কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় জীববিজ্ঞানের বড় রহস্যের উন্মোচন

বণিক বার্তা ডেস্ক

জীববিজ্ঞানের বড় একটি রহস্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহারের মধ্য দিয়ে সমাধান করা গেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিশেষজ্ঞরা।

প্রোটিন একটি কীভাবে স্বতন্ত্র ত্রিমাত্রিক আকারে ভাঁজ হয়ে থাকে, তা নিয়ে অনুমানের ধাঁধাতেই অর্ধশতক কাটিয়ে দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। লন্ডন ভিত্তিক আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ল্যাব ডিপমাইন্ড সমস্যাটি বৃহৎ অংশে সমাধান করেছেন বলে মন্তব্য করেছেন সায়েন্টিফিক চ্যালেঞ্জের সংগঠকরা। প্রোটিনের আকার সম্পর্কে আরো ভালো বোঝাপড়া রোগের চিকিৎসায় নতুন ওষুধের বিকাশের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। ডিপমাইন্ডের অগ্রগতি কভিড-১৯সহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্তদের চিকিৎসায় গবেষণার গতিকে আরো বাড়িয়ে দেবে।

তারা বলেছে, তাদের প্রোগ্রামটি প্রোটিনের আকারকে ব্যয়বহুল এবং সময়সাপেক্ষ ল্যাব পদ্ধতির তুলনায় আরো যথার্থ স্তরে নির্ধারণ করবে। ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার (ইউসি) . আন্দ্রে ক্রিস্তাফোবিক, যিনি বৈজ্ঞানিক বিচারিক প্যানেলের একজন সদস্যও, তিনি বলেছেন, এটি সত্যিকার অর্থে বেশ উল্লেখযোগ্য অর্জন। তার মতে, প্রোটিনের আকারকে দ্রুত এবং যথার্থভাবে খুঁজে বের করতে পারা জীববিজ্ঞানের ক্ষেত্রে একটি বিপ্লব ঘটানোর সম্ভাবনা তৈরি করেছে।

প্রোটিন সমব জীবন্ত জিনিসের মাঝে উপস্থিত রয়েছে, যেখানে তারা জীবনের জন্য প্রয়োজনীয় রাসায়নিক প্রক্রিয়াতে কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করে থাকে।

অ্যামিনো অ্যাসিডের স্ট্রিংস দিয়ে তৈরি, তারা বিস্তৃত আকারে অসংখ্য উপায়ে ভাঁজ হয়ে থাকে, যেগুলো কীভাবে তারা গুরুত্বপূর্ণ কার্য সম্পাদন করে তার চাবিকাঠি।

অনেক রোগ মূলত জড়িত থাকে প্রোটিনের ভূমিকার সঙ্গে। বৈজ্ঞানিক বিচারিক প্যানেলের একজন সদস্যও . জন মোল্ট বলেন, এমনকি গুরুত্বপূর্ণ অনুগুলোর সামান্যতম পুনঃসজ্জাও আমাদের স্বাস্থ্যের ওপর বিপর্যয়কারী প্রভাব ডেকে আনতে পারে। তাই রোগকে বোঝার এবং নতুন চিকিৎসা খুঁজে বের করার ক্ষেত্রে একটি কার্যকর উপায় হচ্ছে সংযুক্ত প্রোটিন সম্পর্কে গবেষণা।

তিনি আরো বলেন, এখানে হাজার হাজার মানবিক প্রোটিনের অস্তিত্ব রয়েছে এবং কয়েক বিলিয়ন অন্যান্য প্রজাতির মধ্যে, যেখানে ভাইরাস এবং ব্যাকটেরিয়াও রয়েছে। তবে কেবল এর আকার তৈরি করার জন্য ব্যয়বহুল সরঞ্জাম প্রয়োজন এবং এতে লেগে যেতে পারে কয়েক বছর।

প্রতি দুই বছর অন্তর ২০টির বেশি দেশের বেশ কয়েকটি দল চেষ্টা করে অ্যামিনো অ্যাসিডের ক্রম থেকে প্রায় ১০০টি প্রোটিনের আকারের সেট ব্যবহার করে ভবিষ্যদ্বাণী করতে।

বছর প্রোটিন কাঠামোর ভবিষ্যদ্বাণী করা সিএএসপির একদল বিজ্ঞানী পরীক্ষাগারের নিরীক্ষার তুলনায় যথার্থতার সঙ্গে প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ প্রোটিনের আকার নির্ধারণ করে। পরীক্ষকরা বলেন, অন্যান্য প্রোটিনের যথার্থতাও অনেক উচ্চ পর্যায়ে ছিল, যদিও তা একেবারে স্তরে ছিল না। প্রক্রিয়াতে ভাঁজযুক্ত প্রোটিনের কাঠামোটি একটি স্থানিক গ্রাফ হিসেবে উপস্থাপিত হয়। এরপর প্রোগ্রামটি প্রোটিনের পাবলিক ডাটাবেজে রাখা প্রোটিনের থ্রিডি আকারের তথ্যকে ব্যবহার করে শেখে। ল্যাবরেটরি বেঞ্চের যা করতে কয়েক বছর লাগে, এআই প্রোগ্রাম তা কয়েকদিনের মধ্যে করতে সক্ষম হয়।

এখন অন্য বিজ্ঞানীরা ডাটাগুলোকে খতিয়ে দেখবেন এআই পদ্ধতি কতটা সঠিক এবং কতটা বিস্তৃত স্তরে সেটি কাজ করতে পারে তা নির্ধারণের জন্য। পাশাপাশি এখানে কিছু জ্ঞানগত পার্থক্যও রয়েছে, সেগুলোও দূর করতে হবে।

 

বিবিসি অবলম্বনে

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন