ইউরোপ-যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে রেকর্ড সংক্রমণ হলেও মৃতের সংখ্যা কম

বণিক বার্তা ডেস্ক

ইউরোপ যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে দ্বিতীয় বা তৃতীয় ঝড়ের মতো করোনাভাইরাসের সংক্রমণ তীব্র আকার ধারণ করছে। তবে এবারে মৃতের সংখ্যা প্রথম ঝড়ের তুলনায় আনুপাতিক হারে বাড়ছে না। ব্যাপকভাবে পরীক্ষা করার বিষয়টি এখানে একটি কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হচ্ছে। প্রথম ঝড়ের সময়ে কেবল লক্ষণযুক্ত মানুষদের পরীক্ষা করা হলেও এখন লক্ষণহীনসহ বিস্তৃত জনগোষ্ঠীকে পরীক্ষার আওতায় আনা হয়েছে।

মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের এপিডেমিওলজিস্ট জোন জেলনার একটি সাক্ষাত্কারে বলেছিলেন, অতিরিক্ত অনেক সংক্রমণ সম্ভবত কম বয়সীদের মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে, যাদের কোনো লক্ষণ নেই বা হালকা অসুস্থতা রয়েছে। এমন সংক্রমণগুলো আগে চিহ্নিত করা হয়নি। মিশিগানে এমনটাই হচ্ছে।

তবে এটা সময়ের ব্যাপার হতে পারে বলেও জানান তিনি। তিনি বলেন, মৃত্যু হলো সংক্রমণের খুব দীর্ঘ সূচক। বর্তমানে মৃত্যুর ঘটনাগুলো বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ৩০-৪০ দিন আগে অসুস্থ হয়ে পড়া রোগীদের মধ্যে দেখা যাচ্ছে। বর্তমানে সংক্রমণ বৃদ্ধির বিষয়টি নভেম্বর মাসে গিয়ে মৃত্যুর হার বেড়ে যাওয়াকে প্রতিফলিত করতে পারে।

ইউরোপের দেশগুলো যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে নতুন সংক্রমণের ক্ষেত্রে দৈনিক সাপ্তাহিক রেকর্ডগুলো বেড়েই চলেছে। যুক্তরাষ্ট্রে গত ১৪ দিনের গড় দৈনিক সংক্রমণ ২৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং কভিড-১৯ সংক্রমিত হয়ে হাসপাতালে ভর্তির হার বাড়ছে। এক্ষেত্রে মৃত্যুর পরিমাণ শতাংশ বেড়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইও, ইন্ডিয়ানা, নর্থ ডাকোটা, ইলিনয়, নিউ মেক্সিকো, ওয়ামিং, কলোরাডো, সাউথ ডাকোটা, কেনটাকি, ওয়েস্ট ভার্জিনিয়া অঙ্গরাজ্যে আগের সাতদিনের তুলনায় সপ্তাহে আরো বেশি নতুন সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যেও এমনটা হয়েছে, যদিও কম্পিউটার হালনাগাদের কারণে শনিবার সেখানে কোনো নতুন সংক্রমণ শনাক্ত হয়নি।

নিউইয়র্ক টাইমসের ডাটাবেজ অনুযায়ী, গত সপ্তাহে ফ্রান্সে লাখ ১৫ হাজার ৮৯৭টি নতুন সংক্রমণ শনাক্ত এবং ৬১৯ জন মারা গেছে। দেশটির রাজধানী প্যারিস অন্যান্য শহরে কারফিউ আরোপ করা হয়েছে। ইতালিতে শনিবার ১০ হাজার ৯২৫টি নতুন সংক্রমণের রেকর্ড হয়েছে। সংখ্যা গত ১৪ দিনের গড়ের তুলনায় প্রায় তিন গুণ বেশি এবং মারা যাওয়ার সংখ্যা গড়ের তুলনায় সামান্য বৃদ্ধি পেয়ে ৪৭ জনে দাঁড়িয়েছে। সরকার আরো বিধিনিষেধ ঘোষণা করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

পোল্যান্ডের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, শনিবার হাজার ৬২২টি নতুন সংক্রমণ ৮৪ জন মৃতের সংখ্যার সঙ্গে তাদের ভাইরাস পরিসংখ্যান নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। বছরের শেষ নাগাদ লকডাউন বাড়ানো ইউক্রেনে শনিবার হাজার ৪১০টি নতুন সংক্রমণ ১০৯ জনের মৃতুর রেকর্ড প্রকাশিত হয়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, ইউরোপীয় অঞ্চলে মহামারীটি শুরু হওয়ার পর সর্বোচ্চ সাপ্তাহিক সংক্রমণের রেকর্ড হয়েছে। সংস্থার আঞ্চলিক পরিচালক ডা হ্যান্স ক্লুজ একটি বিবৃতিতে বলেন, দৈনিক সংক্রমণ হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যা বেড়েছে, কভিড-১৯ এখন মৃত্যুর পঞ্চম প্রধান কারণ এবং মৃত্যু প্রতিদিন এখন হাজারের সীমায় পৌঁছেছে। তবে এপ্রিলের পিকের চেয়ে বর্তমানে মৃত্যুর সংখ্যা পাঁচ ভাগ কম রয়েছে।

নিউইয়র্ক টাইমস

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন