মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন

ধনীদের বিনিয়োগপ্রবণতা বদলাবে বাইডেনের বিজয়

বণিক বার্তা ডেস্ক

নভেম্বরে আসন্ন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেন বিজয়ী হলে দেশটির ধনীদের বিনিয়োগপ্রবণতায় পরিবর্তন আসতে পারে বলে মনে করছে ব্লুমবার্গ। সংবাদমাধ্যমটির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, নির্বাচনে বাইডেন জয়ী হলে ধনী বিনিয়োগকারীরা তাদের পোর্টফোলিও নতুন করে ঢেলে সাজানোর পাশাপাশি বিনিয়োগসংক্রান্ত নতুন দীর্ঘমেয়াদি কৌশল হাতে নিতে বাধ্য হতে পারেন।

এর কারণ সম্পর্কে প্রতিবেদনে বলা হয়, ডেমোক্রেটিক পার্টিতে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী নির্বাচনকালে প্রতিদ্বন্দ্বী এলিজাবেথ ওয়ারেন বার্নি স্যান্ডার্সের প্রস্তাবিত সম্পদ কর পরিকল্পনা প্রত্যাখ্যান করেছিলেন  জো বাইডেন। তবে তিনি যেসব প্রস্তাব দিয়েছেন, সেগুলো বাস্তবায়ন হলে ধনী মার্কিনদের মুনাফার ওপর আরোপিত করের বোঝা কমানো বা এড়ানোর পন্থাগুলো ব্যাহত হবে।

বিষয়ে বাইডেন চলতি বছরের শুরুর দিকে এক বিতর্কে বলেন, এখন থেকে আমাদের শুধু সম্পদ নয়, কাজেরও মূল্যায়ন করতে হবে। তার মতে, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান যে হারে কর পরিশোধ করে, বিলিয়নেয়াররা তার চেয়ে কম হারে মুনাফার ওপর কর পরিশোধ করেন। এটি অন্যায্য।

বাইডেনের বিজয় স্টক মার্কেটে কী ধরনের প্রভাব ফেলতে যাচ্ছে, সে বিষয়ে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে অনেক মতপার্থক্য রয়েছে। তবে তাদের উপদেষ্টাদের মধ্যে মুহূর্তে সবচেয়ে বড় ভাবনার বিষয় হলো, জো বাইডেন ডেমোক্র্যাট নিয়ন্ত্রিত কংগ্রেস ধনীদের দীর্ঘদিন ধরে প্রয়োগ করে আসা কর ফাঁকির কৌশলগুলো ত্যাগ করতে বাধ্য করতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বিনিয়োগ ব্যাংক ব্রাউন ব্রাদার্স হ্যারিম্যানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অ্যালিসন হাচিনসন বলেন, এসব প্রস্তাব বাস্তবায়ন হলে বিনিয়োগ ব্যবস্থাপকদের পোর্টফোলিও ব্যবস্থাপনার কৌশলে পুরোমাত্রায় পরিবর্তন আসবে।

বাইডেনের বিজয়ে ধনী বিনিয়োগকারীদের উদ্বেগের মূল জায়গা দুটি। এর প্রথমটি হলো স্টেপড আপ বেসিস বাতিল করা। দুর্বোধ্য অস্পষ্ট নিয়মের ভিত্তিতে সম্পদের উত্তরাধিকারকে কাজে লাগিয়ে বিনিয়োগকারীরা এতদিন তাদের করযোগ্য মুনাফার পরিমাণ কমিয়ে এনেছেন। বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে নিয়মটি প্রয়োগের মাধ্যমে অনেক ধনী বিনিয়োগকারী পরিবার এরই মধ্যে প্রচুর পরিমাণে কর ফাঁকি দিয়েছে।

দ্বিতীয় উদ্বেগের জায়গাটি হলো মূলধনি মুনাফার করহার এক্ষেত্রে বাইডেনের বিজয়ে বিনিয়োগকারীদের মুনাফার ওপর প্রদেয় করের মাত্রা অনেকখানি বেড়ে যাবে। স্টক বিক্রির ক্ষেত্রে ধনী মার্কিনরা বর্তমানে মুনাফার ওপর ২৩ দশমিক শতাংশ হারে কর পরিশোধ করছেন। এর মধ্যে ২০ শতাংশ মূলধনি মুনাফার নির্ধারিত করহার। বাকি দশমিক শতাংশ পরিশোধ করতে হয় ২০১০ সালের অ্যাফোর্ডেবল কেয়ার অ্যাক্টের আওতায়। অন্যদিকে সাধারণ পেশাজীবীদের আয়ের ওপর কর পরিশোধ করতে হয় ৩৭ শতাংশ। বাইডেন করবৈষম্য দূরীকরণে জোর প্রতিজ্ঞা ব্যক্ত করেছেন। তিনি ক্ষমতায় এলে বিনিয়োগকারীদের মুনাফার ওপর প্রদেয় করহার দাঁড়াতে পারে ৩৯ দশমিক শতাংশে।

অতিরিক্ত কর পরিশোধের আশঙ্কা এবং এটি এড়ানোর পর্যাপ্ত সুযোগের অভাব ধনী মার্কিন বিনিয়োগকারীদের তাদের ইনভেস্টমেন্ট পোর্টফোলিওতে ব্যাপক মাত্রায় পরিবর্তন নিয়ে আসার পাশাপাশি কর ঝুঁকি এড়ানোর নিত্যনতুন পন্থা উদ্ভাবনে বাধ্য করতে পারে বলে মনে করছে ব্লুমবার্গ। সেক্ষেত্রে চলতি বছরের শেষ দিকে এসে প্রচুর পরিমাণে স্টক বিক্রি করে দেয়ার মাধ্যমে আগামী বছরের সম্ভাব্য অতিরিক্ত করের বোঝা এড়ানোর পথও বেছে নিতে পারেন অনেকে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন