রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানির শেয়ার পুনঃক্রয়ের পরিকল্পনা মোদি প্রশাসনের

বণিক বার্তা ডেস্ক

নভেল করোনাভাইরাস মহামারীর প্রভাব থেকে অর্থনীতিকে বাঁচাতে বিপুল অংকের প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে ভারত সরকার। কিন্তু এই অর্থের জোগান দিতে গিয়ে রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রশাসনকে। করোনা সহায়তা তহবিলের অর্থ জোগাড়ে চলতি অর্থবছরে লাখ ১০ হাজার কোটি রুপির রাষ্ট্রীয় সম্পদ বিক্রির পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। কিন্তু এখন পর্যন্ত পরিকল্পনাটি বাস্তবায়নে অগ্রগতি সামান্যই। অবস্থায় রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানিগুলোকে শেয়ার পুনঃক্রয়ের নির্দেশ দেয়ার কথা ভাবছে মোদি প্রশাসন। খবর ব্লুমবার্গ।

ওয়াকিবহাল একটি সূত্র বলছে, মোট আটটি কোম্পানিকে শেয়ার পুনঃক্রয়ের নির্দেশ দেয়া হতে পারে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে কোল ইন্ডিয়া লিমিটেড, এনটিপিসি লিমিটেড, এনএমডিসি লিমিটেড, এমওআইএল লিমিটেড, কেওআইসিএল লিমিটেড, ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্ডিয়া লিমিটেড।

রাষ্ট্রায়ত্ত এসব কোম্পানির সিংহভাগ শেয়ারের মালিক সরকার। ফলে কোম্পানিগুলো শেয়ার পুনঃক্রয় করলে সরকারের হাতে কিছু নগদ অর্থ আসবে। ৩১ মার্চ পর্যন্ত আট কোম্পানিতে সরকারের মোট বিনিয়োগের পরিমাণ ছিল ৪০ হাজার কোটি রুপির (৫৫০ কোটি ডলার) বেশি।

অর্থনীতি বাঁচাতে লাখ ৭০ হাজার কোটি রুপির ( হাজার ২৫০ কোটি ডলার) প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে সরকার। বিপুল পরিমাণ অর্থসংস্থানের জন্য কর রাজস্ব সরকারি সম্পদ বিক্রিকে প্রধান উৎস হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছিল। কিন্তু করোনা মহামারীর কারণে ব্যবসা-বাণিজ্য মানুষের আয় কমে গেছে। ফলে কর বাবদ সরকারের রাজস্ব আহরণও অনেক কমে গেছে। সেক্ষেত্রে মোদি প্রশাসনের সামনে আর একটি পথই খোলা রয়েছেসরকারি সম্পদ বিক্রি। কিন্তু কার্যক্রমেও অগ্রগতি ভালো নয়। এপ্রিল থেকে এখন পর্যন্ত মোট লাখ ১০ হাজার কোটি রুপি লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে মাত্র শতাংশ অর্থ সংগ্রহ করতে পেরেছে সরকার।

সরকারি ব্যয় আয়ের এই বিপরীত দশার কারণে চলতি হিসাব বছরে ভারতে বড় ধরনের বাজেট ঘাটতি তৈরি হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। আলোচ্য সময়ের জন্য জিডিপির দশমিক শতাংশ বাজেট ঘাটতির প্রাক্কলন করা হলেও বাস্তবে তা দ্বিগুণের বেশিতে গিয়ে দাঁড়াতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

গত সপ্তাহে এক সাক্ষাত্কারে ভারতের ডিসইনভেস্টমেন্ট সেক্রেটারি তুহিন কান্ত পান্ডে জানিয়েছিলেন, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে তহবিল সংগ্রহের পরিকল্পনা নিয়ে কীভাবে এগোনো যায়, সে বিষয়ে কাজ করছে অর্থ মন্ত্রণালয়। এক্ষেত্রে যেসব কোম্পানির কাছে অতিরিক্ত অর্থ রয়েছে, তাদের শেয়ার পুনঃক্রয়ের ব্যাপারে উৎসাহিত করা হচ্ছে। তবে অবশ্যই কোম্পানিগুলোর মূলধনি ব্যয় প্রয়োজনীয়তা মেটানোর পর তারা শেয়ার পুনঃক্রয় করবে।

২০২০-২১ অর্থবছরে ভারতের অর্থনীতিতে প্রায় ১০ শতাংশ সংকোচন দেখা যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। অবস্থায় অর্থনীতিকে টেনে তুলতে রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানিগুলোকে মূলধনি ব্যয় বাড়ানোর জন্য চাপ দিয়ে আসছে মোদি প্রশাসন।

সোমবার বেসরকারি খাতের কোম্পানিগুলোর সঙ্গে এক বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ বলেছেন, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানিগুলোর মূলধনি ব্যয় একটি গুরুত্বপূর্ণ চালিকাশক্তি। চলতি বছরের পাশাপাশি আগামী বছরও ব্যয় গতিশীল রাখা প্রয়োজন। অর্থমন্ত্রীর বরাত দিয়ে প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরো এক বিবৃতিতে একথা জানিয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন