চীন থেকে প্যাকিংয়ের যন্ত্রপাতি আমদানি করবে অলিম্পিক

নিজস্ব প্রতিবেদক

কভিড-১৯ এর কারণে প্যাকেটজাত বিস্কুট ও কনফেকশনারি পণ্যের চাহিদা স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় বেড়েছে। বাড়তি চাহিদা অনুযায়ী পণ্য তৈরি করে ভোক্তাদের কাছে সরবরাহের জন্য প্রয়োজনীয় প্যাকিং সামগ্রীর সংকটে পড়েছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত শীর্ষস্থানীয় বিস্কুট উৎপাদক অলিম্পিক লিমিটেড। এ কারণে নিজেদের কারখানায় প্যাকিং সামগ্রী তৈরি উদ্যোগ নিয়েছে কোম্পানিটি। এজন্য চীন থেকে বেশ কিছু যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জাম আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে কোম্পানিটির পর্ষদ।

গতকাল স্টক এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে অলিম্পিক বিনিয়োগকারীদের জানিয়েছে, কোম্পানিটির পর্ষদ চীন থেকে ৪ কোটি ৯২ লাখ ৬৬ হাজার টাকার নতুন যন্ত্রপাতি, সরঞ্জাম ও যন্ত্রাংশ আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যা কোম্পানিটির কাঁচপুরের কারখানায় বিস্কুট ও কনফেকশনারী পণ্য প্যাকিংয়ের জন্য পিইটি শীট ও পিইটি ট্রে বানাতে কাজে লাগানো হবে। কোম্পানিটি যেসব যন্ত্রপাতি, সরঞ্জাম ও যন্ত্রাংশ আমদানি করবে তার মধ্যে রয়েছে- ৩ কোটি ৬৮ লাখ ১১ হাজার টাকায় পিইটি কো-এক্সট্রশন লাইন কমপ্লিট উইথ এক্সট্রোডার, প্রি হিটিং সিস্টেম, মাস্টার ব্যাচ, ডজিং ইউনিট, গ্লাস হিটার, এনকোডার মটর, ইনভার্টার ও টাচ স্ক্রীন। এর প্রতি ঘন্টায় দশমিক ৩৩ পুরুত্বের ৪৮০-৫০০ কেজি পিইটি শীট তৈরির সক্ষমতা রয়েছে। ১ কোটি ২৪ লাখ ৫৫ হাজার টাকায় পুরোপুরি স্বয়ংক্রিয় তিনটি স্টেশন থার্মোফর্মিং মেশিনের সঙ্গে মোল্ড, ইলেকট্রিক লিফটার, ক্ল্যাম্পিং সিলিন্ডার, ড্রাইভ শীট ফিডিংয়ের সঙ্গে মূল সার্ভো মটর, ফর্মিং অ্যান্ড কাটিং, স্ট্যাকিং এবং ফর্মিংয়ের জন্য ভ্যাকুয়াম ইউনিট আমদানি করা হবে। এর সক্ষমতা প্রতি মাসে ২০০ টন।

জানতে চাইলে অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজের কোম্পানি সচিব মো. নাজিমউদ্দিন বণিক বার্তাকে বলেন, প্যাকিংয়ের জন্য প্রয়োজনীয় পিইটি শীট ও পিইটি ট্রে এতদিন আমরা স্থানীয়ভাবে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে সংগ্রহ করতাম। কিন্তু এতে অনেক সময় চাহিদা অনুসারে পণ্য পেতে সমস্যায় পড়তে হয়। তাছাড়া কভিডের কারণে বিস্কুট ও কনফেকশনারি পণ্যের বাড়তি চাহিদা তৈরি হওয়ায় প্যাকিংয়ের চাহিদাও বেড়েছে। এ কারণে অন্য প্রতিষ্ঠানের উভর নির্ভরশীলতা কাটাতে আমরা নিজেরাই কারখানাতে প্যাকিংয়ের জন্য প্রয়োজনীয় পণ্য উত্পাদনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। 

সর্বশেষ নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ৩০ জুন সমাপ্ত ২০১৯ হিসাব বছরে অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজের রাজস্ব আয় হয়েছে ১ হাজার ৩৭৩ কোটি ৩৭ লাখ ২৮ হাজার টাকা, আগের হিসাব বছরে যা ছিল ১ হাজার ২৯২ কোটি ৮৫ লাখ ১ হাজার টাকা। এ হিসাবে সমাপ্ত হিসাব বছরে কোম্পানিটির রাজস্ব বেড়েছে ৮ কোটি ৫ লাখ ২২৭ হাজার টাকা বা ৬ দশমিক ২৩ শতাংশ। আলোচ্য সময়ে প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৯ টাকা ৩৬ পয়সা, আগের হিসাব বছরে যা ছিল ৮ টাকা ৯৬ পয়সা। এ হিসাবে গত হিসাব বছরে অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজের ইপিএস বেড়েছে ৪০ পয়সা বা ৪ দশমিক ৪৬ শতাংশ। ২০১৯ হিসাব বছরে শেয়ারহোল্ডারদের ৫০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ।

৩০ জুন সমাপ্ত ২০২০ হিসাব বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ৭ টাকা ৭৩ পয়সা, যা এর আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৬ টাকা ৯৭ পয়সা। ৩১ মার্চ ২০২০ শেষে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ৩৮ টাকা ৮২ পয়সায়।

১৯৮৯ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিটির অনুমোদিত মূলধন ২০০ কোটি টাকা। পরিশোধিত মূলধন ১৯৯ কোটি ৯৩ লাখ ৯০ হাজার টাকা। রিজার্ভে রয়েছে ৫২১ কোটি ৬৯ লাখ ২০ হাজার টাকা। মোট শেয়ারের ২৭ দশমিক ৭৭ শতাংশ উদ্যোক্তা পরিচালক, ১৬ দশমিক ৯৭ শতাংশ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী, ৩৯ দশমিক ৭৩ শতাংশ বিদেশী বিনিয়োগকারী ও বাকি ১৫ দশমিক ৫৭ শতাংশ সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সোমবার অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ শেয়ারের সর্বশেষ দর ছিল ১৬৪ টাকা। গত এক বছরে শেয়ারটির সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ দর ছিল যথাক্রমে ১২৮ টাকা ৪০ পয়সা ও ২০৭ টাকা ৫০ পয়সা।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন