নভেম্বরে চীনের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার স্থিতিশীল রূপ পেয়েছে, যা সম্ভব হয়েছে মূলত ক্রিসমাস সামনে রেখে বৈশ্বিকভাবে রফতানি চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে। পাশাপাশি চীনের অর্থনীতির জন্য সুসংবাদ হচ্ছে, ২০১৫ সালের পর শেয়ারবাজার নতুন চূড়া স্পর্শ করেছে। খবর ব্লুমবার্গ।
মূলত অক্টোবর থেকেই প্রবৃদ্ধির গতি স্থিতিশীল হওয়ার পথে ছিল। পরিসংখ্যান বলছে, একমাত্র প্রধান অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে চীন সঠিক পথেই রয়েছে, যা এ বছর বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। মহামারী নিয়ন্ত্রণে আসা এবং ভোক্তাদের খরচ করার পরিমাণ বাড়ার সঙ্গে কর্তৃপক্ষগুলো দীর্ঘমেয়াদি বৃদ্ধির দিকে নিজেদের মনোযোগ নিবদ্ধ করেছে। পাশাপাশি এ বছরের শুরুতে অর্থনীতিতে দেয়া জরুরি প্রণোদনা প্রত্যাহার নিয়েও এখন আলোচনা করছে।
চীনা অর্থনীতিবিদ চাং শু ও ডেভিড কিউইউ বলেন, চীনের পুনরুদ্ধার চতুর্থ ত্রৈমাসিকে বিস্তৃত হয়েছে, যদিও গতি কিছুটা ব্যাহত হয়েছিল। বিনিয়োগ ও রফতানি বেশ শক্তিশালী ছিল। উৎপাদনের ক্ষেত্রে অবশ্য হ্রাস দেখা গেছে এবং খরচও প্রত্যাশার চেয়ে কম হয়েছে।
অন্যদিকে সেন্ট্রাল চীনে কভিড-১৯ প্রাদুর্ভাবের কারণে প্রাথমিকভাবে কিছুটা হ্রাস দেখা দিলেও পরে গিয়ে আবাসন বিনিয়োগ এবং ক্রয় নতুন করে বৃদ্ধি পেয়েছে। নভেম্বরের প্রথম তিন সপ্তাহে বাড়ি বিক্রির মূল্য হ্রাস দেখা গেছে, এর আগে চলতি বছরের অক্টোবর পর্যন্ত ৮ দশমিক ২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছিল।
এই পুনরুদ্ধারের পেছনে একটি ফ্যাক্টর ছিল ধাতব পণ্যের চাহিদা বাড়া। পাশাপাশি অবিচ্ছিন্ন অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং ভ্যাকসিন থেকে আসা সুসংবাদও শেয়ারবাজারকে উৎসাহিত করেছে, যেখানে প্রধান শেয়ার সূচক এ সপ্তাহে পাঁচ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো ৫ হাজার পয়েন্টের বেশিতে গিয়ে থেমেছে।
চীনা রফতানি খাত এ বছর দেশটির অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করেছে। যা বছরের প্রথম পাঁচ মাসে স্বাস্থ্য সরঞ্জামের চাহিদার বিস্ফোরণের কারণে সম্ভব হয়েছে, পাশাপাশি ঘরে বসে কাজ করার জন্য যেসব প্রযুক্তিগত সরঞ্জামের প্রয়োজন হয়েছে, তাও এখানে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছে। দক্ষিণ কোরিয়া, যারা প্রযুক্তি পণ্যে এশিয়া ও বিশ্ববাণিজ্যের প্রথম দিকে অবস্থান করছে, তাদের ব্যবসাও নভেম্বরের প্রথম ২০ দিনে ১১ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। এটি প্রযুক্তিপণ্যের চাহিদা বাড়ার দিকে ইঙ্গিত দিচ্ছে।
পাশাপাশি রফতানি অর্ডারগুলো ছোট ছোট চীনা কোম্পানিগুলোকেও বিশেষভাবে সহযোগিতা করছে। এর বাইরে আশার বিষয় হচ্ছে, বছরের সামনের দিনগুলোয়ও এই উত্থান অব্যাহত থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
চীনের ৫ শতাধিক ক্ষুদ্র ও মাঝারি সংস্থাগুলোর ওপর জরিপ পরিচালনা করা স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ডের অর্থনীতিবিদ শেন ল্যান ও ডিং শুয়ান বলেন, রফতানি অর্ডার বৃদ্ধির জন্য চাহিদা তাত্পর্যপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। আর এটি উৎপাদন ক্রিয়াকলাপকে ত্বরান্বিত করতে সহায়তা করেছে।