চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনা ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে প্রায় দেড় কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত প্রাণী সংগনিরোধ কেন্দ্রটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। জনবল সংকটে উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্রেও কাজের গতি হারিয়েছে। ছয় অর্থবছরে এ কেন্দ্র থেকে সরকারের আয় হয়েছে ২ কোটি ৯৯ লাখ ৭৯ হাজার ৬২ টাকা। তবে কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আমদানি পণ্যের ছাড়পত্র পেতে রেলওয়াগনপ্রতি উেকাচ নেয়ার অভিযোগ রয়েছে।
চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালে দর্শনা ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে ছয় শতক জমির ওপর প্রায় দেড় কোটি টাকা ব্যয়ে প্রাণী রোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পের আওতায় প্রাণিসম্পদ সংগনিরোধ কেন্দ্রটি নির্মিত হয়। ভারত থেকে বৈধভাবে আসা প্রাণীদের ওষুধ ও ভ্যাকসিন দেয়া এবং সেগুলো ৭-১৪ দিন এ কেন্দ্রে রেখে রোগ নির্ণয়ের বিষয়টি নিশ্চিতের জন্য কেন্দ্রটি স্থাপন করা হয়। কিন্তু জনবলের অভাবে বর্তমানে এ স্থাপনায় কোনো কার্যক্রম পরিচালিত না হওয়ায় এটা পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। দিনে ও রাতে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে নিয়োগ দেয়া দুজন প্রহরী ভবনটি পাহারা দেন।
সরেজমিন দর্শনার জয়নগর ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে গিয়ে দেখা যায়, প্রাণী সংগনিরোধ কেন্দ্রটির সাইনবোর্ডও নেই। বৃষ্টির পানিতে ভবনের দেয়াল বর্ণহীন হয়ে গেছে। উপরের কিছু অংশে বৃষ্টির পানি ঠেকাতে পলিথিন দেয়া হয়েছে।
দামুড়হুদা উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মশিউর রহমান জানান, দেশের ২৫টি স্থানে ‘লাইভ স্টক কোয়ারেন্টিন’
কেন্দ্র নির্মাণ করা হয়েছে। শুধু ঢাকা বিমানবন্দর ও যশোরের বেনাপোলে এ কেন্দ্র চালু থাকলেও জনবলের অভাবে বাকিগুলো চালু করা যায়নি। জনবল নিয়োগ হলেই দর্শনার প্রাণী সংগনিরোধ কেন্দ্রের কার্যক্রম চালু হবে।
এদিকে জনবল সংকটের কারণে দর্শনার উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্রটিও তেমন কাজে আসছে না। ২০১৫ সালের জুলাইয়ে দর্শনা পৌরসভা ভবনের কোলঘেঁষে ২৩ শতক জমির ওপর নির্মিত আধুনিক উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্রের কার্যক্রম শুরু হয়। সেই থেকেই এখানে জনবল সংকট। তবে সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টদের অভিযোগ, সরকারি ফি বাবদ তহবিলে যা জমা হয়, তার চেয়ে এ কেন্দ্রে বর্তমানে কর্মরতদের রোজগার বেশি।
হয়রানির ভয়ে তারা তাদের প্রতিষ্ঠানের নাম প্রকাশ করেননি। তারা বলেন, ভারত থেকে তাদের আমদানি করা পণ্যের ছাড়পত্র পেতে রেলওয়াগনপ্রতি দর্শনা উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্রে ২ হাজার টাকা করে দিতে হয়। অন্যথায় আমদানি পণ্যের ছাড়পত্র পেতে ভোগান্তির শেষ থাকে না। টাকা দিলে রেলওয়াগনে কী আছে তা না দেখেই ছাড়পত্র দিয়ে দেয় বলেও অভিযোগ করেন তারা।
দর্শনা উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্রের অতিরিক্ত উপপরিচালক মনিরুজ্জামান (অতিরিক্ত দায়িত্ব) বলেন, এ দপ্তরে জনবল সংকটের কারণে দাপ্তরিক কার্যক্রম চালাতে খুবই সমস্যা হয়। তবে করোনাকালীন কাজের চাপ কম। রেলওয়াগনপ্রতি ২ হাজার টাকা উেকাচ নেয়ার বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না বলে দাবি করেন।