সমাজে প্রতিনিয়ত ঘটে যাওয়া নারী সহিংসতা বন্ধে শুধু সরকারের ওপর দায়িত্ব দিয়ে দিলেই হবে না। সবার সহযোগিতা ও অংশগ্রহণ ছাড়া সরকারের একার পক্ষে এ সহিংসতা বন্ধ করা সম্ভব নয়।
গতকাল অ্যাকশনএইড বাংলাদেশ আয়োজিত ‘সহিংসতা মুক্ত ভবিষ্যৎ গড়ার লক্ষ্যে’
শীর্ষক এক ওয়েবিনারে এসব কথা বলেন অতিথিরা। এ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ১৬ দিনব্যাপী নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ ২০২০-এর উদ্বোধন করা হয়।
ওয়েবিনারে অ্যাকশনএইড কর্তৃক বিভিন্ন সময়ের জরিপের তথ্য উপস্থাপন করা হয়। বলা হয়, ২০১৭ সালে পরিচালিত এক জরিপে দেখা যায়, অপরাধসংক্রান্ত কোনো অভিযোগ দায়ের করতে নারীরা অনিরাপদ বোধ করেন। বাংলাদেশের ৬৫ শতাংশ নারী মনে করেন, অপরাধীকে দোষারোপ না করে বরং নারীকেই দোষারোপ করা হয়। ৫৭ শতাংশ নারী মনে করেন, অপরাধকে বিশেষ গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করা হয় না। ২০১৮ সালে অ্যাকশনএইড পরিচালিত আরেকটি জরিপে দেখা যায়, নারীর প্রতি সহিংসতার মাত্রা সবচেয়ে বেশি হয় ঘরে। জরিপে বলা হয়, নারীর প্রতি সহিংসতা বিষয়ক দায়েরকৃত মামলায় প্রতি তিনজন নারীর মধ্যে দুজনই ঘরোয়া সহিংসতার শিকার।
ওয়েবিনারে প্রধান অতিথি ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, অতীতে সিটি করপোরেশনে নারী ও শিশুবিষয়ক কোনো পৃথক কমিটি ছিল না, আমরা নতুন করে এ-বিষয়ক একটি কমিটি গঠন করেছি।
বিশেষ অতিথি মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নারী নির্যাতন প্রতিরোধকল্পে মাল্টিসেক্টোরাল প্রোগ্রামের প্রকল্প পরিচালক ড. মো. আবুল হোসেন বলেন, নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে সমন্বিত চেষ্টা করতে হবে। এজন্য পাঁচটি ফ্যাক্টর খুবই গুরুত্বপূর্ণ—সরকারের সব পর্যায়ের প্রতিনিধিদের সহযোগিতা, জনপ্রতিনিধিদের অংশগ্রহণ ও জনগণের সঙ্গে সম্পৃক্ততা বাড়ানো, প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছড়িয়ে থাকা বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার মাধ্যমে তথ্য ও সহযোগিতা প্রদান, সুশীল সমাজের অন্তর্ভুক্তীকরণ এবং শিক্ষিত জনগোষ্ঠী ও সমাজে প্রভাবশালী ব্যক্তির সক্রিয় ভূমিকা পালন।
বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা নিজেরা করির সমন্বয়ক খুশী কবির বলেন, প্রত্যেক জায়গায় নারীদের নিজের ওপর নিজের সাহস রাখতে হবে। নারীসহ সবাইকে সচেতন করতে হবে যে, নির্যাতনের শিকার হওয়া নারীর নিজের কোনো দোষ নয়, বরং নির্যাতনকারীই এর জন্য দোষী।