ফ্রান্সে ছুরিকাঘাতে নিহত ৩

বণিক বার্তা অনলাইন

ফ্রান্সের নিস শহরে ছুরিকাঘাতে তিন জন নিহত হয়েছে। নিস মেয়র ক্রিশ্চিয়ান এসত্রোসি জানিয়েছেন, নটরডেম প্রাসাদের একেবারে কেন্দ্রে এই হামলার ঘটনা ঘটেছে। এটিকে তিনি ‘সন্ত্রাসী’  হামলা এবং ‘ইসলামি ফ্যাসিবাদ’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। 

পুলিশ জানিয়েছে, হামলায় এক নারীর গলা কেটে ফেলা হয়েছে। সন্দেহভাজন আক্রমণকারীকে তাৎক্ষণিকভাবে আটক করা হয়েছে। নিহতদের মধ্যে দুজন আক্রমণের শিকার হন গির্জার ভেতরে। আর একজন গির্জার কাছাকাছি স্থানে। নিহতদের মধ্যে দুজন নারী রয়েছেন।

ফ্রান্সের জাতীয় সন্ত্রাসবিরোধী কৌঁসুলীরা এরই মধ্যে এ ব্যাপারে হত্যা তদন্ত শুরু করেছেন।

মেয়র সাংবাদিকদের বলেছেন, হামলায় সন্দেহভাজনকে যখন আটক করা হচ্ছিল তখন সে অনবরত ‘আল্লাহু আকবর’ বলে চিৎকার করছিল। নিহতদের একজন নটরডেম প্রাসাদের তত্ত্বাবধায়ক।

এদিকে ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাধারণ জনগণকে ঘটনাস্থল এড়িয়ে চলার অনুরোধ জানিয়েছেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জেরাল্ড ডারমানিন বলেছেন, তিনি প্যারিসে মন্ত্রিপরিষদের জরুরি বৈঠক ডেকেছেন।

আজ বৃহস্পতিবার রাত থেকে ফ্রান্সে নতুন করে কঠোর লকডাউন শুরু হতে যাচ্ছে। এ ব্যাপারে পার্লামেন্টকে বিস্তারিত অবহিত করছিলেন প্রধানমন্ত্রী জ্যঁ কাস্তেক্স। সেখানে নিহতদের স্মরণে পার্লামেন্টে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

প্রধানমন্ত্রী সকলের প্রতি ঐক্য ও সংহতি বজায় রাখার আহ্বানে জানিয়ে বলেছেন, এই মুহূর্তে দেশ সত্যি সত্যিই নতুন এক মারাত্মক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি দাঁড়িয়েছে, এ নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। 

সাম্প্রতিক সময়ে ফ্রান্সে সন্ত্রাসী হামলাগুলোর মধ্যে নিস শহরেই সবচেয়ে মারাত্মক হামলার ঘটনা ঘটছে। এর আগে ২০১৬ সালের ১৪ জুলাই বাস্তিল দিবস উদযাপনের সময় ৩১ বছর বয়সী তিউনিসিয়ার এক অভিবাসী ভিড়ের মধ্যে ট্রাক চালিয়ে দিলে ৮৬ জন প্রাণ হারান।

রুয়েনের একটি গির্জার ভেতরে ফাদার জ্যাকস হ্যামেল নামে এক পাদ্রিকে গলা কেটে হত্যার কয়েক দিন পরেই এ ঘটনা ঘটে।

এদিকে বৃহস্পতিবারের হামলাটি এমন সময় ঘটলো যখন চলতি মাসের শুরুর দিকে উত্তর-পশ্চিম প্যারিসের একটি স্কুলের কাছে স্যামুয়েল প্যাটি নামে এক শিক্ষককে হত্যার ঘট্নাকে কেন্দ্র করে মুসলিম বিশ্ব বিক্ষোভে উত্তাল। ওই শিক্ষক শ্রেণিকক্ষে ইসলামের নবী মোহাম্মদের (সা.) একটি বিতর্কিত কার্টুন প্রদর্শনের পর এ হামলার ঘটনা ঘটে।

এই ঘটনার পর ফ্রান্সে ইমানুয়েল মাখোঁর সরকার চরমপন্থী ইসলামের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেয়। সেই সঙ্গে বেশ কয়েকটি সরকারি ভবনে বিতর্কিত প্রহসন সাময়িকী শার্লি এবদোতে প্রকাশিত নবী মোহাম্মদের (সা.) কার্টুন প্রদর্শন করা হয়। এরপর তুরস্কসহ বেশ কয়েকটি মুসলিম দেশে ফরাসি পণ্য বর্জনের ডাক দেয়া হয়। তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান নিজেই ফরাসি পণ্য বর্জনের আহ্বান জানান। 

এর মধ্যে শার্লি এবদো এরদোয়ানের কার্টুন প্রকাশ করলে তুরস্করে সঙ্গে ফ্রান্সের সম্পর্কের আরো অবনতি ঘটে।

এদিকে সৌদি আরবের জেদ্দায় ফ্রান্স কনস্যুলেটে একই ধরনের হামলার খবর দিয়েছে বিবিসি। এতে কনস্যুলেটের একজন নিরাপত্তারক্ষী আহত হয়েছেন। তিনি বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এবং শঙ্কামুক্ত বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

সূত্র: বিবিসি

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন