অল-সিনারিও ইন্টেলিজেন্ট কানেক্টিভিটি সলিউশন উন্মোচন করেছে হুয়াওয়ে। সম্প্রতি বেইজিংয়ে ইউএন ব্রডব্যান্ড কমিশন ও হুয়াওয়ে যৌথভাবে আয়োজন করেছে ষষ্ঠ আল্ট্রা ব্রডব্যান্ড ফোরাম (ইউবিবিএফ)। অনলাইনে অনুষ্ঠিত এ ফোরামে বুদ্ধিমত্তার যুগে কানেক্টিভিটি খাত যেসব প্রতিকূলতার সম্মুখীন হচ্ছে এবং এক্ষেত্রে যে সম্ভাবনা রয়েছে, তা নিয়ে ‘ইন্টেলিজেন্ট কানেক্টিভিটি, নিউ ভ্যালু টুগেদার’
প্রতিপাদ্যে চলতি বছর ইউবিবিএফে বিস্তর আলোচনা করা হয়। খবর বিজনেস লাইভমি।
ইউবিবিএফে মূল বক্তব্য প্রদান করেন হুয়াওয়ের নির্বাহী পরিচালক এবং ইনভেস্টমেন্ট রিভিউ বোর্ডের চেয়ারম্যান ডেভিড ওয়্যাং। তিনি হুয়াওয়ের বাসা ও এন্টারপ্রাইজ ক্ষেত্রের জন্য অল-সিনারিও ইন্টেলিজেন্ট কানেক্টিভিটি সমাধান উন্মোচন করেন। এ সমাধানের মাধ্যমে নতুন যুগে প্রবেশ করবে হোম ব্রডব্যান্ড এবং বিভিন্ন খাতে ডিজিটাল রূপান্তর আরো ত্বরান্বিত হবে বলে দাবি করা হয়।
হুয়াওয়ের দাবি, অল-সিনারিও ইন্টেলিজেন্ট কানেক্টিভিটি সলিউশন কানেক্টিভিটি খাতে পাঁচ পরিবর্তন আনবে। বুদ্ধিমত্তার যুগে প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গে ব্যক্তি, বাসা ও এন্টারপ্রাইজগুলোর আগের চেয়েও বেশি কানেক্টিভিটি প্রয়োজন দেখা দিচ্ছে। এক্ষেত্রে ক্লাউড ও এআইয়ের মতো নতুন প্রযুক্তির কানেক্টিভিটির সঙ্গে সমন্বয় ঘটছে। ফলে কানেক্টিভিটি খাতে নিম্নোক্ত পরিবর্তনের আশা করা হচ্ছে।
প্রথমত, ইন্টেলিজেন্ট টুইনকে কানেক্ট করবে আইওটি ও ইন্টেলিজেন্ট আইওটি। অতীতে আমরা সবাইকে কানেক্ট করতে চেয়েছি। এটা ছিল ইন্টারনেট অব এভরিথিং। নির্বিঘ্ন এআই লাইফ উপভোগে এবং এন্টারপ্রাইজের ইন্টেলিজেন্ট আপগ্রেড করতে আমাদের আরো বেশি বিষয়কে ইন্টেলিজেন্সের সঙ্গে কানেক্ট করতে হবে। ধারণা করা হচ্ছে, ২০৩৫ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাপী সংযোগ সংখ্যা এক ট্রিলিয়নে পৌঁছবে, যা সর্বত্রই কানেক্টিভিটি এবং ইন্টেলিজেন্সের ধারণাকে বাস্তবে পরিণত করবে।
দ্বিতীয়ত, কভিড-১৯ মানুষের হোম ব্রডব্যান্ডের প্রয়োজনীয়তার রূপান্তর ঘটিয়েছে। এন্টারপ্রাইজ ক্ষেত্রে কানেক্টিভিটি শুধু অফিসেই নয়, অফিস ও উৎপাদন উভয় ক্ষেত্রেই সেবাদান করছে।
তৃতীয়ত, স্বতন্ত্র প্রচেষ্টা থেকে পৃথকীকৃত ডিটারমিনিস্টিক সেবা। সেবার ক্ষেত্র ও কানেক্টিভিটির প্রয়োজনীয়তা অনুযায়ী শিল্প খাত আলাদা হয়। পৃথকীকৃত সেবা যদি ডিফল্ট হয়, সেক্ষেত্রে ডিটারমিনিস্টিক অভিজ্ঞতা অবশ্যম্ভাবী। এজন্য শুধু পৃথকীকৃত ও ডিটারমিনিস্টিক সেবা প্রদানের মাধ্যমেই অপারেটররা সম্ভাব্য বাজারে প্রবেশ করতে পারবে।
চতুর্থত, যেকোনো মাধ্যমে এমবিপিএস থেকে জিবিপিএস। অর্থাৎ সেলুলার, ওয়াই-ফাই এবং অপটিক্যাল ফাইবার প্রযুক্তির মতো মাল্টিপল অ্যাকসেস প্রযুক্তি রয়েছে এবং সেবার ক্ষেত্রের বৈচিত্র্য প্রমাণ করে যে মাল্টিপল অ্যাকসেস প্রযুক্তি ভবিষ্যতে এক সঙ্গে থাকবে। খাতজুড়ে সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে ফোরজি, ফাইভজি, ওয়াই-ফাই এবং ফাইবার প্রযুক্তি এখন সর্বত্র বিদ্যমান গিগাবিট কানেক্টিভিটি সেবা দিতে পারে।
পঞ্চমত, ম্যানুয়াল ওঅ্যান্ডএম থেকে হাইপার-অটোমেশন। ফোরজির চেয়ে ফাইভজি নেটওয়ার্ক ওঅ্যান্ডএমকে জটিল করে তুলবে। ম্যানুয়াল ওঅ্যান্ডএম নতুন এ জটিল অবস্থা নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না। কিন্তু বিগ ডাটা এবং এআই প্রযুক্তির মাধ্যমে হাইপার অটোমেশন ওঅ্যান্ডএমকে সহজ করে তুলবে।
বিবৃতিতে হুয়াওয়ে জানায়, এআইয়ের মাধ্যমে ইন্টেলিজেন্ট কানেক্টিভিটির ক্ষেত্রে পাঁচটি পরিবর্তন নতুন প্রয়োজনীয়তার সৃষ্টি করবে। এ প্রয়োজন মেটাতে এবং উৎপাদনশীলতার নতুন সম্ভাবনা বাস্তবায়নে কানেক্টিভিটি পরবর্তী পর্যায়ে নিয়ে যেতে হবে। এক্ষেত্রে প্রথম আবশ্যিক শর্ত হলো সব জায়গায় গিগাবিটের বিষয়টি নিশ্চিত করা। কেননা ব্যান্ডউইডথ কানেক্টিভিটির মূলভিত্তি। আল্ট্রা-এইচডি ভিডিও, ইন্ডাস্ট্রিয়াল ভিআর/এআর অ্যাপ্লিকেশন, এআই ক্যামেরা এবং ড্রোনের ব্যবহারের জন্য সর্বত্র গিগাবিট কানেক্টিভিটির প্রয়োজন। দ্বিতীয় প্রয়োজনীয় শর্ত হলো ডিটারমিনিস্টিক এক্সপেরিয়েন্স, যা টেলিকমিউটিং ও অনলাইন লার্নিংয়ের মতো হোম সিনারিও এবং নিরাপদ ও নির্ভরযোগ্য উৎপাদনের মতো এন্টারপ্রাইজ সিনারিওর জন্য প্রয়োজনীয়। তৃতীয় আবশ্যিক শর্ত হলো হাইপার-অটোমেশন। কমপ্লেক্সিটি ও স্কেলের শর্তে নেটওয়ার্কের অগ্রগতি ঘটে। ফলে হাইপার অটোমেশন অর্জনে অবশ্যই বিগ ডাটা ও এআই ব্যবহার করতে হবে।
অনুষ্ঠানে ডেভিড ওয়াং বলেন, ফাইভজি, অপটিক্যাল নেটওয়ার্ক, আইভি৬ এনহ্যান্সড উদ্ভাবনের প্রতিনিয়ত বিনিয়োগের মাধ্যমে আমরা আমাদের অল-সিনারিও ইন্টেলিজেন্ট কানেক্টিভিটি সমাধান চালু করেছি, যা আল্ট্রা ব্রডব্যান্ড নেটওয়ার্ককে গ্রিনার ও দক্ষ করে তুলবে এবং ইন্টেলিজেন্ট বিশ্ব তৈরি করবে।