কভিডের ওষুধ নিয়ে গবেষণা ‘হাইপ’ ও গালগল্প দিয়ে প্রভাবিত!

বণিক বার্তা ডেস্ক

তথ্যের পর্যাপ্ততা এবং সামাজিক মূল্য চেয়ে কভিড-১৯-এর সম্ভাব্য চিকিৎসার জন্য ব্যবহূত পুরনো নতুন ওষুধ বিষয়ে গবেষণার ভিত্তি মূলত হাইপ গালগল্প সম্প্রতি ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালের এক বিশ্লেষণে এমনটাই উঠে এসেছে।

ছয়জন গবেষক মিলে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছেন। যার শিরোনাম হচ্ছে, প্রডিউসিং অ্যান্ড ইউজিং টাইমলি কম্পারেটিভ এভিডেন্স অন ড্রাগ: লেসনস ফ্রম ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালস ফর কভিড-১৯ এটি প্রকাশিত হয়েছে গত শুক্রবার, যেখানে হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইনকে দেখানো হয়েছে হাইপ বা অতিরঞ্জিত গবেষণার উদাহরণ হিসেবে। হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন হচ্ছে ম্যালেরিয়া প্রতিরোধী ওষুধ, যা মহামারীর শুরুর দিকে কভিড-১৯-এর চিকিৎসার অংশ হিসেবে ব্যবহূত হয়। কিন্তু বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বহু দেশীয় সংহতিমূলক একটি ট্রায়ালে দেখা গেছে, ভাইরাসের বিরুদ্ধে ওষুধটি অকার্যকর।

গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন নিয়ে গবেষণাটি তথ্যবহুলতা সামাজিক মূল্য চেয়ে অংশত হাইপ গালগল্প দ্বারা বেশি প্রভাবিত হয়েছে। যেখানে উপলব্ধ তথ্যগুলো পক্ষপাতিত্বমূলভাবে বদলে দেয়া হয়েছে। বিএমজের বিশ্লেষণে আরো বলা হয়, অসামঞ্জস্যপূর্ণভাবে ব্যাপকসংখ্যক গবেষণা শুরু হয়েছে অ্যান্টিম্যালেরিয়াল ওষুধ হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন ক্লোরোকুইন পোসফেটকেকে ঘিরে, এটি শুরু হয় একটি বিতর্কিত অনিয়ন্ত্রিত গবেষণা উল্লেখযোগ্যভাবে মনোযোগ পাওয়ার পর। 

ফরাসি গবেষকদের সেই গবেষণায় মাত্র ৩২ জন রোগীর নমুনা ব্যবহার করা হয়। এরপর সিদ্ধান্তে আসা হয় যে হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন উল্লেখযোগ্যভাবে ভাইরাসের পরিমাণ কমিয়ে দেয়। গবেষণা মোটেই এলোমেলো বাছাইয়ের ভিত্তিতে ছিল না এবং পরে যার ফলাফল প্রত্যাখ্যাত হয় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ট্রায়ালে। বিএমজের গবেষকরা বলেন, ক্লিনিক্যালট্রায়ালসডটগভের নিবন্ধিত প্রতি ছয়টি গবেষণার একটির মনোযোগ হচ্ছে অ্যান্টিম্যালেরিয়াল এজেন্ট।

প্রমাণভিত্তিক গবেষণার ত্রুটি সামনে এনেছে কভিড

গবেষক দলের মতে, কভিড-১৯-এর ওষুধের গবেষণা সামনে এনেছে বর্তমান প্রামাণিক ইকোসিস্টেমের গুরুত্বপূর্ণ ত্রুটি ব্যর্থতাকে। অনেকগুলো গবেষণা, বিশ্লেষণ সংবাদ প্রতিবেদনকে সামনে এনে তারা বলছেন, কভিড-১৯-এর প্রাদুর্ভাবের শুরু থেকে চিকিৎসার বিকল্পগুলোকে ঘিরে ব্যাপক আকারের গবেষণা চলমান থাকলেও এখন পর্যন্ত তার সাফল্য বেশ শ্লথ। তারা বলেন, বেশ কয়েকটি বড় মাল্টি আর্ম ট্রায়াল সত্ত্বেও সম্ভাব্য ওষুধের বিকল্পগুলোর তুলনামূলক কার্যকারিতার প্রমাণ পেতে বিলম্ব হচ্ছে। গবেষকরা কভিড-১৯-এর জন্য পুনর্নির্ধারিত বা তদন্তাধীন থাকা ওষুধের মূল্যায়নে সিস্টেমের সীমাবদ্ধতাগুলোও তুলে ধরেছেন।

কী করতে হবে?

গবেষকদের মতে, মহামারী সামনে এনেছে ট্রায়ালিস্ট, মেটা-বিশ্লেষক, পথনির্দেশনা বিকাশকারী, রেগুলেটরি এজেন্সি, স্বাস্থ্য প্রযুক্তি মূল্যায়ন সংস্থা বিনিয়োগকারীদের মাঝে নতুন সহযোগিতা সৃষ্টির গুরুত্বকে। তাদের মতে, এভাবেই প্রমাণভিত্তিক নতুন চিকিৎসার উন্নতি ঘটানো যেতে পারে। তবে ডাটা ভাগাভাগি করা যেখানে ট্রায়াল শেষ হওয়ার পর সাধারণ ব্যাপার, বিশ্লেষণ বলছে সেটিও এখনো স্বাভাবিক বলে দেখাচ্ছে না। তবে বিশ্লেষণটি বলছে, সময়মতো ডাটা পাওয়া গেলে তা বিস্তৃতভাবে সুবিধা নিয়ে আসতে পারে।

দ্য প্রিন্ট

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন