
চট্টগ্রাম জেলার মিরসরাই, সীতাকুণ্ড ও ফেনী জেলার সোনাগাজীতে প্রায় ৩০ হাজার একর আয়তনে গড়ে উঠছে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগর’। এ শিল্পনগর এলাকায় দেশী-বিদেশী উদ্যোক্তাদের জন্য আলাদা অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করছে বাংলাদেশ রফতানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষ (বেপজা)। সরকারের কাছ থেকে ১ হাজার ৩২১ কোটি ৯২ লাখ ৮০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে এ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে বেপজা।
ঋণসংক্রান্ত বিদ্যমান নীতিমালা অনুযায়ী, দুই বছর গ্রেস পিরিয়ডসহ ৬ শতাংশ সুদে ২০ বছরে এসব ঋণ পরিশোধ করতে হবে বেপজাকে। তবে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) মতো সর্বোচ্চ ১ শতাংশ সুদহার এবং দুই বছরের স্থলে ১০ বছর গ্রেস পিরিয়ডসহ ২০ বছরে ঋণ পরিশোধের সময় চেয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে চিঠি দিয়েছে বেপজা।
বেপজার এ দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়ে সুদহার কমানো ও ঋণ পরিশোধের গ্রেস পিরিয়ড সংশোধনের বিষয়ে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলেছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অর্থ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বণিক বার্তাকে বলেন, সরকারি সংস্থা, করপোরেশনের অনুকূলে ঋণ প্রদানসংক্রান্ত নীতিমালা অনুসারে বিশেষ ক্যাটাগরিভুক্ত হওয়ায় বেজাকে ১ শতাংশ সুদহারে ঋণ দেয়া হয়। বেপজাকে একই সুদে ঋণ দেয়াসংক্রান্ত প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের চিঠিটি আমরা হাতে পেয়েছি। এখন বিষয়টি বিচার-বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। যদি সরকার এক্ষেত্রে সম্মতি দেয়, তাহলে এটি অনুমোদনের জন্য অর্থ সচিব ও অর্থমন্ত্রীর জন্য সারসংক্ষেপ তৈরি করা হবে। তারা সম্মতি দিলেই তা বাস্তবায়ন হবে।
এর আগে এ বিষয়ে বেপজা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে যে চিঠি দেয় তাতে বলা হয়, বেপজা বর্তমানে দেশের প্রায় ২০ শতাংশ জাতীয় রফতানিতে অবদান রাখছে। পাশাপাশি পাঁচ লাখেরও বেশি কর্মসংস্থান সৃষ্টিসহ দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে। বেপজার অধীন সাতটি ইপিজেড প্রকল্পে এ পর্যন্ত সরকারের কাছ থেকে ৫৫৩ কোটি ৩৬ লাখ টাকা সুদমুক্ত ঋণ নেয়া হয়েছে। গত ১০ বছরে বিভিন্ন অবকাঠামোগত উন্নয়নকাজে বেপজার নিজস্ব অর্থায়নে প্রায় ১ হাজার ৫৭৩ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। ফলে বর্তমানে বেপজার আর্থিক সক্ষমতা কমেছে। এ অবস্থায় ৬ শতাংশ সুদহারে ঋণ পরিশোধ করতে গেলে বেপজার ওপর বিশাল আর্থিক চাপ পড়বে। এতে বেপজা আর্থিকভাবে দুর্বল হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই বেপজা তথা দেশের বৃহত্তর স্বার্থে প্রস্তাবিত সংশোধিত ডিপিপির ঋণ পরিশোধে শিডিউলে সুদহার যৌক্তিকভাবে কমানো এবং গ্রেস পিরিয়ড যৌক্তিকভাবে বাড়ানো প্রয়োজন।