প্রতিকূল আবহাওয়ায় উৎপাদন কমবে আর্জেন্টিনায়

বণিক বার্তা ডেস্ক

একদিকে শুষ্ক আবহাওয়া অন্যদিকে তুষারপাত। দুটো কারণেই চলতি উৎপাদন মৌসুমে আর্জেন্টিনায় গমের উৎপাদন উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমে যাওয়ার পূর্বাভাস দিয়েছে দেশটির রোসারিও গ্রেইন এক্সচেঞ্জ। প্রতিষ্ঠানটি বলছে, প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে চলতি ২০২০-২১ উৎপাদন মৌসুমে আর্জেন্টিনায় গমের উৎপাদন কোটি ৭০ লাখ টনে দাঁড়াতে পারে। আগের প্রাক্কলনের তুলনায় যা ১০ লাখ টন কম। খবর রয়টার্স।

সাধারণত ডিসেম্বর জানুয়ারিতে গম খাদ্যশস্য সংগ্রহ করে আর্জেন্টিনার কৃষকরা। কিন্তু গত আট মাস ধরে দেশটির অন্যতম গম উৎপাদন অঞ্চল পাম্পাসে অস্বাভাবিক শুষ্ক পরিস্থিতি বিরাজ করছে, যা খাদ্যশস্যটির উৎপাদনের ওপর ব্যাপক প্রভাব পড়েছে।  

রোসারিও গ্রেইন এক্সচেঞ্জের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মুহূর্তে আর্জেন্টিনায় বৃষ্টির প্রয়োজন। না হলে গমের উৎপাদন আরো কমে যেতে পারে। কারণ দীর্ঘ সময় ধরে শুষ্ক আবহাওয়া পরিস্থিতি বিরাজ করায় গমের উৎপাদন উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমে আসছে। এতে করে পানির অভাব তুষারপাতের কারণে লাখ হাজার হেক্টর জমি আবাদকৃত গম ফসলের জন্য ব্যাপক ক্ষতি হতে পারে।

চলতি মৌসুমে আর্জেন্টিনায় সব মিলিয়ে ৬৫ লাখ হেক্টর জমিতে গমের আবাদ হয়েছে। কিন্তু প্রতিকূল আবহাওয়া শুরু থেকেই এবার গমের উৎপাদন নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। যদিও দেশটির আবহাওয়া অফিস বলছে, সপ্তাহেই দেশটিতে বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

এদিকে প্রতিকূল আবহাওয়ায় গম উৎপাদন কমে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও অন্যান্য খাদ্যশস্য উৎপাদনের ক্ষেত্রে এটির তেমন কোনো প্রভাব পড়বে না বলে মনে করছে রোসারিও গ্রেইন এক্সচেঞ্জ। প্রতিষ্ঠানটির প্রাক্কলন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২০-২১ উৎপাদন মৌসুমে দেশটিতে ভুট্টা উৎপাদনের পরিমাণ দাঁড়াতে পারে কোটি ৮০ লাখ টনে এবং সয়াবিনের উৎপাদন হতে পারে কোটি টন। উভয় ফসলের উৎপাদনের ক্ষেত্রেই আগের প্রাক্কলনে কোনো পরিবর্তন আনা হয়নি। তবে সম্প্রতি আবাদ করা সয়াবিন ভুট্টার উৎপাদন ভালো হওয়ার জন্য আরো বেশি আর্দ্রতা প্রয়োজন বলে মনে করছে প্রতিষ্ঠানটি।

অন্যদিকে বুয়েনস এইরেস এক্সচেঞ্জের প্রাক্কলন বলছে, ২০২০-২১ উৎপাদন মৌসুমে দেশটিতে গমের উৎপাদন হতে পারে কোটি ৭৫ লাখ টন। যেখানে আগের প্রাক্কলনে উৎপাদনের পরিমাণ ধরা হয়েছিল কোটি ১০ লাখ টন। প্রয়োজনের তুলনায় মৌসুমে বৃষ্টি কম হওয়ায় গমের উৎপাদন মৌসুমে কিছুটা কমবে বলে মনে করছে এক্সচেঞ্জটি।

বৈশ্বিক খাদ্যশস্যের বাজারে আর্জেন্টিনা অন্যতম সরবরাহকারী। যে কারণে দেশটিতে খাদ্যশস্যের উৎপাদন হ্রাস-বৃদ্ধির ওপর আন্তর্জাতিক বাজারে দামের ওঠানামাও নির্ভর করে।

তবে প্রতিকূল আবহাওয়ায় এক অঞ্চলে উৎপাদন কমলেও অন্য অঞ্চলের উৎপাদন দিয়ে এতে ভারসাম্য আনা যাবে বলে মনে করছে বুয়েনস এইরেস এক্সচেঞ্জ। প্রতিষ্ঠানটি বলছে, সেন্ট্রাল বেল্টে শুষ্ক আবহাওয়ার কারণে উৎপাদন কমে এলেও দক্ষিণাঞ্চলীয় এলাকায় উৎপাদন বাড়িয়ে ক্ষতি কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন