অর্থ পাচার প্রতিরোধে পাকিস্তানের অবস্থান নজরদারিতে রেখেছে এফএটিএফ

বণিক বার্তা ডেস্ক

অর্থ পাচার প্রতিরোধের পদক্ষেপ গ্রহণে পাকিস্তান কতটুকু অগ্রগতি অর্জন করেছে, তা নজরদারিতে রাখছে ফাইন্যান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্কফোর্স (এফএটিএফ) বৈশ্বিক তদারককারী প্রতিষ্ঠানটি পাকিস্তানকে বলেছে, অর্থ পাচার প্রতিরোধের ব্যবস্থা গ্রহণে তাদের যেটুকু ঘাটতি রয়েছে, তা যেন তারা দ্রুত পুষিয়ে নেয়। খবর ব্লুমবার্গ।

অর্থ পাচার রোধে পাকিস্তানের হাতে একটি কর্মপরিকল্পনা ধরিয়ে দিয়েছে এফএটিএফ। এতে মোট ২৭টি টাস্ক রয়েছে। পাকিস্তান এর মধ্যে ২১টি টাস্ক প্রায় সম্পন্ন করেছে। বাকি ছয়টি টাস্ক সম্পন্নের কার্যক্রম বিভিন্ন পর্যায়ে চলমান। এফএটিএফ পাকিস্তানকে আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যে সব টাস্ক সম্পূর্ণরূপে সম্পন্ন করার আহ্বান জানিয়েছে।

গত ফেব্রুয়ারিতে পাকিস্তান ১৪টি টাস্কের সিংহভাগ সম্পন্ন করেছিল। অর্থাৎ আট মাসে দেশটি নতুন করে সাতটি টাস্ক সম্পন্নের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে।

অর্থ পাচার তদারকিতে পাকিস্তানকে গ্রে মনিটরিং তালিকায় রেখেছে এফএটিএফ। এর অর্থ হলো, দেশটি উত্তর কোরিয়া ইরানের সঙ্গে একই কাতারে কালো তালিকাভুক্ত হওয়ার ঝুঁকি থেকে আপাতত মুক্ত। কালো তালিকাভুক্ত হলে দেশটির ব্যাংকিং খাতে কঠোর নিষেধাজ্ঞা নেমে আসবে। আর পাকিস্তানের সংকটপূর্ণ ব্যাংকিং খাতের জন্য তা আরো বিপর্যয়ের কারণ হয়ে দাঁড়াবে।

এমনিতেই কভিড-১৯ মহামারীর অভিঘাতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে পাকিস্তানের ব্যাংকিং খাত। এর মধ্যে দেশটির অর্থ পাচার প্রতিরোধ সক্ষমতার র্যাংকিং কমে গেলে সেখানে মূলধনের অন্তঃপ্রবাহ বন্ধ হয়ে যেতে পারে বলে সতর্ক করেছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) এতে পাকিস্তানের জন্য আইএমএফের ৬০০ কোটি ডলারের ঋণ সহায়তা কর্মসূচির বাস্তবায়নও সংকটে পড়ে যেতে পারে।

এক সংবাদ সম্মেলনে এফএটিএফের প্রেসিডেন্ট মার্কাস প্লেয়ার বলেন, আমরা পকিস্তানকে কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নে অগ্রসর হতে দেখেছি। কারণে আমরা তাদের আরো সুযোগ দিচ্ছি, যেন তারা অসম্পন্ন টাস্কগুলো সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করতে পারে। তিনি জানান, পকিস্তান অবশিষ্ট টাস্কগুলো সম্পন্ন করলে একটি সরেজমিন নিরীক্ষা চালানো হবে। তারপর পর্যালোচনাধীন দেশের তালিকা থেকে পাকিস্তানের নাম সরিয়ে ফেলা হবে।

এর আগে এফএটিএফ অর্থ পাচার প্রতিরোধে বিদ্যমান ঘাটতিগুলো পূরণ করায় মঙ্গোলিয়া আইসল্যান্ডের নাম মনিটরিং লিস্ট থেকে সরিয়ে ফেলে।

অর্থ পাচার প্রতিরোধে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সরকার বেশকিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে সন্ত্রাসে অর্থায়ন ঝুঁকি নিরূপণ তদারকি এবং অবৈধ উপায় অর্থ স্থানান্তর নিয়ন্ত্রণ। পাকিস্তান ২০১৮ সাল থেকে এফএটিএফের মনিটরিং লিস্টে রয়েছে। তালিকা থেকে নাম সরিয়ে ফেলার জন্য এর আগে চার দফায় সুযোগ দেয়া হলেও তারা নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে এফএটিএফের কর্মপরিকল্পনাগুলো সম্পূর্ণরূপে বাস্তবায়নে ব্যর্থ হয়।

ভারত দীর্ঘদিন ধরেই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কাশ্মীরের বিচ্ছিন্নতাবাদী জঙ্গিগোষ্ঠীকে অর্থসহায়তা দেয়ার অভিযোগ করে আসছে। যুক্তি দেখিয়ে তারা পাকিস্তানের অবস্থান অবনমনেরও তদবির জানিয়েছে এফএটিএফের কাছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন