হরিণের প্লাস্টিক খাওয়া বন্ধ করতে জাপানে বিশেষ ব্যাগ

বণিক বার্তা অনলাইন

জাপানের উত্তরাঞ্চলের ছোট শহর নারা। এ শহরটির খ্যাতি এখন মুক্তভাবে চরে বেড়ানো সহস্রাধিক হরিণ। হরিণগুলো কয়েক দশক ধরে জাতীয় সম্পদ হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। মাউন্ট ওয়াকাকুসার পাদদেশের এই শহরজুড়ে ঘুরে বেড়ায় হরিণগুলো। চতুষ্পদ এই প্রাণিগুলো সংরক্ষণে জাপানে রীতিমতো আইন রয়েছে। তবে তাদের দেখতে ভিড় করা কিছু পর্যটক শহরটিতে সম্ভবত মারাত্মক প্লাস্টিকের বর্জ্য ফেলে যান। আর এটা হরিণগুলোর অস্তিত্বের সংকট তৈরি করেছে।

গত বছর একটি মৃত হরিণের পেটে ৪ কেজি আবর্জনা পাওয়া গিয়েছিল। এই ঘটনার পর স্থানীয় একদল উদ্যোক্তা সমাধান বের করে ফেলেন। হরিণ হজম করতে পারে- এমন এ ধরনের ব্যাগ তারা তৈরি করেছেন। 

অবাধে বিচরণ করা নারা পার্কে ১ হাজার ২০০-এরও বেশি হরিণ রয়েছে, যারা আইন দ্বারা সুরক্ষিত। বিশেষভাবে তৈরি চিনি-মুক্ত ক্র্যাকার হরিণগুলোকে খাওয়াতে পারেন পর্যটকরা। এগুলোর অবশ্য প্লাস্টিকের মোড়ক থাকে না। তবে অনেক দর্শণার্থী সম্ভবত হরিণগুলোকে অন্যান্য খাবার দেয়ার জন্য প্লাস্টিকের মোড়ক আনেন। আবার অনেকে প্লাস্টিকের মোড়ক হয়তো রাস্তায় ফেলে যান। খাবারের ঘ্রাণ পেয়ে এই প্লাস্টিকহগুলো খেয়ে ফেলে হরিণেরা। 

হরিণগুলো ভুল করে প্লাস্টিকের মোড়ক খেয়ে মারা যাচ্ছে শুনে শহরটিতে কাগজের কোম্পানি চালানো স্থানীয় বাসিন্দা তাকাশি নাকামুরা হরিণবান্ধব বিশেষ ব্যাগের ধারণা নিয়ে কাজ শুরু করেন।

তিনি বিবিসিকে জানান, হরিণবান্ধব ব্যাগ তৈরিতে তিনি স্থানীয় কসমেটিক ব্যবসায়ী ও ডিজাইনারের সঙ্গে আলাপ করেন। এই যৌথ প্রয়াসে তৈরি হয় বিশেষ ব্যাগ। ফেলে দেয়া দুধের কার্টন ও ধানের তুষ দিয়ে তৈরি করা হয় ব্যাগ। এই উপাদানগুলো হরিণবান্ধব ক্র্যাকারগুলোতে ব্যবহৃত হয়। এরই মধ্যে নগর পর্যটন ব্যুরো, একটি স্থানীয় ব্যাংক ও একটি ফার্মেসিসহ ৬টি স্থানীয় সংস্থার কাছে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার ব্যাগ বিক্রি করা হয়েছে। 

জাপানের নিউজ সাইট আসাহি শিম্বুনের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্যাগটি জাপান ফুড রিসার্চ ল্যাবরেটরিজে পরীক্ষা করা হয়েছিল এবং এটা নিরাপদ হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে। তবে এটিতে একটি বড় সমস্যা হলো ব্যাগটির দাম প্রায় ১০০ ইয়েন (০.৯৫ ডলার); যেখানে একটি প্লাস্টিক ব্যাগের দাম অনেক কম। 

জাপানের সাবেক রাজধানী নারাতে বহু বছর ধরে এই হরিণগুলোর বাস। ১ হাজার ২০০-এরও বেশি হরিণ শহরটিকে তাদের আবাসস্থলে পরিণত করেছে। সারা দিন ঘোরাঘুরি শেষে বেশিরভাগ হরিণই কেন্দ্রীয় নারা পার্কে গিয়ে জড়ো হয়।

সূত্র: বিবিসি

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন