করোনার বন্ধে গাছ চুরির ঘটনায় লাউয়াছড়ার রেঞ্জ কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার

বণিক বার্তা প্রতিনিধি, মৌলভীবাজার

করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের কারণে বন্ধ থাকার সুযোগে চুরি হয়ে গেছে লাউয়াছড়া উদ্যানের অসংখ্য গাছ। ২০ অক্টোবর নিয়ে বণিক বার্তায় সংবাদ প্রকাশের পর নড়েচড়ে বসে বন বিভাগ। বিষয়টির প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় শ্রীমঙ্গলের ভারপ্রাপ্ত রেঞ্জ কর্মকর্তা মোনায়েম হোসেনকে প্রত্যাহার করেছে কর্তৃপক্ষ।

গত রোববার তাকে প্রত্যাহারের আদেশ দিয়েছেন বন বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ। এর আগে বুলবুল আহমদ নামে এক বনরক্ষীকে প্রত্যাহার করা হয়।

জানা যায়, মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে নিয়মিত গাছচুরি হলেও করোনার বন্ধে তা কয়েক গুণ বেড়ে যায়। সংঘবদ্ধ চোরচক্র অবাধে মূল্যবান বৃক্ষ কেটে নিচ্ছিল। করোনাকালীন লকডাউনের সময়ে পর্যটকের আনাগোনা না থাকায় চোরচক্র নিরাপদে চালিয়েছে অপকর্ম। অভিযোগ ওঠে, চুরির সঙ্গে লাউয়াছড়ার রেঞ্জ অফিসার মোনায়েম হোসেনের সহযোগিতা রয়েছে।

নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পর ২৫ অক্টোবর লাউয়াছড়ার রেঞ্জ অফিসারকে প্রত্যাহারের লিখিত নির্দেশ দেয় বন বিভাগের প্রধান কার্যালয়। এর আগে একই অভিযোগে বনরক্ষী বুলবুল আহমদকে প্রত্যাহার করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, রেঞ্জ অফিসারের প্রত্যাহারের অর্ডার হয়েছে বলে শুনেছি। তবে এখনো অফিশিয়ালি কাগজপত্র হাতে পাইনি।

বন বিভাগের তথ্যমতে, করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের সুযোগে সংঘবদ্ধ চোরচক্র লাউয়াছড়া বনের ১৭১টি গাছ চুরি করেছে। চলতি বছরের মার্চ-জুন চার মাসে সবচেয়ে বেশি চুরির ঘটনা ঘটেছে। আর চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত গাছচুরির দায়ে ৩৫টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। একই সময়ে সেগুন, আগর, বনাক, চাপালিশ আকাশমনিসহ বিভিন্ন জাতের প্রায় ৯০০ ঘনফুট চোরাই কাঠ উদ্ধার জব্দ করা হয়েছে, যার বাজারমূল্য প্রায় লাখ টাকা।

ব্যাপারে বন বিভাগ তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। কমিটির প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন সিলেট বিভাগীয় সহকারী বন সংরক্ষক আনিসুর রহমান।

তদন্ত কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, এরই মধ্যে চারজনকে কারণ দর্শানোর নোটিস দেয়া হয়েছে। বনজ সম্পদ বন্যপ্রাণী রক্ষায় দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন