কভিড-১৯ যেভাবে প্রভাবিত করেছে গবেষণাকে

বণিক বার্তা ডেস্ক

ইউনিভার্সিটি অব মন্টপেলিয়েরে ডিজিজ ইকোলজির একজন পোস্টডক্টরাল হিসেবে অ্যামানডিনে গ্যাম্বেল ২০১৯ সালের প্রথম দুই মাস একটি গবেষণার জন্য ছিলেন ফকল্যান্ড আইল্যান্ডে। যেখানে গ্যাম্বেল এভিয়ান কলেরা রোগের ওপর কিছু মাঠ পর্যায়ের কাজও সম্পন্ন করেন। তাকে তখন রক্তের নমুনা সংগ্রহের জন্য সামুদ্রিক পাখিদের পেছনে লেগে থাকতে হয়েছিল। এক বছরেরও কম সময়ের ব্যবধানে পরিস্থিতি বদলে গেল।

দ্য নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অব মেডিসিনে ১৭ মার্চ একটি গবেষণার পর্যবেক্ষণ প্রকাশিত হওয়ার পর রিপোর্টাররা গ্যাম্বল এবং তার ল্যাবরেটরির বাকি সদস্যদের পেছনে পড়ে গেল। তিনি বলেন, এটি প্রথম বৈজ্ঞানিক গবেষণাপত্র ছিল, যা দেখায় কভিড-১৯ পৃষ্ঠতলে দীর্ঘ সময় টিকে থাকতে পারে। এটা আরো বলে যে ভাইরাস হয়তো মুক্তভাবে বাতাসে ভেসে থাকতে পারে।

গ্যাম্বেল লস অ্যাঞ্জেলেসের ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ায় বর্তমান পোস্টডক্টরাল চলাকালে গবেষণায় (কভিড-১৯-সংক্রান্ত) অংশ নিয়েছিলেন। ২০১৯ সালের মার্চ মাসে নিজের পোস্টডক্টরাল গবেষণা শুরু করেছিলেন তিনি। কিন্তু কভিড গবেষণা তার জীবন বদলে দিয়েছে। ডিজিজ ইকোলজির একজন লো-প্রোফাইল বিশেষজ্ঞ থেকে তিনি এগিয়ে যান নিউইয়র্ক টাইমাসের শিরোনাম হওয়ার পথে।

গ্যাম্বল ক্রমাগত পাঠ, ভাইরাসের প্রতিলিপিকরণ সম্পর্কিত মৌলিক জ্ঞানসহ আরো নানা উপায়ে আণবিক জীববিজ্ঞানের পর্যালোচনা সম্পন্ন করেন। তিনি মানসিকভাবে বেশ চাপের মুখে পড়ে গিয়েছিলেন বলেও মন্তব্য করেন। পাশাপাশি তাকে সারাক্ষণ ফোন ম্যাসেজিংয়ে থাকতে হচ্ছিল। তার সহকর্মীদের উত্তর দিতে হচ্ছিল। তার কাজ ছিল ক্ষয়ের হার গণনা করে পৃষ্ঠের ওপর ভাইরাসের কার্যক্ষমতা পরিমাপের জন্য মূল পরিসংখ্যান ফরম্যাট বিশ্লেষণ করা। গ্যাম্বেল বলেন, আমরা সারাক্ষণ কাজ করতাম। সহকর্মীরা ডাটা পাঠাত সময় যেমনই হোক। আমরা সেগুলো নিয়ে কাজ করতাম এবং পরিসংখ্যানগত ফলাফল নিয়ে কাজ করতাম। উদ্যোগের সফলতার জন্য গ্যাম্বেল কৃতিত্ব দিয়েছে তাদের দলকে। তিনি তার দল নিজেদের অন্য গবেষণা থেকে আলাদা করে নিয়ে এপিডেমিওলজির বদলে ভাইরাসের পরিবেশগত কার্যকারিতার ওপর মনোযোগ দেন।

তার দল ভাইরাসের স্থায়িত্ব নিয়ে গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছে, কেবল পৃষ্ঠেই নয় বরং বাতাসেও। মাসেই আরো অনেক গবেষণাপত্র সামনে আসার পথে এবং গ্যাম্বেল আশা করছেন কভিড-১৯ তাকে আরো দুই বছরের জন্য হয়তো ব্যস্ত রাখবে। তিনি আশা করছেন এরপর হয়তো নিজের মূল কাজে ফিরে যেতে পারবেন। কিন্তু সেটা তখনই সম্ভব হবে যখন তিনি কভিড-১৯-এর কাজগুলো সম্পন্ন করতে পারবেন। গ্যাম্বেল বলেন, যদি সবাই আগামীকালের মধ্যে ভ্যাকসিন পেয়ে যায় তার পরও আমি চাইব এয়ারসোল স্ট্যাবিলিটি নিয়ে নিজের প্রজেক্ট শেষ করতে। ফলে যদি পরবর্তী মহামারী আমাদের সামনে আসে, তখন এখান থেকে পাওয়া জ্ঞান আমাদের সাহায্য করবে।

নেচার জার্নাল

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন