পেরুতে কফি উৎপাদন কমেছে ১০ শতাংশ

বণিক বার্তা ডেস্ক

কভিড-১৯ মহামারীর কারণে পরিযায়ী শ্রমিক সংকট এবং অপেক্ষাকৃত কম দামের কারণে বিশ্বের পঞ্চম শীর্ষ অ্যারাবিকা কফি রফতানিকারক দেশ পেরুতে এবার কফি উৎপাদন কমেছে ১০ শতাংশ। দেশটির কফি ফেডারেশনের প্রধান এমনটাই জানিয়েছেন। খবর রয়টার্স।

পেরুতে উৎপাদন কমে যাওয়াটা কফির ভবিষ্যৎ বাজারের ওপর বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে। কেননা কফির সরবরাহ এখনো মার্কেটের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি।

তিন বছর ধরে ভবিষ্যৎ বাজারে (কেসিসিটু) কফি আগের ১০ বছরের গড় দামের চেয়েও ৩০ শতাংশ কমে বিক্রি হয়েছে, যা কিনা উচ্চব্যয়ের উৎপাদনকারী দেশ পেরুর ওপর ভীষণ চাপ তৈরি করেছে।

পেরুর জুনতা ন্যাসিওনাল ডেল ক্যাফের (জেএনসি) লরেঞ্জো কাস্তিল্লো বলেন, কফি উৎপাদন কমে যাওয়ার অন্যতম কারণ হলো কৃষকরা কোকা চাষের দিকে ঝুঁকছেন। কোকা মূলত ঔষধি পণ্যের জন্যই আবাদ করা হয়, যদিও থেকে কোকেনও উৎপাদন করা হয়।

কাস্তিল্লো জানান, গত জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত সময়ে ৩৫ লাখ ব্যাগ (প্রতি ব্যাগে ৬০ কেজি) কফি উৎপাদন করেছে পেরু। অথচ ২০১৯ সালের সময়ে উৎপাদন ছিল ৩৯ লাখ ব্যাগ।

তিনি বলেন, উৎপাদন কমে যাওয়ার কারণ মার্চ থেকে জুন পর্যন্ত শ্রমিকরা ঘরের বাইরে যেতে পারেননি (নভেল করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে)

আবার অনেক কৃষক বেশি মুনাফা হয় এমন শস্যের দিকে ঝুঁকছেন। যেমন কোকো। কাস্তিল্লো ব্যাখ্যা করে বলেন, কোকোর জমিতে কাজ করে একজন শ্রমিক দিনে আয় করেন ৩৪ থেকে ৪২ ডলার, অথচ কফিতে তা নেমে যায় ১১ ডলারে।

কভিড-১৯ সংক্রমণ মৃত্যু কমাতে মরিয়া হয়ে ওঠা পেরুতে সব অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড থমকে গিয়েছিল। দেশটিতে প্রতি এক লাখে ১০০ মানুষ আক্রান্ত হয়, যা বিশ্বে সর্বোচ্চ। এর প্রভাব পড়ে কফি চাষেও।

ধীরে ধীরে পেরুতে কফি চাষ উৎপাদন কমছে। সরকারি তথ্যমতে, ২০১২ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যবর্তী সময়ে দেশটিতে কফি চাষ ১৭ শতাংশ কমেছে এবং বছর সম্ভবত শতাংশ কমছে। কাস্তিল্লো মনে করেন, ২০২১ সালের সম্ভাবনাও খুব উৎসাহব্যঞ্জক নয়, কারণ কফি গাছে ছত্রাক পতঙ্গের প্রাদুর্ভাব এবং এটি রুখতে সারের মতো উপকরণ কেনার মতো যথেষ্ট পুঁজি কৃষকের হাতে না থাকা।

যুক্তরাষ্ট্র কৃষি বিভাগ গত জুলাইয়ে জানায়, গভীর এক সংকটের মুখোমুখি পেরুর কফি চাষীরা, কেননা কফির বর্তমান দাম কৃষকের উৎপাদন ব্যয়ের চেয়েও কম হওয়ায় তারা জমি ফেলে রাখছেন।

পেরুতে উৎপাদন কম হলেও লাতিন আমেরিকায় ঘাটতি পুষিয়ে দিতে পারে কলম্বিয়া হন্ডুরাস; যদিও মহামারীর কারণে গোটা মধ্য আমেরিকায় কফি উৎপাদন নিয়ে চরম অনিশ্চয়তা।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক এক কফি আমদানিকারক বলেছেন, কভিড-১৯-এর কারণে পরিবহনে সমস্যা হওয়ায় সম্প্রতি তিনি পেরু থেকে কফির শিপমেন্ট কমিয়ে দিয়েছেন।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন