যুক্তরাজ্যে মানব চ্যালেঞ্জ ট্রায়াল

স্বেচ্ছাসেবীদের পরিকল্পিতভাবে সংক্রমিত করা হবে!

বণিক বার্তা ডেস্ক

যুক্তরাজ্য পরিকল্পিতভাবে তরুণ সুস্থ স্বেচ্ছাসেবীদের সংক্রমিত করার তথা মানব চ্যালেঞ্জ ট্রায়ালের প্রস্তুতি নিচ্ছে। নিয়ন্ত্রক নীতিগত সংস্থার অনুমোদন পেলে আগামী জানুয়ারিতে প্রক্রিয়া শুরু হবে এবং মে মাস নাগাদ সেটার ফলাফল পাওয়া যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। ম্যালেরিয়া ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো রোগের ক্ষেত্রে মানব চ্যালেঞ্জ ট্রায়াল হওয়ার ইতিহাস রয়েছে।

ট্রায়ালের মাধ্যমে যুক্তরাজ্য ভবিষ্যতে ভ্যাকসিন ট্রায়ালে ব্যবহার করা যেতে পারে এমন নভেল করোনাভাইরাসের উপযুক্ত ডোজ শনাক্ত করার চেষ্টা করবে। গুরুতর লক্ষণ দেখা দেয়ার আশঙ্কা কম হলেও ইচ্ছাকৃতভাবে লোকজনকে সংক্রমিত করার বিষয়টি ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ প্রাণঘাতী ভাইরাসের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত খুব কমই প্রমাণিত চিকিৎসা রয়েছে।

মানব চ্যালেঞ্জ পরীক্ষার সমর্থকরা যুক্তি দিয়েছেন, এগুলো নিরাপদে নৈতিকতার সঙ্গে চালানো যেতে পারে। কার্যকর ভ্যাকসিনগুলো দ্রুত শনাক্ত করতে ট্রায়ালে অংশগ্রহণকারীদের ঝুঁকি খুব কম। তবে অনেকে অধ্যয়নের সুরক্ষা মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তাদের যুক্তি, এমনিতেই বড় আকারের ট্রায়াল পরিচালনার মাধ্যমে বেশ কয়েকটি ভ্যাকসিনের দ্রুত ফলাফল পাওয়ার আশা করা হচ্ছে।

ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডনের ইমিউনোলজিস্ট গবেষণাটির তদন্তকারী পিটার ওপেনশো একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, রোগজীবাণুর মাধ্যমে ইচ্ছাকৃতভাবে স্বেচ্ছাসেবীদের সংক্রমিত করা কখনো হালকাভাবে নেয়া হয় না। ধরনের গবেষণা একটি রোগ সম্পর্কে অত্যন্ত তথ্যবহুল। কভিড-১৯-এর কার্যকর ভ্যাকসিন অন্যান্য চিকিৎসা পাওয়ার জন্য আমাদের যত দ্রুত সম্ভব অগ্রসর হওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মানব চ্যালেঞ্জ ট্রায়াল ভাইরাসটির ওষুধ ভ্যাকসিন তৈরির প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত ঝুঁকিহীন করে তুলতে পারে।

মানব চ্যালেঞ্জ ট্রায়ালের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বিভিন্ন ভ্যাকসিনের ট্রায়াল পরিচালনা করা ওপেন অরফান সংস্থার প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ভাইরোলজিস্ট অ্যান্ড্রু ক্যাচপোল। তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে আনুমানিক ৩০ থেকে ৫০ জন স্বেচ্ছাসেবীকে নেয়া হবে। এটা কেবল ১৮ থেকে ৩০ বছর বয়সী সুস্থ ব্যক্তিদের জন্য উন্মুক্ত। ডোজ গ্রহণ করে কোনো অংশগ্রহণকারী সংক্রমিত না হলে বা কয়েকজন সংক্রমিত হলে একটি স্বাধীন সুরক্ষা নিরীক্ষণ বোর্ডের অনুমতি নিয়ে আরো একটু উচ্চমাত্রার ডোজ প্রয়োগ করা হবে। বেশির ভাগ অংশগ্রহণকারীকে সংক্রমিত করতে পারে এমন একটি ডোজ শনাক্ত না করা পর্যন্ত গবেষকরা কাজের পুনরাবৃত্তি করবেন। 

নিউ জার্সির রাটজার্স বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োইথিসিস্ট নীর ইয়েল বলেন, তবে উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে অনেকে ঝুঁকির বিষয়েটি বিবেচনা না করে অর্থের জন্য ট্রায়ালে অংশ নেবে। তবে চ্যালেঞ্জ ট্রায়াল নিরাপদে নৈতিকভাবেও চালানো যেতে পারে। এজন্য অংশগ্রহণকারীদের আগে ঝুঁকিগুলো বোঝার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।

নেচার জার্নাল

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন