রানীমা ইলা মিত্রের জন্মদিন ও কিছু কথা

মোহা. মোস্তাক হোসেন

তেভাগা আন্দোলনের নেত্রী ইলা মিত্র। তিনি একাধারে যেমন একজন ক্রীড়াবিদ, তেমনি নারী আন্দোলনের পথিকৃৎ। তিনি নির্যাতিত ও নিপীড়িত মানুষের জন্যও ছিলেন নিবেদিতপ্রাণ। তিনি শোষিত-বঞ্চিত ও নির্যাতনের শিকার কৃষক সমাজের কল্যাণে, তাদের ন্যায্য অধিকার আদায়ে আত্মনিয়োগ করেছিলেন। সেই সময় কৃষক আন্দোলনে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার নাচোলের কৃষিজীবী ও ভাগচাষী কৃষকশ্রেণির অধিকার প্রতিষ্ঠার অগ্রদূত ইলা মিত্র জীবনবাজি রেখে কৃষক সমাজের উন্নয়নে একাত্মতা ঘোষণা করে আন্দোলন চালিয়ে গেছেন।

তিনি কৃষকদের জমিদার-জোতদার-মহাজনদের হাত থেকে মুক্তির জন্য ‘তেভাগা আন্দোলন’-এ সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন। কৃষকদের সাথে থেকে তাদের পথদর্শক হয়ে নির্যাতিত কৃষকদের অধিকার প্রতিষ্ঠার প্রত্যয় নিয়ে আন্দোলন পরিচালনা করতে গিয়ে তাকে ভোগ করতে হয় অবর্ণনীয় নির্যাতন। এই অসামান্য অবদানের জন্য তিনি নাচোলবাসীর হৃদয়ের মণিকোঠায় হয়ে উঠেছিলেন ‘রানীমা’। আজ ১৮ অক্টোবর সেই মহীয়সী নারী, শোষণের বিরুদ্ধে দুর্বার, নাচোলের তেভাগা আন্দোলনের ভূমির বলিষ্ঠ ও গ্রামীণ নারী জাগরণের কাণ্ডারি নাচোলের রানীমা ‘ইলা মিত্র’র শুভ জন্মদিন। তার ৯৬তম জন্মদিনে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি।

১৯২৫ সালের ১৮ অক্টোবর কলকাতায় ব্রিটিশ সরকারের বাংলার অ্যাকাউন্টেন্ট জেলারেল নগেন্দ্রনাথ সেনের পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন ইলা সেন। তাদের আদিনিবাস ঝিনাইদহের বাগুটিয়া গ্রামে। বাবার চাকরির সুবাদে তার বেড়ে ওঠা কলকাতা শহরে। শিক্ষাজীবন বেথুন স্কুল ও বেথুন কলেজে। বেথুন কলেজ হতে ১৯৪৪ সালে বিএ ডিগ্রি অর্জন করেন। কৈশোরে তিনি খেলাধুলায় পারদর্শী ছিলেন। ১৯৩৫-৩৮ সালে রাজ্য জুনিয়র অ্যাথলেটিক চ্যাম্পিয়ন এবং ১৯৪০ সালে জাপানে অনুষ্ঠিত অলিম্পিকে প্রথম বাঙালি মেয়ে হিসেবে নির্বাচিত হন। কিন্তু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণে অলিম্পিক আসরটি বাতিল হয়ে যায়। এছাড়াও তিনি ১৯৪৩ সালে হিন্দু কোড বিলের বিরুদ্ধে মহিলা সমিতির একজন সক্রিয় সদস্য হিসেবে আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন। পরবর্তীতে ১৯৪৫ সালে মালদহের নবাবগঞ্জ থানার রামচন্দ্রপুরহাটের জমিদার মহিমচন্দ্র মিত্রের ছোট ছেলে রমেন মিত্রের সাথে বিয়ে হওয়ার পর ইলা সেনের নাম ‘ইলা মিত্র’ হয়। স্বামীর উৎসাহে ও সাহচার্যে তিনি কৃষক অধিকার আন্দোলনে নিজেকে যুক্ত করেন।

কৃষকশ্রেণি শোষণ ও নিপীড়নের হাত হতে রক্ষা পেতে কৃষিজীবীরা জীবনবাজি দিয়ে কৃষি অধিকারের দাবিতে সামন্তবাদের বিরুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। সেই লড়াই ছিল কৃষকদের ন্যায্যতার ‘আধিয়ার ও তেভাগা অন্দোলন’। যার সূত্রপাত একদিনে হয়নি। ব্রিটিশ শাসনামলের পূর্বে বাংলার তথা ভরতবর্ষের কৃষকসমাজ সারা বছর কঠোর পরিশ্রমের পর গোলায় ধান তোলে আনন্দভরে দিনাতিপাত করত। অর্থলোলুপ ধনবাদী ইংরেজ ভারতবর্ষের জনগণকে বিভিন্নভাবে শোষণ করে তাদের সাম্রাজ্য বিস্তার করতে থাকে। এতে এই উপমহাদেশের কৃষিজীবী সম্প্রদায় সবচেয়ে বেশি শোষিত হয়েছে। কারণ ভারতবর্ষ কৃষিনির্ভর অঞ্চল। এখানকার অর্থোপার্জন ও জীবনযাপন কৃষির ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু ইংরেজরা তাদের স্বার্থ চরিতার্থে ও খাজনা আদায়ের উদ্দেশ্যে সামন্তবাদের উদ্ভব ঘটায়। যেন দ্বিতীয়পক্ষের মাধ্যমে রাজকর দ্রুত পেতে এবং সাম্রাজ্যবাদ কায়েমে কোন বিশৃঙ্খলায় পড়তে না হয়।

সামন্তবাদের প্রভাবে জমিদার-জোতদারের রাজত্ব প্রতিষ্ঠিত হয় এই উপমহাদেশে। জমিদারি-জোতদারি পরিচালনার জন্য গঠন করা হয় লাঠিয়াল বাহিনী। জমিদাররা ইংরেজদের রাজকর পরিশোধ ছাড়াও অন্যান্য খরচসহ ও ভোগ-বিলাসিতা ব্যয় সংকুলানের উদ্দেশ্যে কৃষক প্রজাদের ওপর আবওয়াব বা অতিরিক্ত কর ধার্য করত। ভারতে সামন্তবাদ চালু হবার পর কৃষককুলের ওপর বিভিন্ন কায়দায় শোষণ, জুলুম ও নির্যাতন করত জমিদাররা। নির্যাতনের ধরন ছিল- আধি প্রথা, ধানুয়া খাজনা বা টংক প্রথা, নানকার বা গোলামি প্রথা, মহাজনি প্রথা, তোলা (৫ সের চালে ১ সের বা তারও বেশি পরিমাণ চাল), লেখাই (গরুপ্রতি ২ টাকা, মহিষ প্রতি ৪ টাকা) ইত্যাদি। সেই সময় ধান মাড়াইয়ের জন্য কৃষকরা ধান কেটে জমিদারের গোলায় নিয়ে জমা করত এবং ধান মাড়াই শেষে কৃষকদের কাছ থেকে খাজনা ছাড়াও অতিরিক্ত কর আদায় করার পর কৃষকাদের হাতে যে যৎসামান্য ফসল দেয়া হতো, তা দিয়ে মাস তিনেক চলত। বাকি সময় চলার জন্য কৃষকদের ধারকর্যের ওপর ভরসা করে থাকতে হতো। এমন পরিস্থিতিতে সামন্তবাদী জমিদারি-জোতদারি প্রথার পাশাপাশি মধ্যস্বত্বভোগী মহাজনি প্রথার উদ্ভব হয়, যার দরুণ কৃষককুল নিঃস্ব হতে লাগল।

এ অবস্থা হতে পরিত্রাণের জন্য ভারতের আনাচে-কানাচে কৃষক বিদ্রোহ হয়েছে। বিদ্রোহগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ১৮৩০-৩১ সালের তিতুমীরের ২৪ পরগণার বারাসাতের ওয়াহাবী কৃষক বিদ্রোহ, ১৮৩৭-৮২ সালে ময়মনসিংহের গারো বিদ্রোহ, ১৮৩৮-৪৮ সালে দুদু মিয়ার নেতৃত্বে ফরিদপুরে ফরাজী কৃষক বিদ্রোহ, ১৮৫৫-৫৬ সালে সাঁওতাল কৃষক বিদ্রোহ, ১৮৬০ সালে নীলচাষীদের বিদ্রোহ, ১৮৮৯ সালে যশোরের নীল বিদ্রোহ। এই বিদ্রোহগুলো বিচ্ছিন্নভাবে ভিন্ন ভিন্ন অঞ্চলে হয়ে থাকলেও জমিদার-জোতদারদের বিরুদ্ধে কৃষক বিদ্রোহগুলো ছিল শোষণের হাত থেকে মুক্তি পাবার মূলমন্ত্র, যা একই সূত্রে গাঁথা (তেভাগা সংগ্রাম, ৪০তম বর্ষপূর্তি স্মারকগ্রন্থ, পৃষ্ঠা- ১০)। এরই ধারাবাহিকতায় জমিদারি-জোতদারি-মহাজনি শোষণ ও নির্যাতনের জাঁতাকলে নিস্পেষিত হওয়া থেকে পরিত্রাণ পেতে কৃষকরা একত্রিত হয়ে তেভাগা আন্দোলনের সূত্রপাত ঘটায়। 

সকল জাতি-ধর্মের কৃষকের শোষণের মুক্তির তেভাগা আন্দোলন ১৯৪৬-৫০ সাল পর্যন্ত চলমান থাকে। কৃষকদের মুক্তির এই আন্দোলনে ১৯৪৭ সালে ৪ জানুয়ারি দিনাজপুরের চিরিরবন্দরে পুলিশের গুলিতে সমিরুদ্দীন নিহত হন। সমিরুদ্দীনকে যে পুলিশ গুলি ছুড়ে মেরে ফেলে, শিবরাম মাঝির নিক্ষিপ্ত তীরে সেই পুলিশ মারা যায়। তখনই অন্য পুলিশের গুলিতে শিবরাম মাঝিও মৃত্যুবরণ করেন। সমিরুদ্দীন-শিবরাম শহীদ হওয়ার পর আন্দোলনটি আরো বেগবান হয়ে উঠে।

তেভাগা আন্দোলনের নারী নেত্রীর কথা বলতে হলে ইলা মিত্রের নাম আসবে সবার আগে। এই মহীয়সী নারী ও গ্রামীণ নারী জাগরণের কাণ্ডারি এই আন্দোলনে যুক্ত হন ১৯৪৮ সালে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার নাচোলে। তিনি প্রথম সন্তান প্রসবের পর তার শাশুড়ির তত্ত্বাবধানে রেখে আন্দোলনে যোগ দিতে নাচোলে যান। সেসময় ইলা মিত্রের নির্দেশে ফসলের এক-তৃতীয়াংশ এবং তিন আড়ির পরিবর্তে সাত আড়ি ফসল ভাগচাষিদের পাবার বিষয়টি চালু হয় (নাচোলে ইলামিত্র, ৫০ বছর পূর্তির স্মরণিকা, পৃষ্ঠা- ০৩)। প্রথমত ইলা মিত্রকে কৃষকরা বিশ্বাস করতো না; কারণ মিত্র দম্পতি জমিদার। পরবর্তী সময়ে তিনি মিশে যান কৃষক-মজুরের সাথে। পাশাপাশি সাঁওতালদের চালচলন, ভাষা শিখে, তাদের সাথে থেকে-খেয়ে আন্দোলন চলমান রেখেছিলেন ইলা মিত্র। নাচোলে চলমান কৃষকদের তেভাগা আন্দোলনের সামনের সারিতে ছিল সাঁওতালরা। ধীরে ধীরে নাচোলের কৃষকরা মিত্র দম্পতিকে বিশ্বাস করতে লাগল। শুধু বিশ্বাস করা নয়, তারা তেভাগা আন্দোলনের মহীয়সী নেত্রী ইলা মিত্রকে শ্রদ্ধাভরে ডাকতে লাগল ‘রানীমা’ বলে। তিনি হয়ে উঠলেন নাচোলের রানীমা।


তেভাগা আন্দোলন যখন একেবারে তুঙ্গে, সেই সময় জমিদার-জোতদারদের শোষণের কার্যক্রম ঠিক রাখতে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর পুলিশ বাহিনীর সদস্য তিনজন কনস্টেবল ও একজন দারোগা আন্দোলন নস্যাৎ করার জন্য ১৯৫০ সালের ৫ জানুয়ারি নাচোলের চণ্ডিপুর-কেন্দুয়া অঞ্চলে যায়। ভয়ভীতি দেখাতে গুলি ছুড়ে, কিন্তু সেই পুলিশদল বুঝতে পারেনি আন্দোলনরত কৃষকরা সংঘবদ্ধ রয়েছে। পুলিশের ছোড়া গুলিতে জনৈক সাঁওতাল ভাগচাষী নিহত হলে সাথে সাথে চারদিক থেকে মাতলা মাঝির নেতৃত্বে থাকা সাঁওতাল কৃষকরা তীর নিক্ষেপ করা শুরু করলে পুলিশের দারোগাসহ তিন কনস্টেবল সেই স্থানেই নিহত হয়। নিহতের খবরটি পুলিশের বহনকারী গরুর গাড়ির চালক লালুনাথ কর্মকার পালিয়ে থানায় জানালে তড়িৎভাবে নবাবগঞ্জ ও রাজশাহী থেকে পুলিশ এসে নাচোলের সাঁওতাল ও ভাগচাষি হিন্দু-মুসলমানদের ওপর পাশবিক অত্যাচার করে। ঘটনার পরপরই রমেন মিত্র ও মাতলা মাঝি কিছু আন্দোলনকারীদের নিয়ে ভারতে চলে যান। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত ১৯৫০ সালের ৭ জানুয়ারি ইলা মিত্র রহনপুর স্টেশনের অদূরে পুলিশের হাতে ধরা পড়েন। 

ইলা মিত্র ধরা পড়ার থেকে নবাবগঞ্জ ও রাজশাহী জেলে থাকা পর্যন্ত অবর্ণনীয় পাশবিক নির্যাতনের শিকার হন। তার ও কৃষকদের ওপর নির্মম নির্যাতনের জন্য আন্দোলন স্তমিত হয়ে পড়লেও শেষমেষ জমিদার-জোতদাররা জুলুম ও শোষণের রাজত্ব টিকিয়ে রাখতে পারেনি। জমিদারের নির্যাতনের দেয়াল ভেঙে কৃষককুলের বিজয় হয় ১৯৫০ সালে জমিদারি প্রথা বিলুপ্তের মাধ্যমে। 

তেভাগা আন্দোলন মূলত কৃষিজীবীদের জমিদারের খেয়াল-খুশির কবল হতে নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার প্রতিবাদ। ইলা মিত্র জমিদার পুত্রবধূ হয়েও মানবিকবোধ থেকে নিজ সন্তানের জন্য মাতৃত্বের কর্তব্যের চেয়ে নিষ্পেষিত নাচোলের কৃষকদের উদ্দেশ্যে সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য ত্যাগ করেন। এই আত্মত্যাগের প্রতিদান হিসেবে নাচোলবাসীর কাছে রয়েছেন ‘রানীমা’ হয়ে। তিনি যেমন তাদের ভালোবেসেছেন, তেমনি তাদের ভালোবাসায়ও রানীমা সিক্ত হয়েছেন। কিন্তু রানীমাকে নিয়ে বাংলাদেশে তেমন একটা চর্চা হয়নি এবং নতুন প্রজন্মকে তার কৃতিত্বের ইতিহাস জানার জগৎ থেকে দূরে রাখা হচ্ছে। অথচ ১৯৫৪ সালে চিকিৎসার জন্য প্যারোলে মুক্তি পেয়ে তিনি পশ্চিমবঙ্গে চলে যান। সুস্থ হয়ে সেখানেই থেকে যান। তার মহান কৃতিত্বের জন্য পশ্চিমবঙ্গের জনগণ তাকে ১৯৬২-১৯৭৮ সাল পর্যন্ত চারবার বিধান সভার সদস্য নির্বাচিত করে।

যদিও আন্দোলনটি অসাম্প্রদায়িক। সকল ধর্মের কৃষিজীবীদের অধিকার প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য নিয়ে আন্দোলনের পথ চলা। তারপরও রাজনৈতিক মোড়কে বেঁধে এই ঐতিহাসিক আত্মত্যাগের চর্চা হয়নি। ইদানিং চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলবাসীর মাঝে ইলা মিত্র চর্চার আশার আলো দেখা যাচ্ছে। এই চর্চা অবশ্যই শুরু হয়েছে তেভাগা আন্দোলনের ৫০ বছর পূর্তির পর অর্থাৎ ১৯৯৬ সালের নভেম্বরে ইলা মিত্রের নাচোলে আগমনের পর থেকে। এই চর্চার গতি কিছুটা ধীর, কিন্তু সম্ভাবনার বার্তা তো শুরু হয়েছে। 

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর হতে নাচোল প্রবেশ দ্বারে উপজেলা পরিষদ কর্তৃক নির্মিত ইলা মিত্রের ম্যুরাল রয়েছে। যা দেখে ‘মহীয়সী নেত্রী ইলা মিত্র ও ঐতিহাসিক তেভাগা আন্দোলন’র ইতিহাস এই উপজেলায় গমন ও প্রস্থানকারীর  মানসপটে ভেসে উঠবে। এছাড়া দর্শনার্থীদের জন্য কেন্দুয়ায় নির্মাণ করা হয়েছে ‘ইলা মিত্র স্মৃতিস্তম্ভ’। এই স্তম্ভটি দেখতে গিয়ে দর্শনার্থীরা রানীমা সম্পর্কে জানতে উদ্বুদ্ধ হবে। সেই আলোচিত কেন্দুয়া অঞ্চলটি পর্যটন উপযোগী করলে রানীমার কর্ম ও নাচোলবাসীর তেভাগা আন্দোলনে সম্পৃক্ততার ইতিহাস চর্চাটি ব্যাপকতা পাবার পাশাপাশি পর্যটন খাতে এই অঞ্চলের প্রসারতা বৃদ্ধি পাবে। ইতিহাস জানার আরো একটি উপাদান হচ্ছে ‘ইলা মিত্র গবেষণাগার ও লাইব্রেরি’। কিন্তু দুঃখের বিষয়, সেই লাইব্রেরিতে ইলা মিত্রের লেখা কোনো বই সংগ্রহে নেই। এই বইগুলো ছাড়াও তাঁর রচিত বিভিন্ন পত্রিকায় লেখাসমূহ ও সাক্ষাৎকার এবং মালেকা বেগমের ‘ইলা মিত্র’, বদরুদ্দীন ওমরের ‘পূর্ব বাংলা ভাষা আন্দোলন ও তৎকালীন রাজনীতি (১ম খণ্ড)’, সৈয়দ আনোয়ার হোসেন ও মুনতাসীর মামুন সম্পাদিত ‘বাংলাদেশে সশস্ত্র প্রতিরোধ আন্দোলন’ ও বাংলা একাডেমিসহ অন্যান্য লেখকের তেভাগা আন্দোলন সংক্রান্ত গ্রন্থগুলো সংগ্রহ রাখলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে ‘ইলা মিত্র ও তেভাগা আন্দোলন’ চর্চার আগ্রহ সৃষ্টি হবে। রানীমার জন্মদিনে রানীমার স্মৃতিবিজড়িত রামচন্দ্রপুরহাটের শ্বশুড়বাড়িটি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে রানীমাকে বাঁচিয়ে রাখতে সংরক্ষণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। 

রানীমার শুভ জন্মদিনে প্রত্যাশা, তার কৃতকর্মের ইতিহাস রক্ষার মাধ্যমে তিনি যেন আমাদের অন্তরে যুগ যুগ ধরে বেঁচে থাকেন।

লেখক: শিক্ষক, চাঁপাইনবাবগঞ্জ
[email protected]


এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন