কারাগারে পাঠানোর ৩ ঘণ্টা পর আপসের শর্তে দেবাশীষের জামিন

আদালত প্রতিবেদক

উপস্থাপক ও নির্মাতা দেবাশীষ বিশ্বাসকে আজ বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে প্রতারণার একটি মামলায় আত্মসমর্পণ করে জামিন চাইলে আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। কারাগারে যাওয়ার ৩ ঘণ্টা পর মামলার বাদীকে আত্মসাতকৃত টাকা দিয়ে দেবেন শর্তে জামিন পুর্নবিবেচনার আবেদন করেন তিনি। পরে বেলা আড়াইটার দিকে পুনরায় শুনানি শেষে একই বিচারক ১০ হাজার টাকা মুচলেকায় বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট খন্দকার মহিবুল হাসান আপেলের জিম্মায় আপোষের শর্তে জামিনের আদেশ দেন।

ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম মোহাম্মাদ আসাদুজ্জামান নূর কারাগারে পাঠানোর এ আদেশ দেন। দ্বিতীয় দফায় আদেশ দেয়ার সময়  বাদীর আইনজীবীকেও আদালতে হাজির করেন আসামি পক্ষ।

মামলার নথি থেকে দেখা যায়, ২০১৯ সালের ৮ সেপ্টেম্বর ঢাকা সিএমএম আদালতে জনৈক সাংবাদিক লিটন সরকার ইমন বাদী হয়ে দেবাশীষ বিশ্বাস ও তার মা গায়েত্রী বিশ্বাসের নামে প্রতারণার মামলা করেন। ওইদিন আদালত অভিযোগের বিষয়ে রূপনগর থানাকে তদন্তের নির্দেশ দেন। রূপনগর থানার পরিদর্শক (অপারেশন) মোকাম্মেল হক তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে মর্মে প্রতিবেদন দাখিল করেন।

গত বছর ৫ ডিসেম্বর আদালত প্রতিবেদন আমলে নিয়ে আসামিদের চলতি বছর ৩ ফেব্রুয়ারি আদালতে হাজির হতে সমন জারি করেন। এরপর আরও একাধিক তারিখ আসামিদের হাজির হওয়ার জন্য থাকলেও আসামিরা না আসায় গত ২১ অক্টোবর বাদী পক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। ওই পরোয়ানার বিষয় জানতে পেরেই বুধবার দেবাশীষ আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেছিলেন।

মামলার বিবরণে বলা হয়, লিটন সরকার তার সিএন টিভি বাংলা চ্যানেলে জন্য দেবাশীষ বিশ্বাসের মা গায়েত্রী বিশ্বাস প্রযোজিত চারটি বাংলা চলচ্চিত্র- 'মায়ের মর্যাদা', 'শুভ বিবাহ', 'অপেক্ষা' এবং 'অজান্তে সিনেমার ভিডিও ও গান কপিরাইটের বাণিজ্যিক সত্ত্ব কিনতে আগ্রহী হন। আসামিরাও বিক্রয়ে আগ্রহী হন। 'মায়ের মর্যাদা' ও 'শুভ বিবাহ' সিনেমার কপিরাইট এবং বাণিজ্যিক স্বত্ব এক লাখ টাকায়, 'অপেক্ষা' ও 'অজান্তে’ ৪০ হাজার টাকা নির্ধারিত হয়। লিটন সরকার ২০১৯ সালের ৩০ জুলাই আসামিদের নগদ টাকা দেন। চুক্তির শর্ত মতে ৬০ বছরের জন্য বাদী কপিরাইটের বাণিজ্যিক স্বত্ব লাভ করেন। 

বাদী অভিযোগ করেছেন, আসামিরা আর কোনো প্রতিষ্ঠানের কাছে চারটি ছবির কপিরাইট ইতোপূর্বে কোনো প্রতিষ্ঠানের কাছে বিক্রয় কিংবা হস্তান্তর করেননি বলে জানান। বাদী সেগুলো তার সিএন টিভি বাংলা ইউটিউবে আপলোড করেন। কিন্তু ইউটিউব কর্তৃপক্ষ কপিরাইট অনুযায়ী চ্যানেলটি বন্ধ করে দেয়। পরে বাদী খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন এ চারটি চলচ্চিত্র আসামিরা তার আগেই ২০১৭ সালে অন্য দুজন ব্যক্তির কাছে বিক্রি করেন। যার কারণে ইউটিউব চ্যানেল কর্তৃপক্ষ ছবিগুলো আপলোড করার পর লিটন সরকার ইমনের চ্যানেল বন্ধ করে দেয়। 

বাদী ইউটিউব কর্তৃপক্ষ কর্তৃক দলিলপ্রাপ্ত হয়ে নিশ্চিত হন, আসামিদের দ্বারা তিনি সুস্পষ্ট প্রতারণার শিকার হয়েছেন এবং তারা অন্যায়ভাবে অর্থ আত্মসাতের জন্য চুক্তিপত্র সম্পাদন করেছেন। বাদীর চ্যানলেটি বন্ধ হওয়ায় তিনি ৩০ লাখ টাকার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন