কভিড-১৯ মহামারীর নতুন স্বাভাবিকতায় অনলাইন শিক্ষা ও রিমোট ওয়ার্ক সংস্কৃতির জন্য স্মার্টফোনের চাহিদা বেড়েছে। ক্রমবর্ধমান গ্রাহক চাহিদার কথা মাথায় রেখে একযোগে দেশে নতুন তিনটি স্মার্টফোন উন্মোচন করেছে পোকো। ডিভাইসগুলো হলো পোকো এক্স৩ এনএফসি, পোকো এম২ এবং পোকো সি৩। ২০১৮ সালে পোকো এফ১ আনার পর দ্বিতীয়বারের মতো শাওমির সাব-ব্র্যান্ড পোকো দেশের বাজারে নতুন স্মার্টফোন আনল। টানা দুই বছর বিরতির পর পোকো ব্র্যান্ডের নতুন তিন স্মার্টফোন উন্মোচন ও প্রযুক্তি প্রেক্ষাপট নিয়ে বণিক বার্তার সঙ্গে কথা বলেছেন শাওমি বাংলাদেশের কান্ট্রি জেনারেল ম্যানেজার জিয়াউদ্দিন চৌধুরী। সাক্ষাত্কার নিয়েছেন বকুল রায়—
পোকো ব্র্যান্ডের তিন স্মার্টফোন উন্মোচন বিষয়ে বলুন।
শাওমির সাব-ব্র্যান্ড হিসেবে পোকো বিশ্বজুড়ে ফ্যান ও ব্যবহারকারীদের মধ্যে ইতিবাচক সাড়া ফেলেছে। বাংলাদেশের গ্রাহকরাও পোকো এফ১ স্মার্টফোনটিকে ইতিবাচক হিসেবে গ্রহণ করেছে। দেশে পোকো ব্র্যান্ডের সাফল্য ধরে রাখতে নতুন তিনটি স্মার্টফোন উন্মোচন করা হয়েছে। ডিভাইসগুলোতে গ্রাহকদের পছন্দের সব ফিচার ও স্পেসিফিকেশন রাখা হয়েছে। সাধ্যের মধ্যে সাশ্রয়ী বাজেটে ডিভাইসগুলো যাতে সব ক্যাটারির ক্রেতা কিনতে পারেন, সেজন্য প্রত্যেকটি ডিভাইসের একাধিক সংস্করণ ছাড়া হয়েছে।
কোন শ্রেণীর গ্রাহককে টার্গেট করে ডিভাইস তৈরি করছে পোকো?
দেখুন, আমাদের একটা বড় লক্ষ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে মানুষে-মানুষে মেলবন্ধন সৃষ্টি করা, যা আমরা এখন পর্যন্ত সাফল্যের সঙ্গে করছিও। এমন সাফল্যের অন্যতম কারণ আমরা প্রতিটি নতুন পণ্য বাজারে আনার ক্ষেত্রে গ্রাহকদের পছন্দ, ইচ্ছা ও আকাঙ্ক্ষাকে সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দিয়ে আসছি। গ্রাহক চাহিদা বিবেচনায় নিয়ে শাওমি পোকো ব্র্যান্ডের অধীনে ভিন্ন সেগমেন্টের তিনটি হ্যান্ডসেট এনেছে। পোকো এক্স৩ এনএফসি স্মার্টফোন মিডপ্রিমিয়াম সেগমেন্টের ডিভাইস। অন্যদিকে পোকো এম২ শক্তিশালী মিডরেঞ্জের এবং বাজেট ফোন হিসেবে আনা হয়েছে পোকো সি৩ স্মার্টফোন। আগামীতেও আমরা বাংলাদেশের ফ্যানদের কথা মাথায় রেখে সাশ্রয়ী মূল্যে আরো একাধিক ফোন বাজারে আনতে কাজ করছি। আমরা আশা করছি পোকোর ব্র্যান্ডের নতুন ডিভাইসগুলো গ্রাহক প্রত্যাশা পূরণে সক্ষম হবে।
দেশের বাজারে পোকোর প্রতিদ্বন্দ্বী ব্র্যান্ড হিসেবে কাকে দেখছেন?
পোকো এমন এক ব্র্যান্ড, যা গ্রাহকের প্রয়োজনীয় সব কথা মাথায় রেখে পণ্য উন্নয়ন করে। অবশ্যই বাজারে প্রতিযোগিতা রয়েছে। এটি এমন একটি বিষয়, যা আমাদের সময় ও ট্রেন্ডের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে আরো দৃঢ় সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা করে। শাওমি ও পোকো আদর্শগতভাবেই অন্য ব্র্যান্ডগুলো থেকে আলাদা। কারণ আমরা দারুণ ডিজাইন ও অসাধারণ পারফরম্যান্সে বিশ্বাস করি। সেই সঙ্গে আমরা বাজারের সব পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও গ্রাহকের চাহিদা বুঝে পণ্য আনার চেষ্টা করি।
বাংলাদেশ ছাড়া বিশ্বের কোন বাজারকে বেশি প্রাধান্য দিচ্ছে পোকো?
পোকো একটি কনজিউমার টেকনোলজি ব্র্যান্ড, যা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কার্যক্রম পরিচালনা ও পণ্য উন্মোচন করছে। ব্র্যান্ড হিসেবে পোকো তার সব পণ্য একটি মূলমন্ত্রকে ভিত্তি করে বাজারে এনেছে। আর সেটা হলো ‘আপনার ঠিক যা যা প্রয়োজন।’
বিশ্বব্যাপী পোকো তার নিজস্ব গ্রাহক ও ফ্যানবেজ তৈরিতে কাজ করে চলেছে।
আগামীতে পোকোর আর কী কী পণ্য আসার সম্ভাবনা আছে?
পোকোতে আমরা সব সময় চেষ্টা করি সবকিছু একটু নতুন আঙ্গিকে আনার। এর প্রধান কারণ হলো আমরা আমাদের গ্রাহকদের ডিভাইসগুলোর ব্যবহার ও অভিজ্ঞতা এবং আমাদের ফ্যান ও কমিউনিটি থেকে প্রচুর ফিডব্যাক নিই। এ ফিডব্যাকের ভিত্তিতে আমরা আমাদের গবেষণা ও পণ্যের মানোন্নয়নের কাজ করি। গ্রাহকদের ফিডব্যাক থেকে আমরা পোকোর পোর্টফোলিও ভবিষ্যতে বাড়ানোর চেষ্টা করব। আমরা যখন কোনো পোর্টফোলিও নিয়ে কাজ করব, তখন অবশ্যই আপনাদের জানাব।
অন্য ব্র্যান্ড থেকে পোকো কেন ব্যতিক্রম?
শাওমির সাব-ব্র্যান্ড হলেও পোকো কিন্তু পৃথক ও স্বতন্ত্র একটি স্মার্টফোন ব্র্যান্ড। পোকো তার নিজস্ব মন্ত্র ‘আপনার যা যা প্রয়োজন, তা ব্যতীত আর কিছুই নয়’
স্লোগানে বিশ্বাসী। পোকো সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে সব সময় সবার অভিমতকে প্রাধান্য দিয়ে আসছে। কারণ পোকোর মাধ্যমে আমরা এমন সব প্রযুক্তি আনতে চাই, যা ফ্যান ও কমিউনিটির কাছে প্রকৃত অর্থে তাত্পর্যপূর্ণ হয়। আমরা বিশ্বাস করি, আমাদের যে মন্ত্র, সেটি গ্রাহকদের কাছে সুন্দর পণ্য পৌঁছে দিতে উৎসাহিত করে। পাশাপাশি আমরা গ্রাহকদের প্রত্যাশা বুঝে গবেষণা ও উন্নয়নে জোর দিয়ে আসছি।