ভারত সরকারের সঙ্গে প্রায় দেড় দশক ধরে চলা একটি বকেয়া কর মামলায় জয় পেয়েছে ভোডাফোন গ্রুপ পিএলসি। হেগের আন্তর্জাতিক আদালতের রায় মেনে প্রতিষ্ঠানটিকে সালিশি পুরস্কার প্রদানের বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানিয়েছে ভারতের অর্থ মন্ত্রণালয়। খবর ইটি টেলিকম।
গত বৃহস্পতিবার ভারতের অর্থ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়, ভোডাফোন গ্রুপ পিএলসিকে সালিশি পুরস্কার প্রদানের বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। আন্তর্জাতিক আদালতের দেয়া সালিশি রায়ের বিষয়টি তারা খতিয়ে দেখছেন। যথাযথ পর্যালোচনা শেষে এ বিষয়ে পরবর্তী করণীয় ঠিক করা হবে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, বহুজাতিক ব্রিটিশ টেলিকম প্রতিষ্ঠানটির কাছ থেকে বকেয়া কর, সুদ ও জরিমানা বাবদ ৩৭৯ কোটি ডলার দাবি করেছিল ভারতের আয়কর দপ্তর। সম্প্রতি ভারত সরকারের এ দাবি খারিজ করে দিয়েছেন আন্তর্জাতিক সালিশি আদালত। একই সঙ্গে এমন কর দাবিকে অন্যায্য বলে মন্তব্য করেছেন হেগের আন্তর্জাতিক আদালত।
ভারত ও নেদারল্যান্ডসের মধ্যে যে লগ্নিসংক্রান্ত চুক্তি আছে, ভোডাফোনের ওপর কর চাপিয়ে ভারত সরকার তা লঙ্ঘন করেছে বলে রায়ে মন্তব্য করেছেন আন্তর্জাতিক আদালত। যে কারণে ভোডাফোনকে পাঠানো বকেয়ার নোটিস নয়াদিল্লির অবিলম্বে প্রত্যাহার করে নেয়া উচিত বলে আদালত সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। পাশাপাশি আইনি মামলা লড়ার জন্য ক্ষতিপূরণ হিসেবে ভোডাফোনকে ভারত সরকারের ৫৪ লাখ ৭০ হাজার ডলার পরিশোধ করা উচিত বলেও রায়ে উল্লেখ করেছেন হেগের আদালত।
২০০৭ সালে হাচিসন হামপোয়ার কাছ থেকে মোবাইল যোগাযোগ সেবা বিভাগ অধিগ্রহণ করেছিল ভোডাফোন। ১ হাজার ১০০ কোটি ডলারের বিনিময়ে এ হস্তান্তরকে আয় বলে ধরে নিয়ে তার ওপরে কর ধার্য করে ভারতের আয়কর বিভাগ এবং বকেয়া কর ও সুদ দাবি করে সরকার। এর বিরুদ্ধেই আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল ভোডাফোন।
২০১২ সালে কর মামলায় ভারতের সর্বোচ্চ আদালতে জয়ী হয় ভোডাফোন। কিন্তু ওই বছর শেষের দিকে আইন সংশোধন করে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। সংশোধিত আইনে পুরনো লেনদেনের ওপরে কর চাপানোর সুযোগ রাখা হয়। এরপর ভারত সরকারের বিরুদ্ধে ২০১৪ সালের এপ্রিলে আন্তর্জাতিক সালিশি আদালতের দ্বারস্থ হয় ভোডাফোন।