চিকিৎসকদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী

যেকোনো পরিস্থিতিতে দায়িত্ব ভুলে যাবেন না

নিজস্ব প্রতিবেদক

মানবতার সেবাই একজন চিকিৎসকের প্রথম প্রধান কাজ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, চিকিৎসা একটি মহান পেশা। একজন অসুস্থ মানুষের সেবা করে একজন চিকিৎসক মূলত মানবতার সেবা করেন। সুতরাং আপনি যখন ডাক্তার হবেন আপনার প্রথম প্রধান কাজ হবে মানবতার সেবা করা। আশা করি যেকোনো পরিস্থিতিতে আপনারা আপনাদের দায়িত্ব ভুলে যাবেন না।

গতকাল বাংলাদেশ সোসাইটি অব অ্যানেসথেসিওলজিস্টস আয়োজিত ক্রিটিক্যাল কেয়ার-২০২০ শীর্ষক প্রথম আন্তর্জাতিক -সম্মেলনে চিকিৎসকদের প্রতি আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর ধারণকৃত বক্তব্য প্রকাশ করা হয়।

করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকারের প্রচেষ্টার সঙ্গে চিকিৎসকসহ সব স্বাস্থ্যকর্মীর শ্রম ত্যাগের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের প্রচেষ্টা চিকিৎসকসহ স্বাস্থ্যকর্মীদের কঠোর পরিশ্রমই পারে বাংলাদেশে প্রাণঘাতী নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে। আমাদের সৌভাগ্য বাংলাদেশে করোনা সংক্রমণ মৃত্যুহার দুটোই কম। আশা করি আগামী দিনগুলোতে মহামারীর আরো বিস্তার রোধ করতে আমরা সক্ষম হব।

কভিড-১৯ মোকাবেলায় জরুরি ভিত্তিতে দুই হাজার চিকিৎসক পাঁচ হাজার নার্সসহ মেডিকেল টেকনোলজিস্ট নিয়োগসহ সরকারের নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপ উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। করোনা মহামারী মোকাবেলায় দায়িত্ব পালনকালে অ্যানেসথেসিওলজিস্টসসহ উল্লেখযোগ্য চিকিৎসক করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী তাদের ত্যাগের কথা স্মরণ করেন এবং তাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা স্বজন হারানো পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের স্বাস্থ্যসেবা উন্নত করতে আমার সরকার সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছে। স্বাস্থ্যসেবা পাওয়া মানুষের মৌলিক অধিকার। তাই আমরা শয্যাসংখ্যা বাড়িয়ে, ডাক্তার অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগসহ আধুনিক যন্ত্রপাতি সংযোজনসহ চিকিৎসার সেবা সম্প্র্রসারণ করেছি।

তিনি বলেন, গত কয়েক বছরে আমরা দেশে বেশ কয়েকটি নতুন বিশেষায়িত হাসপাতাল স্থাপন করেছি। আমাদের শক্তিশালী বেসরকারি সেক্টরও চিকিৎসা সেবা প্রদানে এগিয়ে এসেছে। গ্রামের মানুষকে প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা প্রদানে আমরা প্রায় ১৮ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র করেছি। এগুলোতে ৩০ ধরনের ওষুধ বিনা মূল্যে সরবরাহ করছে সরকার।

অ্যানেসথেসিওলজির গুরুত্ব তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সার্জারির আগে, সার্জারি চলাকালে পরে রোগীদের পেরিঅপারেটিভ যত্নের সঙ্গে অ্যানেসথেসিওলজির বিষয়ে সর্বত্রই বিশেষ মনোযোগ বাড়ছে। কারণ এর আওতায় আছে অ্যানেসথেসিয়া, নিবিড় যত্নের ওষুধ, ক্রিটিক্যাল জরুরি ওষুধ ব্যথার ওষুধ। বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়। আমরা তাদের অবদানকে যথাযথভাবে স্বীকৃতি দেব।

সরকারপ্রধান বলেন, সংকটাপন্ন রোগীদের ম্যানেজমেন্টের পাশাপাশি অ্যানেসথেসিওলজিস্টরা অপারেশন থিয়েটারে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। কভিড-১৯ মহামারীতে আমাদের অ্যানেসথেসিওলজিস্টসরা আইসিইউতে এবং আইসিইউর বাইরে কভিড-১৯ রোগী ব্যবস্থাপনায় দুর্দান্ত কাজ করে চলছেন। গুরুতর রোগীদের সেবায় সর্বশেষ জ্ঞান প্রযুক্তি দিয়ে নিজেদের প্রস্তুত রাখতে অ্যানেসথেসিওলজিস্টসদের প্রতি অনুরোধ করেন প্রধানমন্ত্রী।

বাংলাদেশ সোসাইটি অব অ্যানেসথেসিওলজিস্টসের ভূমিকার প্রশংসা করে শেখ হাসিনা বলেন, সোসাইটি কভিড আইসিইউ ব্যবস্থাপনায় জাতীয় নির্দেশিকা প্রস্তুত করতে সহায়তা করেছে। তারা সারা দেশে আইসিইউ সেবা কার্যক্রম সম্প্র্রসারণ করোনা রোগী ব্যবস্থাপনায় আইসিইউ চিকিৎসক স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রশিক্ষণ দিয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন