ভিসা ও মাস্টারকার্ডের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত ফি নেয়ার অভিযোগ

বণিক বার্তা ডেস্ক

নভেল করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে অতিরিক্ত ফি নেয়ার মাধ্যমে নগদ অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে ভিসা মাস্টারকার্ড। এমনই অভিযোগ করছে যুক্তরাজ্যের রিটেইল প্রতিষ্ঠানগুলো। খবর বিবিসি।

ব্রিটিশ রিটেইল প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, গত দুই বছরে লেনদেনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর ফি প্রায় দ্বিগুণ বেড়েছে। এতে যে গ্রাহকদের ওপর অতিরিক্ত খরচের বোঝা চাপিয়ে দিতে হচ্ছে, সেদিকে ইঙ্গিত করেন তারা। এরই মধ্যে আরো দুঃসংবাদ হলো, ক্রেডিট কার্ডের বিল বছরে আরো ৪০ পাউন্ড বেড়েছে।

ব্রিটিশ রিটেইল কনসোর্টিয়ামের (বিআরসি) ফিন্যান্স পলিসির প্রধান অ্যান্ড্রু ক্রেগান বলেন, ক্রেডিট কার্ডের পেছনে এই অতিরিক্ত ব্যয় মোকাবেলায় সরকারের যথাযথ পদক্ষেপ নেয়া উচিত। বিবিসিকে তিনি আরো বলেন, যদি কোনো ফোন বা জ্বালানি কোম্পানি পরিমাণে তাদের ফি বাড়াত তাহলে এতদিনে শোরগোল বেধে যেত। বাজারে নিজেদের শক্তিশালী অবস্থানের অপব্যবহার করছে কোম্পানিগুলো। তারা বিশ্বের সবচেয়ে লাভজনক কোম্পানির দুটি কিন্তু তারা ব্যবসায়ীদের মাথায় যেন বন্দুক ধরে রেখেছে।

কার্ডের বিভিন্ন প্যাকেজ তদন্তের জন্য যুক্তরাজ্যের বাজার তদারকি প্রতিষ্ঠান কম্পিটিশন অ্যান্ড মার্কেটস অথরিটির (সিএমএ) কাছে আবেদন জানিয়েছে বিআরসি।

ভিসার এক মুখপাত্র জানান, পুরো যুক্তরাজ্যে লাখ লাখ ব্যবসায়ীকে ডিজিটাল পেমেন্টের সুবিধা দিতে সক্ষম করেছে ভিসা। এর মাধ্যমে স্থানীয় বৈশ্বিক শতকোটি গ্রাহকের কাছে পৌঁছতে পেরেছে তারা। বিশ্বের যেকোনো জায়গা থেকে যুক্তরাজ্যের গ্রাহকরা অধিক নিরাপদ অভিনব উপায়ে লেনদেন করতে সক্ষম হচ্ছে।

মাস্টারকার্ডের এক মুখপাত্র বলেন, অপ্রতিদ্বন্দ্বী সুবিধা, নিরাপত্তা সুরক্ষার কারণে গ্রাহকদের কাছে কার্ডভিত্তিক আর্থিক লেনদেন জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। আরো অনেক দোকান ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান প্রথমবারের মতো নতুন স্পর্শহীন বা ডিজিটাল ফরমেটে লেনদেন করতে যাচ্ছে। ফলে তাদের ব্যবসায় লক্ষণীয় গতি এসেছে।

কার্ডের ফি বৃদ্ধি মোকাবেলায় পদক্ষেপ নেয়ার দৃঢ় আহ্বান জানিয়েছে খুচরা পরিষেবা খাত। মহামারী সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার জন্য যখন তারা কার্ডে অধিক লেনদেন করেছে, তার সঙ্গে তাদেরকে অতিরিক্ত ফির ভার বহন করতে হয়েছে।

সর্বশেষ পেমেন্টস সার্ভেতে বিআরসি বলেছিল, কার্ড ব্যবহারে সুস্থ প্রতিযোগিতার নীতি কার্যকর হচ্ছে না এবং দুটি কোম্পানিই ৯৮ শতাংশ কার্ড লেনদেনের নিয়ন্ত্রণ গ্রহণের মাধ্যমে একচেটিয়া ব্যবসা করে যাচ্ছে।

বিআরসি বলছে২০১৩ সালে স্কিম ফি ৩৯ শতাংশ এবং ২০১৮ সালে ৫৬ শতাংশ বৃদ্ধিতে এটি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে যে তারা বাজারে শক্ত অবস্থানের অপব্যবহার করছে। 

বিআরসি আরো জানায়, খুচরা বিক্রেতাদের নগদ লেনদেনের গড় ব্যয় ছিল মাত্র দশমিক ৪২ পাউন্ড। ডেবিট কার্ডের মাধ্যমে অর্থ গ্রহণের জন্য খুচরা বিক্রেতাদের দশমিক ৮৮ পাউন্ড খরচ হয়েছে। অন্যদিকে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারে তাদের ব্যয় হয়েছে ১৮ দশমিক পাউন্ড।

যুক্তরাজ্যের পরিষেবা খাতের পাবলিক অ্যাফেয়ার্সবিষয়ক পরিচালক ডেভিড শিন বলেন, গত কয়েক মাসের ঘটনাবলির কারণে পরিষেবা খাতে কার্ডের মাধ্যমে অর্থ লেনদেন বেড়েছে। এখন অনেকেই নিরাপত্তার কারণে নগদ অর্থ গ্রহণ করেন না। কিন্তু অতিরিক্ত ফি থেকে খাতকে রক্ষা করা দরকার।

ব্রিটিশ ইনডিপেনডেন্ট রিটেইলার্স অ্যাসোসিয়েশনের বাণিজ্যিক পরিচালক জেফ মুডি বলেন, আর্থিক লেনদেনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে দরকষাকষির সুযোগ বঞ্চিত হওয়ায় স্থানীয় দোকানগুলো অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বৃহৎ জাতীয় পর্যায়ের প্রতিষ্ঠানগুলো যেখানে ভিসা মাস্টারকার্ডের সঙ্গে আলাদা করে চুক্তি করতে পারছে, ছোট ছোট খুচরা বিক্রেতা তা পারছে না।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন