পেট্রোনাস টুইন টাওয়ারের চেয়েও বড় প্রবাল প্রাচীর আবিষ্কার

বণিক বার্তা ডেস্ক

অস্ট্রেলিয়ার গ্রেট ব্যারিয়ার রিফে ৫০০ মিটার লম্বা একটি বিচ্ছিন্ন প্রবাল প্রাচীর আবিষ্কার করেছেন বিজ্ঞানীরা। এটা বিশ্বের কয়েকটি আকাশচুম্বী ভবনের চেয়েও উঁচু। ১২০ বছরেরও বেশি সময় আগে প্রথম বিচ্ছিন্ন প্রবাল প্রচীরের সন্ধ্যান পেয়েছিলেন বিজ্ঞানীরা। গবেষণা জাহাজ ফালকোর একটি অভিযান চলাকালে সমুদ্র গবেষণা সংস্থা শ্মিট ওশান ইনস্টিটিউট গত সোমবার বিশালাকার এই প্রবাল প্রাচীর আবিষ্কারের ঘোষণা দেন। 

বিশেষজ্ঞরা বলেন, ব্লেডের মতো এই প্রবাল প্রাচীরের ভিত্তি ১ দশমিক ৫ কিলোমিটার প্রশস্ত। উত্তর গ্রেট ব্যারিয়ার রিফের সমুদ্র তলদেশে ম্যাপিংয়ের কাজ করার সময় বিজ্ঞানীরা গত ২০ অক্টোবর এই প্রবাল প্রাচীরটি প্রথম আবিষ্কার করেছিলেন। 

৫০০ মিটার উচু এই প্রবাল প্রাচীর যুক্তরাষ্ট্রের এম্পায়ার স্টেট বিল্ডিং (৩৮১ মিটার), অস্ট্রেলিয়ার সিডনি টাওয়ার (৩০৫ মিটার) ও মালয়েশিয়ার পেট্রোনাস টুইন টাওয়ারের (৪৫১ দশমিক ৯ মিটার) চেয়েও লম্বা। সুবাস্তিয়ান নামে পানির নিচে কাজ করতে সক্ষম একটি রোবট ব্যবহার করে দলটি প্রবাল প্রাচীরটি আবিষ্কার করেছিল এবং আবিষ্কারের সময়টি তারা লাইভ স্ট্রিমিং করেছিল। 

একটি উল্লেখযোগ্য সবুজ কচ্ছপের বাসা বাঁধার সাইট রেইন আইল্যান্ড সহ এই অঞ্চলে আরো সাতটি উঁচু বিচ্ছিন্ন প্রবাল প্রাচীর রয়েছে। এই অভিযানের নেতৃত্বদানকারী রবিন বেনান জানান, এই আবিষ্কারে তিনি বিস্মিত হয়েছেন। একটি বিবৃতিতে তিনি বলেন, বিশদভাবে প্রবাল প্রাচীরকে ফুটিয়ে তুলতে কেবল থ্রিডি ম্যাপই নয়, সুবাস্তিয়ানের সঙ্গে এই অবিশ্বাস্য আবিষ্কারটি আপনি চাক্ষুস দেখতে পারেন। 

শ্মিট ওশান ইনস্টিটিউটের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ওয়েন্ডি শ্মিট এক বিবৃতিতে বলেন, এই অপ্রত্যাশিত আবিষ্কার নিশ্চিত করে যে আমরা আমাদের মহাসাগরে অজানা কাঠামো ও নতুন প্রজাতিগুলো খুঁজে পেতে চলেছি। সমুদ্রের মধ্যে থাকা জিনিসগুলো সম্পর্কে এতদিন আমাদের জ্ঞান সীমাবদ্ধ ছিল। এজন্য গভীর সমুদ্রে আমাদের চোখ, কান ও হাত হিসেবে কাজ করে এমন নতুন প্রযুক্তিগুলোকে ধন্যবাদ। আমাদের এখন সমুদ্রের গভীরে অন্বেষণের এমন ক্ষমতা রয়েছে, যা পূর্বে কখনো ছিল না। আমাদের সামনে এখন বাস্তুতন্ত্র ও বৈচিত্রময় জীবণরূপ সহ নতুন মহাসাগরের চিত্র উন্মুক্ত হচ্ছে। 

বিশ্বের বৃহত্তম প্রবাল প্রাচীর গ্রেট ব্যারিয়ার রিফটি প্রায় ১ লাখ ৩৩ হাজার বর্গমাইলজুড়ে বিস্তৃত। প্রবাল প্রাচীরটিতে দেড় হাজারেরও বেশি প্রজাতির মাছ, ৪১১ প্রজাতির শক্ত প্রবাল ও কয়েক ডজন অন্যান্য প্রজাতি রয়েছে। 

তবে সাম্প্রতিক সময়ে রিফটি সংকটের মুখোমুখি হচ্ছে। সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, গত তিন দশকে রিফটি তার ৫০ শতাংশ প্রবাল জনসংখ্যা হারিয়েছে। আর এমন বিপর্যয়ের মূলে রয়েছে জলবায়ু পরিবর্তন। 


সূত্র : সিএনএন


এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন