মহামারীতে জাপানে জনপ্রিয় হচ্ছে রেস্টুরেন্টের ‘টেকআউট’ সার্ভিস

বণিক বার্তা ডেস্ক

খাবার সেবা শিল্প ক্রেতাকে বাসায় নিয়ে খাবার খাওয়ার ব্যাপারে সুবিধা করে দিচ্ছে। জাপানে অভিজাত রেস্টুরেন্টগুলোর টেকআউট সেবা এখন বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে, কেননা একই সঙ্গে খাবার বাসায় বসে খেতে পারছেন, পাশাপাশি এর দামও কম। খবর মাইনিচি।

আসন্ন বড়দিন নতুন বছর সামনে রেখে টেকআউট সেবার চাহিদা বাড়তে পারে বলে রেস্টুরেন্টগুলো এখন থেকেই বাড়তি প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে। ফাস্টফুড চেইনগুলো এরই মধ্যে টেকআউট সেবা চালু করেছে, তারা সামনে সেবা আরো প্রসারিত করার পরিকল্পনা করছে।

টোকিওর মিনাতো ওয়ার্ডের ফরাসি রেস্টুরেন্ট হিরামাত্সু লা রিজার্ভের এক ম্যানেজার ৪৩ বছর বয়সী এক অফিস কর্মীকে টেকআউট মিল হাতে দিয়ে বললেন, এই আপনার বিফ পাই।

বিবাহবার্ষিকী উদযাপনের জন্য ১১ পদের সমন্বয়ে একটি কোর্স মিলের অর্ডার করেছেন তিনি। প্রতিজনের পেছনে খরচ পড়েছে হাজার ইয়েন বা ৫৭ দশমিক ২৮ ডলার করে। তিনি হেসে বললেন, যেহেতু আমাদের সন্তান এখনো অনেক ছোট, কাজেই আমরা সময় বাঁচাতে খাবারটি বাসায়ই খেতে চেয়েছি।

রেস্টুরেন্টের কর্মীরা কাস্টমারদের বাসায় খাবার পৌঁছে দেয়ার পর ক্যাটালগ দেখিয়ে বুঝিয়ে দেন কোনটা কীভাবে গরম করতে হবে। করোনা মহামারীতে বিক্রি পড়ে যাওয়ার কারণে গত মে মাস থেকে টেকআউট সার্ভিস শুরু করে হিরামাত্সু লা রিজার্ভ রেস্টুরেন্ট। অ্যাপেটাইজার, ডেজার্টসহ প্রতিজনের কোর্স মেনু বাবদ খরচ হাজার থেকে হাজার ইয়েন পর্যন্ত হয়ে থাকে। সবচেয়ে কম দামি কোর্স মিলের দাম হাজার ৫০০ ইয়েন, সেই তুলনায় টেকআউট মেনু সস্তাই বলতে হবে।

রেস্টুরেন্টটি প্রতিদিন গড়ে তিন থেকে চারটি টেকআউট অর্ডার পাচ্ছে। যদিও জুলাই আগস্টে সচরাচর যত কাস্টমার খেতে আসতেন, এখন আসেন তার এক-তৃতীয়াংশ। রেস্টুরেন্টের মোট বিক্রির ২০ শতাংশ পূরণ হচ্ছে টেকআউট ডেলিভারি দিয়ে।

হোটেলের খাবার বাসায় নিয়ে খাওয়ার ব্যাপারে হিরামাত্সু লা রিজার্ভ রেস্টুরেন্টের প্রধান শেফ হিসাশি উচিকোবা বলেন, যখন কাস্টমাররা বাসায় বসে আমাদের খাবার খান, তখন আমরা নিশ্চিত নই এটা হোটেলে পরিবেশনের সময় যেমনভাবে তৈরি করে দিই, বাসায় ঠিক তেমন হচ্ছে কিনা। সত্যি বলতে কি, আমরা চাই মানুষজন যেন আমাদের হোটেলে এসেই খায়।

তিনি আরো বলেন, বড়দিন নববর্ষের জন্য আমরা নতুন ধরনের টেকআউট মেনু বানানোর পরিকল্পনা করছি। কিছু খাবারের দোকান টেকআউট মিল বাসায় পৌঁছে দিয়ে ব্যবসা চালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা নিলেও খাতের বিশেষজ্ঞরা এর সীমাবদ্ধতাও দেখছেন। জাপান ফুড সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের এক প্রতিনিধি বলেন, রেস্টুরেন্টে খেলে যে খরচ হয়, তার চেয়ে টেকআউট সার্ভিসে গড়ে খরচ কমই হয়। টেকআউট মেনুর সঙ্গেও অ্যালকোহলিক বেভারেজ থাকে, যদিও সেই পরিমাণটা রেস্টুরেন্টে খাওয়ার সময়ের চেয়ে কম হয়। তার মানে, দোকানগুলো বিক্রির ঘাটতি কাটিয়ে উঠতে পারছেই না।

টেকআউট অর্ডার নিচ্ছে ফাস্টফুডের দোকানগুলোও। জনপ্রিয় ফাস্টফুড চেইন স্টোর মস বার্গার আগস্টে টোকিওর শিনজুকু অঞ্চলের এক সুপারমার্কেটের ভেতরে একটি দোকান খুলেছে, যেটি মূলত টেকআউট অর্ডার নেয়। কাস্টমাররা খাবার বাসায় নিয়ে যাবেন, এমনটা ধরে নিয়েই সব মেনু তৈরি করছে বিফ বল রেস্টুরেন্ট ইয়োশিনোয়া।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন