২০১৪ সালের পর সর্বোচ্চে তামার দাম

বণিক বার্তা ডেস্ক

পুরোদমে শীত মৌসুম শুরু না হতেই একদিকে নভেল করোনাভাইরাসের বৈশ্বিক মহামারী দিন দিন চরম ভয়াবহ রূপ নিতে শুরু করেছে। অন্যদিকে করোনার ভ্যাকসিন প্রাপ্তি নিয়ে আশার কথা শোনাচ্ছে বিভিন্ন দেশের ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানগুলো। সর্বশেষ যুক্তরাষ্ট্রে করোনা ভ্যাকসিন নিয়ে সুখবর শুনিয়েছে ফাইজার মডার্না। এর প্রভাব পড়েছে ধাতুর বাজারে। ভ্যাকসিন প্রাপ্তির আশার আলো দাম বাড়িয়ে দিয়েছে তামার। যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে শুক্রবার ব্যবহারিক ধাতুটির দাম বেড়ে ২০১৪ সালের জানুয়ারির পর সর্বোচ্চ অবস্থানে উঠেছে। খবর মেটাল বুলেটিন বিজনেস রেকর্ডার।

যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে (কোমেক্স) শুক্রবার দিন শেষে ভবিষ্যতে সরবরাহ চুক্তিতে প্রতি টন তামা বিক্রি হয়েছে হাজার ২৭৬ ডলারে, যা আগের দিনের তুলনায় দশমিক শতাংশ বেশি। ২০১৪ সালের জানুয়ারির পর যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে এটাই ব্যবহারিক ধাতুটির সর্বোচ্চ দাম।

তামার মূল্যবৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে লন্ডন মেটাল এক্সচেঞ্জেও (এলএমই) এখানকার প্রাইস ইনডেক্স অনুযায়ী, শুক্রবার ব্যবহারিক ধাতুটির দাম টনপ্রতি হাজার ২০০ ডলারের মাইলফলক ছাড়িয়ে গেছে। দিন শেষে ভবিষ্যতে সরবরাহ চুক্তিতে প্রতি টন তামা বিক্রি হয়েছে হাজার ১৭৮ ডলার ৫০ সেন্টে, যা আগের দিনের তুলনায় ১৫০ ডলার ৫০ সেন্ট বেশি। এর আগের কার্যদিবসে ভবিষ্যতে সরবরাহ চুক্তিতে প্রতি টন তামা হাজার ২৮ ডলারে বিক্রি হয়েছিল।

এলএমইতে দিনের মধ্যভাগে ভবিষ্যতে সরবরাহ চুক্তিতে প্রতি টন তামার দাম হাজার ২০৭ ডলার ৫০ সেন্টে উঠেছিল। ২০১৮ সালের জুনের পর এটাই এলএমইতে তামার সর্বোচ্চ দাম।

গত ১৬ অক্টোবর এলএমইতে ভবিষ্যতে সরবরাহ চুক্তিতে প্রতি টন তামা হাজার ৭২৮ ডলারে বিক্রি হয়েছিল। এর পর থেকে ব্যবহারিক ধাতুটির দামে ধারাবাহিক উত্থান-পতন দেখা গেছে। তবে তামার টন হাজার ৬৯২ থেকে হাজার ৯৫৩ ডলারের মধ্যে ওঠা-নামা করেছে।

চলতি মাসের প্রথম কার্যদিবসে এলএমইতে ভবিষ্যতে সরবরাহ চুক্তিতে প্রতি টন তামা হাজার ৭১২ ডলারে বিক্রি হয়েছে। মূল্যবৃদ্ধির ধারাবাহিকতায় নভেম্বর প্রথমবারের মতো ব্যবহারিক ধাতুটির দাম হাজার ডলার ছাড়িয়ে যায়। ওইদিন ভবিষ্যতে সরবরাহ চুক্তিতে প্রতি টন তামা বিক্রি হয় হাজার ৩৪ ডলারে। তবে এরপর ফের ব্যবহারিক ধাতুটির টন হাজার ডলারের নিচে নেমে আসে।

১০ নভেম্বর ভবিষ্যতে সরবরাহ চুক্তিতে প্রতি টন তামা হাজার ৮৬৫ ডলার ৫০ সেন্টে বিক্রি হয়। পরদিন ব্যবহারিক ধাতুটির দাম ওঠে টনপ্রতি হাজার ৯১২ ডলার ৫০ সেন্টে। ১২ নভেম্বর এলএমইতে ভবিষ্যতে সরবরাহ চুক্তিতে প্রতি টন তামা হাজার ৯০৪ ডলারে বিক্রি হয়।

চারদিনের ব্যবধানে ফের ব্যবহারিক ধাতুটির দাম টনপ্রতি হাজার ডলার ছাড়িয়ে যায়। ১৬ নভেম্বর ভবিষ্যতে সরবরাহ চুক্তিতে প্রতি টন তামা বিক্রি হয় হাজার ১১৩ ডলারে। তবে এরপর ব্যবহারিক ধাতুটির দাম কিছুটা কমে এসেছিল। ২০ নভেম্বর বড় উত্থান দেখা গেছে তামার দামে।

বর্তমানে করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কা সামলাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও ইউরোপ এশিয়ার দেশগুলো। শীত মৌসুমের প্রাক্কালে প্রতিদিনই রেকর্ড পরিমাণ রোগী শনাক্ত হচ্ছে। বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যাও। পরিস্থিতিতে মৃতের সংখ্যায় লাগাম টানতে জরুরি ভিত্তিতে ভ্যাকসিন ব্যবহারের অনুমতি চেয়েছে ফাইজার বায়ো এন টেক। চীনা ভ্যাকসিন মানব ট্রায়ালে সফলতার পথে রয়েছে। রাশিয়াও নিজেদের ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা নিয়ে দাবি জোরদার করেছে। সব মিলিয়ে করোনা ভ্যাকসিন আশার আলো দেখাচ্ছে।

বিশ্লেষকরা ধারণা করছেন, দেশে দেশে ভ্যাকসিন তৈরির প্রকল্পগুলো যে অবস্থায় আছে তাতে আগামী বছরের শীতের আগে করোনার লাগাম টানা সম্ভব হতে পারে। পরিস্থিতি আগামী দিনগুলোয় বিশ্বজুড়ে অর্থনীতির গতি ফেরাতে পারে। ফলে বাড়তে পারে তামার চাহিদা। সম্ভাবনা ব্যবহারিক ধাতুটির মূল্যবৃদ্ধিতে প্রভাবক হিসেবে কাজ করছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন