বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্সের উড্ডয়ন

এখনই অনুমতি দেবে না চীন ইইউর সিদ্ধান্ত চলতি সপ্তাহেই

বণিক বার্তা ডেস্ক

মার্কিন কর্তৃপক্ষ অনুমোদন দিলেও বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স জেট ব্যবহারে এখনো নিরাপত্তা ঝুঁকি দেখছে চীনের এভিয়েশন খাতের নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ। ফলে তারা এখনই জেটগুলোর ব্যবহারে অনুমোদন না দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। খবর এএফপি।

বোয়িংয়ের জন্য সবচেয়ে বড় বাজার এই চীন। বছর দুয়েক আগে ইন্দোনেশিয়া ইথিওপিয়ায় প্রাণঘাতী দুটি দুর্ঘটনার পর চীনই সবার আগে ৭৩৭ ম্যাক্স জেটগুলো নিষিদ্ধ করেছিল। দেশটির নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ সিভিল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অব চায়না (সিএএসি) বলেছে, এখনই তারা ৭৩৭ ম্যাক্সকে তাদের আকাশে ডানা মেলার অনুমতি দেবে না। কবে দেয়া হতে পারে, সে বিষয়ে কোনো সময়সীমাও তারা নির্ধারণ করেনি।

অক্টোবরে সিএএসির পরিচালক ফেং ঝেংলিন বলেন, নিরাপত্তা ঝুঁকি প্রতিরোধে আপসহীন অবস্থান থেকেই জেটগুলোর ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে চীন। এই নিষেধাজ্ঞা প্রলম্বিত হওয়াটা বোয়িংয়ের জন্য বড় একটি ধাক্কা। গত সপ্তাহে কোম্পানিটি জানিয়েছিল, আগামী দুই দশকে চীন তাদের কাছ থেকে লাখ ৪০ হাজার কোটি ডলারের বিনিময়ে হাজার ৬০০-এর বেশি উড়োজাহাজ কিনবে বলে আশা করছে তারা।

এদিকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ চলতি সপ্তাহেই ৭৩৭ ম্যাক্সের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ঘোষণা করতে পারে বলে ওয়াকিবহাল সূত্রগুলো জানিয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, চলতি বছরের শেষে অথবা আগামী বছরের শুরুর দিকেই ইউরোপীয় ইউনিয়ন এভিয়েশন সেফটি এজেন্সির চূড়ান্ত সবুজ সংকেত পেতে পারে বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স জেটগুলো। এমনটি হলে বোয়িং তাদের বহুল বিক্রীত জেটগুলো নিয়ে তৈরি জটিলতা নিরসনে আরো এক ধাপ এগিয়ে যাবে।

৭৩৭ ম্যাক্স জেট নিয়ে গত দুই বছর কম ভোগান্তি পোহাতে হয়নি মার্কিন উড়োজাহাজ নির্মাতাকে। ভয়াবহ দুটি দুর্ঘটনার তদন্ত, আকাশসেবা সংস্থাগুলোর আস্থা হারানো বৈশ্বিক নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হওয়ায় জেটগুলো শেষ পর্যন্ত গ্রাউন্ডেড রাখতে বাধ্য হয় তারা। তবে দীর্ঘ অচলাবস্থার পর সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (এফএএ) নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের মাধ্যমে অবশেষে কিছুটা স্বস্তির বাতাস পেতে শুরু করেছে বোয়িং।

২০১৮ সালে মাত্র পাঁচ মাসের মধ্যে ইন্দোনেশিয়া ইথিওপিয়ায় দুটি ৭৩৭ ম্যাক্স বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনা ঘটে, যাতে ৩৪৬ জনের প্রাণহানি ঘটে। এর জেরে পরের বছর বেশ কয়েক দফা তদন্তের মধ্য দিয়ে যেতে হয় বোয়িংকে। এমনকি ওই দুটি দুর্ঘটনার কারণে বৈশ্বিক এভিয়েশন খাতে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বস্থানীয় ভূমিকাই হুমকির মুখে পড়ে যায়। বোয়িংকেও প্রায় হাজার কোটি ডলারের লোকসান গুনতে হয়।

বছর দুয়েক আগের ওই ঘটনার পর ৭৩৭ ম্যাক্স জেটগুলোকে প্রায় ২০ মাস বসিয়ে রাখতে বাধ্য হয় বোয়িং। বাণিজ্যিক আকাশসেবা খাতের ইতিহাসে আর কোনো মডেলের উড়োজাহাজকে এত দীর্ঘ সময় গ্রাউন্ডেড রাখা হয়নি।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন