নভেল করোনাভাইরাস মহামারীতে মানুষ ঘরবন্দি থাকায় অন্য যে কোনো সময়ের তুলনায় বিশ্বজুড়ে ভিডিও কলের ব্যবহার বেড়েছে বহু গুণ। আর এতে আকাশচুম্বী মুনাফা দেখছে ভিডিও কনফারেন্সিং সংস্থা জুম। মহামারী স্থায়ী হওয়ায় সংস্থাটির বার্ষিক আয় প্রত্যাশার চেয়ে বেশি হবে বলে জানানো হয়েছে। খবর বিবিসি।
ক্যালিফোর্নিয়ার এ সংস্থা জানিয়েছে, চলতি বছর তারা ২৫০ কোটি ডলারেরও বেশি রাজস্ব আয় করতে পারে। এ পরিমাণ তাদের মার্চে দেয়া পূর্বাভাসের দ্বিগুণেরও বেশি।
মহামারীতে লাখ লাখ পরিবার ও বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে সামাজিকীকরণ, পাঠদান, অফিস মিটিং ও সহকর্মীদের সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য জুম অ্যাপ ব্যবহার করেছে। জুমের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী এরিক ইউয়ান বলেন, যে কোনো জায়গা থেকে কাজের জন্য নতুন ব্যবস্থার সঙ্গে খাপ খাওয়ার ব্যবস্থা করে দিয়ে সংস্থাটি অনেক ব্যবসা পরিবর্তন করে দিয়েছে।
অক্টোবরের শেষে জুমের ১০ জনের বেশি কর্মী থাকা প্রায় ৪ লাখ ৩৪ হাজার ব্যবসায়িক গ্রাহক ছিল। এটি আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ৪৮৫ শতাংশ বেশি। সংস্থাটির এ তুমুল চাহিদা আয় ও মুনাফা বাড়িয়ে দিয়েছে।
সংস্থাটি জানিয়েছে, আগস্ট-অক্টোবর সময়কালে ৭৭ কোটি ৭০ লাখ ডলার রাজস্ব আয় হয়েছে। এটি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩৬৭ শতাংশ বেশি। একই সময়ে জুমের মুনাফা হয়েছে ১৯ কোটি ৮৪ লাখ ডলার। এটি গত বছরের একই সময়ে ছিল ২২ লাখ ডলার।
সোমবার সংস্থাটি তৃতীয়বারের মতো পুরো বছরের রাজস্ব আয়ের পূর্বাভাস সংশোধন করেছে। বিনিয়োগকারীরা জানিয়েছে, আগস্টে পুরো বছরের রাজস্ব আয়ের পূর্বাভাস দেয়া হয়েছিল ২৩৭ কোটি ডলার। সোমবার এটি সংশোধন করে ২৫০ কোটি ডলার রাজস্ব আয়ের পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। গত আর্থিক বছরে জুমের রাজস্ব আয় ছিল মাত্র ৬২ কোটি ২৭ লাখ ডলার।
এমন আকাশচুম্বী মুনাফা সত্ত্বেও জুম আর্থিক বছরের শেষ তিন মাসে ৮০ কোটি ৬০ লাখ থেকে ৮১ কোটি ১ লাখ ডলার রাজস্ব আয়ের প্রত্যাশার কথা জানানোর কয়েক ঘণ্টা পরই সংস্থাটির শেয়ার দর পড়ে গিয়েছিল। মহামারীর ভয় কমে গেলে জুমের চাহিদা কমে যেতে পারে আশঙ্কায় বিনিয়োগকারীরা এখন সতর্ক রয়েছেন।
জুমের চিফ ফাইন্যান্সিয়াল অফিসার কেলি স্টেকেলবার্গ বলেন, জুম কর্তৃপক্ষ আশাবাদী। তবে বিনিয়োগকারীদের মনে রাখতে হবে কভিড-১৯ মহামারী এবং এটির সঙ্গে সম্পর্কিত অর্থনৈতিক উদ্বেগের প্রভাব ও মাত্রা অনেকাংশেই অজানা।