নির্বাচনের ফল পাল্টে দিতে পারেন তরুণ মার্কিনরা

বণিক বার্তা ডেস্ক

কম বয়সী মার্কিনদের বেশির ভাগই নির্বাচনে ভোট দেন না। তবে এবারের নির্বাচনে সত্তরোর্ধ্ব দুই প্রেসিডেন্ট প্রার্থীর লড়াইয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারেন তরুণ ভোটাররা। খবর এএফপি।

কভিড-১৯ মহামারীর কারণে বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ বন্ধ থাকায় এবং বেশির ভাগ তরুণ ঘরে অবস্থান করায় তাদের ভোট প্রয়োগের সম্ভাবনা বেড়েছে। তাছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রভাব বিস্তারকারীদের উদ্ভাবনী ভার্চুয়াল প্রচারণা, টিকটকে নৃত্য, ভিডিও গেম জুম আলোচনাসহ টেক্সট মেসেজ মোবাইল কলের মাধ্যমে তরুণ ভোটারদের আকৃষ্ট করা হচ্ছে।

নির্বাচনে নিজেদের অবস্থান জানানোর জন্য তরুণদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন টেইলর সুইফট, সেলেনা গোমেজ, বিলি এইলিশ কার্দি বির মতো জনপ্রিয় সংগীত তারকারা। 

যুক্তরাষ্ট্রের মোট ভোটারের ২০ শতাংশের বয়স ১৮ থেকে ২৯ বছর। ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তাদের মাত্র অর্ধেকই ভোট প্রয়োগ করেছেন। নির্দলীয় নিউ ভোটারস প্রজেক্টের সদস্য এবং মিশিগানের ১৯ বছর বয়সী ছাত্র কাইটলিন আপকং বলেন, নির্বাচনে প্রভাবশালী ভূমিকা রাখার মতো ভোটার রয়েছেন আমাদের হাতে কিন্তু তাদের বেশির ভাগই এটা সম্পর্কে সচেতন নন।

শতাধিক ক্যাম্পাসে সক্রিয় ওই গ্রুপটির সদস্য আরো জানান, আমি এমন অনেক তরুণের সঙ্গে কথা বলেছি, যারা মনে করেন তাদের মতামত কোনো গুরুত্ব রাখে না। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক এক জরিপে অবশ্য কিছুটা ইতিবাচক চিত্র ফুটে উঠেছে। ১৮ থেকে ২৯ বছর বয়সী ৬৩ শতাংশ আমেরিকান জানিয়েছেন, তারা আগামী নভেম্বরের নির্বাচনে ভোট প্রয়োগ করবেন। চার বছর আগে হার ছিল যেখানে ৪৭ শতাংশ।

পেনসিলভানিয়া, মিশিগান আরিজোনার মতো তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক রাজ্যগুলোতে তরুণ ভোটারদের ভোট ট্রাম্পের চেয়ে জো বাইডেনের ঝুলিতেই পড়তে পারে। হার্ভার্ডের জরিপেও দেখা গেছে, জরিপে অংশ নেয়া ৬০ শতাংশ তরুণ জো বাইডেনকে ভোট দেবেন।

বেশির ভাগ তরুণ ভোটার যেহেতু অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ, জলবায়ু পরিবর্তনের মতো উদারনৈতিক ইস্যুগুলোতে সমর্থন দিচ্ছেন, সে কারণে তাদের ভোট আকর্ষণে বিশেষ কর্মসূচি নিচ্ছেন ডেমোক্র্যাটরা। সেদিক থেকে অনেক পিছিয়ে রয়েছেন রিপাবলিকানরা।

তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ১১টি রাজ্যে ভোটারদের একত্রিত করতে কাজ করে যাচ্ছে নেক্সটজেন আমেরিকা নামে একটি উদারপন্থী গ্রুপ। সাবেক ডেমোক্র্যাট নমিনেশন প্রত্যাশী বিলিয়নেয়ার টম স্টেয়ার কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত গ্রুপটির লক্ষ্য হচ্ছে ৪৫ লাখ আমেরিকানকে সম্পৃক্ত করা। পেনসিলভানিয়ায় নেক্সটজেন আমেরিকার পরিচালক ল্যারিসা সুইজার জানান, তারা ৫০ হাজার তরুণ ভোটারের সঙ্গে কথা বলেছেন, যারা এবার ভোট দেয়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন। তাদের মধ্যে ২০১৬ সালের নির্বাচনের পর নিবন্ধিত হয়েছেন ২২ হাজার জন। গত নির্বাচনে পেনসিলভানিয়ায় ৪৪ হাজারের বেশি ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছিলেন ট্রাম্প।

তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ রাজ্যগুলোতে হাজার অনলাইন ইনফ্লুয়েন্সার নিয়োগ দিয়েছে নেক্সটজেন আমেরিকা, যাদের কয়েক কোটি অনুসারী রয়েছেন।

সারাহ ইয়াগান (২৩) নামে নেক্সটজেন পেনসিলভানিয়ার এক অ্যাক্টিভিস্ট বলেন, বর্তমানে ছাত্ররা বন্ধুদের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে বাসায় অবস্থান করায় তারা ফোনে সাড়া দিচ্ছেন এবং বেশির ভাগই এবার ভোট দেয়ার ব্যাপারে দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন।

নভেল করোনাভাইরাস মোকাবেলায় ট্রাম্পের ভূমিকা তরুণ ভোটারদের কাছে এবার গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। এমা রাউল্যান্ড নামে ২০ বছর বয়সী এক রাজনৈতিক কর্মী জানান, তরুণ ভোটাররা এবার বুঝতে পেরেছেন, হয়তো তাদের ভোট দিতে যাওয়া উচিত। নির্বাচনী ফলাফল হয়তো তার জীবনমান উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে। অনেকেই আরো সাত মাস ঘরে আটকে থাকতে চাচ্ছেন না।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন