২০২০ শুধুই দুঃস্বপ্ন নয়, আছে ভালো খবরও

বণিক বার্তা অনলাইন

ভয়াবহ দুঃস্বপ্নের মতো আমাদের সামনে হাজির হয়েছে ২০২০ সাল। করোনাভাইরাস মহামারী এখন পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে ৫ কোটির বেশি মানুষকে সংক্রমিত এবং ১৩ লাখ ৫০ হাজারের বেশি মানুষের জীবন কেড়ে নিয়েছে। এর বাইরেও ভাইরাসটি সামজিক, সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে বিপর্যয় ঘটিয়ে চলেছে। এমন হাজারও নেতিবাচক খবরের মধ্যে ২০২০ সাল পৃথিবীর জন্য ভালো কিছু বিষয়ও নিয়ে এসেছে। 

সামুদ্রিক প্রাণ সুরক্ষা

একদল বিজ্ঞানী ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন, অতিরিক্ত মাছ ধরা, দূষণ ও জৈবিক আবাস্থল পুনরুদ্ধারের নীতিগুলো দ্রুত প্রয়োগ করা হলে আগামী ৩০ বছরে মানুষের হস্তক্ষেপ থেকে সামুদ্রিক জীবন রক্ষা পাবে। তাদের প্রতিবেদন বলছে, সামুদ্রিক জীবন পুনর্নিমাণ মানবতার জন্য দ্বিগুণ চ্যালেঞ্জ, নৈতিক বাধ্যবাধকতা এবং টেকসই ভবিষ্যত অর্জনের জন্য একটি স্মার্ট অর্থনৈতিক লক্ষ্য তুলে ধরেছে। 

দম ফেলার ফুরসত পেয়েছে পৃথিবী

করোনাভাইরাস মহামারী কোটি কোটি মানুষকে কাজ থেকে সরিয়ে দিয়েছে এবং বাড়ি থেকে কাজ করতে বাধ্য করেছে। এটা উদযাপন করার মতো না হলেও প্রাকৃতিক বিশ্বে এর কিছু ইতিবাচক প্রভাব রয়েছে। রাস্তায় কম গাড়ি মানে বায়ুমণ্ডলে কম কার্বন ও নাইট্রোজেন অক্সাইড। এটা সাময়িক সময়ের জন্য হলেও। প্রাথমিক গবেষণা এটাও দেখায়, আমাদের এই ‘নিউ নরমাল’ জীবনযাপন থেকেও জীববৈচিত্র্য উপকৃত হচ্ছে। 

আবর্জনা এখন হাই-ফ্যাশন

মহামারীতে পোশাক শিল্প ব্যাপকভাবে সঙ্কুচিত হওয়ায় বড় ব্র্যান্ডগুলো নানা উপায়ে কাঁচামাল উত্স খুঁজতে বাধ্য হয়। এর একটি সমাধান হিসেবে হাজির হয় পুরানো পণ্যগুলো নতুন করে ব্যবহার। যুক্তরাষ্ট্রের একটি ফ্যাশন সংস্থা রথি সমুদ্র থেকে সংগ্রহ করা প্লাস্টিক বর্জ্যের তৈরি ব্যাগ নিয়ে এসেছে। সুইডিশ বহুজাতিক খুচরা পোশাক সংস্থা এইচঅ্যান্ডএম ওয়াইন শিল্পের ফেলে দেয়া আঙ্গুরের খোসা, ডালপালা ও বীজগুলোকে কৃত্রিম চামড়ায় রূপান্তরিত করেছে।

পুরনো পোশাকের নতুন বাজারের উত্থান

মার্কিনরা প্রচুর পোশাক কিনে এবং কিছুদিন পর এগুলো আর ব্যবহার করে না। এই ব্যবহৃত পোশাকের জন্য নতুন বাজার তৈরি করতে রিফর্মেশন, টোড অ্যান্ড কো, গ্যাপ, ব্যানানা রিপাবলিক ও অ্যাথলেটের মতো ব্র্যান্ডগুলো তাদের ক্রেতাদের পুরাতন পোশাকগুলো ফেরত দিয়ে অর্থ পাওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে। এগুলো পুনরায় বিক্রি বা পুনর্ব্যবহারযোগ্য করা হবে।

কার্বন নিঃসরণ প্রকল্প

ফ্যাশন শিল্পে আরো স্বচ্ছতা আনতে পারে, এমন লক্ষণ হিসেবে অ্যালবার্ডস তার পণ্যগুলোর কার্বন নিঃসরণ ট্র্যাক করা শুরু করেছিল। তাদের প্রতিটি জুতা গড়ে একটি গাড়ি ১৯ মাইল চালানোর সমপরিমাণ কার্বন নিঃসরণ করে। এরপর অ্যালবার্ডস কার্বন নিঃসরণ কমাতে অ্যাডিডাসের সঙ্গে যুক্ত হয়ে কাজ শুরু করেছে। 

গৃহস্থালী পণ্য প্লাস্টিকমুক্ত করার ঘোষণা 

ব্লুল্যান্ড, ক্লিনকাল্ট ও ফোর্স অব ন্যাচারের মতো উদ্ভাবনী ব্র্যান্ডগুলো দেখিয়েছে, লন্ড্রি ডিটারজেন্ট ও ক্লিনারগুলো প্লাস্টিকের মোড়কে রাখার দরকার নেই। এরই মধ্যে পরিষ্কারক পণ্য সরবরাহ পরিষেবা গ্রোভ কোলাবোরেটিভ ২০২৫ সালের মধ্যে প্লাস্টিকমুক্ত হওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে এবং ইউনিলিভার ২০৩৯ সালের মধ্যে কার্বণ নিঃসরণ শূন্যে নামিয়ে আনার ঘোষণা দিয়েছে। 

পরিবর্তন হয়েছে খাদ্যাভ্যাস

মহামারীতে অনেক মানুষ ঘরবন্দি থাকা অবস্থায় রান্নায় হাত পাকিয়ে নিয়েছেন এবং আরো স্বাস্থ্যকর ও পরিবেশবান্ধব ডায়েটের দিকে মনোযোগী হয়েছেন। যেমন যুক্তরাষ্ট্রে ২০১৪ সালের পর প্রথমবারের মতো মাংস খাওয়া কমেছে এবং সারাদেশের কৃষক তাদের স্থানীয় খাবারের বর্ধিত চাহিদার কথা জানিয়েছেন।

এমবিজি প্ল্যানেট অবলম্বনে

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন