‘বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে ট্রিলজি নির্মাণের পরিকল্পনা আছে আমার’

রাইসা জান্নাত

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বাঙালি জাতির জন্য একটি শোকবিহ্বল দিন। এদিন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করা হয়। হত্যাকাণ্ডের পর বঙ্গবন্ধুকে সমাহিত করার সময়টুকুতে যা যা ঘটেছিল সেই মর্মান্তিক মুহূর্তগুলোকে ৫৭০ চলচিত্রের মাধ্যমে তুলে আনতে চলেছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত নির্মাতা আশরাফ শিশির ৫৭০ ছবিটির নির্মাণকাজ এখনো চলছে। সম্প্রতি টকিজের মুখোমুখি হয়ে ছবির বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন নির্মাতা

শুটিংয়ের বর্তমান অবস্থা

টুঙ্গিপাড়ার অংশটুকু শেষ করে ফেলেছি। ধানমন্ডি ৩২-এর অংশটুকু শেষের দিকে শুট করা হবে। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে ২৩-২৪ তারিখ পর্যন্ত শুটিং চালিয়ে যাওয়া। এটা করতে পারলে ছবির সিংহভাগ দৃশ্যধারণ শেষ হবে।

ছবি নির্মাণের পরিকল্পনা

যখন স্কুলে পড়তাম প্রতি ১৫ আগস্ট পত্রিকা প্রকাশ করতাম। এটা হয়তো আমার মনের ভেতর প্রোথিত ছিল যে কখনো চলচ্চিত্র নির্মাণ করলে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে করব। আমার প্রতিটি চলচ্চিত্রে মুক্তিযুদ্ধ বঙ্গবন্ধুর কথা চলে আসে। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে সম্পূর্ণ একটি চলচ্চিত্র নির্মাণের কথা প্রায় ১০ বছর ধরে। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে ট্রিলজি নির্মাণের পরিকল্পনা আছে আমার। ৫৭০ হচ্ছে সেই ট্রিলজির শেষ অংশ। শেষ অংশটিই আগে নির্মাণ করছি।


শুটিংয়ের ব্যক্তিগত অনুভূতি

আজ থেকে ৪৫ বছর আগে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি ঘটেছিল। আমরা সেই দৃশ্য চর্মচোখে দেখিনি। দৃশ্যগুলো যখন শুটিং করছি মনে হচ্ছে সেগুলো চোখের সামনে ভেসে উঠছে। একদিকে অপরাধবোধ, দায়বোধ অন্যদিকে বঙ্গবন্ধুর জন্য শ্রদ্ধা-ভালোবাসাসবকিছু একসঙ্গে যখন ফুটে উঠছে তখন শুধু অভিনয়শিল্পীরাই নয়, যারা ক্রু আছেন, যারা শুটিং দেখছেন সবার চোখে জল চলে আসছে। সবাই দৃশ্যগুলো দেখছে এবং অনুভব করছে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে কত বড় অপরাধ করা হয়েছে।

ছবিটি নিয়ে প্রত্যাশা

৫৭০ চলচ্চিত্রটি বোধ, দায়মুক্তি শ্রদ্ধার জায়গা থেকে নির্মাণ করছি। আমি একজন নির্মাতা। আমার উচিত পরের প্রজন্মের সামনে ইতিহাস তুলে ধরা। আমি আসলে বঙ্গবন্ধুকে ভিজুয়ালি দেখাতে চাই। আমাদের দেশে এখনো সেই শূন্যতা রয়ে গেছে। যদি ঠিকভাবে দেখাতে পারি তাতেই আমার প্রত্যাশা পূরণ হয়ে যাবে।


অভিনয়শিল্পীদের কাজের মূল্যায়ন

এটা একটা পিরিয়ডিক ছবি। সেই সময়টাকে ধরতে অনেক কিছু করতে হবে। অপর্যাপ্ত বাজেট নিয়ে একটা দুঃখবোধ ছিল। কিন্তু দুখঃবোধে আমাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন শিল্পী-কলাকুশলীরা। তারা কেবল অর্থের সম্মানের জন্য কাজ করছেন না। প্রত্যেকের ভেতরে বঙ্গবন্ধুকে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদনের ভাবনাটি দেখেছি।

করোনাকালের শুটিং

আমরা কাগজ-কলমে পরিকল্পনা করে, প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সবকিছু জোগাড় করে শুটিংয়ে নেমেছি। এসব দেখাশোনার জন্য আলাদা লোকও নিয়োগ করা হয়েছে। শুটিংয়ের সময় সবার তাপমাত্রা মাপা হচ্ছে। সবাই স্যানিটাইজার ব্যবহার করছে। কিন্তু যেহেতু ৩০০-৪০০ লোক একসঙ্গে কাজ করছে তাই খারাপ কিছু ঘটার আশঙ্কা থেকেই যায়। তবে আমরা সচেতনতার বিষয়টি মাথায় রাখছি। এখন পর্যন্ত সবাই সুস্থ আছি।

ছবি মুক্তি নিয়ে ভাবনা

আমাদের উদ্দেশ্য ছিল বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর সময়ে ছবিটিকে প্রেক্ষাগৃহে নিয়ে আসার। আমি ২০১৮ সালের আগস্টে বিষয়ে ঘোষণা দিয়েছিলাম। কিন্তু বিভিন্ন কারণে কাজ শুরু হতে দেরি হলো। এর মধ্যে আবার কভিড চলে এল। আমরা এখনো মনেপ্রাণে চাইছি আগামী ১৭ মার্চ ছবিটি মুক্তি দেয়ার।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন