ট্রানজিশন দলে আরো কিছু বড় সংস্থার অভাব ইঙ্গিত দেয়, বাইডেন চান না যে সংস্থাগুলো তার প্রশাসনের প্রথম দিকের কাজকর্মে খুব বেশি জড়িত হোক।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন