সাতসতেরো

ভবিষ্যৎ বিজনেস গ্র্যাজুয়েটদের দক্ষতা প্রসঙ্গে

মো. আব্দুল হামিদ

করোনার প্রভাবে পৃথিবীর নামিদামি বহু কোম্পানি ভয়াবহ আর্থিক সংকটে নিপতিত হচ্ছে। বিপুলসংখ্যক কর্মী তাদের চাকরি হারাচ্ছেন। সেকেন্ড ওয়েভের কারণে আবার লকডাউনে যেতে হলে বহু শিল্পোন্নত রাষ্ট্রের পক্ষেও তা বহন করা কঠিন হবে বলা হচ্ছে। অধিকাংশ মা-বাবা সন্তানদের ভবিষ্যৎ ভাবনায় উদ্বিগ্ন। কিন্তু আমার সঙ্গে যুক্তদের ফেসবুক স্টোরি দেখলে মনে হয় না...গোটা দুনিয়া আদৌ কোনো সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে! অথচ সদ্য পাস করা ও হবু গ্র্যাজুয়েটদের (শিক্ষা, স্বপ্ন ও ক্যারিয়ার এলোমেলো হওয়ার শঙ্কায়) অনেক বেশি উদ্বিগ্ন হওয়াটাই স্ব্বাভাবিক ছিল, তাই না?

সম্প্রতি সিলেটের লিডিং ইউনিভার্সিটি আয়োজিত এক সেমিনারের জন্য মূল প্রবন্ধ প্রস্তুত করতে গিয়ে এমন অসংখ্য বিষয় নজরে আসে। সেখানে আরো দুজন করপোরেট ব্যক্তিত্ব (এসিআই ফরমুলেশনস লিমিটেডের ব্র্যান্ড ম্যানেজার আমান উল্লাহ আমান ও বাংলালিংকের সিলেট রিজিওনাল হেড সৈয়দ মোস্তফা আহমেদ) তাদের বাস্তব অভিজ্ঞতা ও মতামত তরুণদের সঙ্গে শেয়ার করেন। বণিক বার্তার পাঠকদের অনেকেই ‘পোস্ট প্যানডেমিক স্কিলস ফর বিজনেস গ্র্যাজুয়েটস’ শিরোনামের ওই সেমিনারে আলোচিত বিষয়গুলোয় আগ্রহী হবেন—এমন ভাবনা থেকেই আজকের নিবন্ধের সূচনা।  

বলছিলাম গ্র্যাজুয়েটদের বাস্তবতা ও বোধের এত পার্থক্য হওয়ার কারণ কী? অনেক আঙ্গিক থেকেই সেটা ব্যাখ্যা করা যায়। তবে আমার মতে খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় হলো, তারা পুরো শিক্ষাজীবনে পাঠ্য বিষয়বস্তু ও বাস্তব জীবনের মধ্যে কোনো যোগসূত্র খুঁজে পায় না! অর্থাৎ তারা ধরেই নেয় একাডেমিক বিষয়গুলো পরীক্ষায় পাস কিংবা ভালো গ্রেড পাওয়ার জন্য। আর কর্ম বা দৈনন্দিন জীবনের জন্য প্রয়োজন হয় ভিন্ন জ্ঞান! এখনো যেহেতু তারা শিক্ষার্থী (বা চাকরির জন্য প্রস্তুতিরত), সেহেতু বাস্তব পরিস্থিতি নিয়ে মাথা ঘামানো তাদের কাজ নয়; ওসবের জন্য তো বড়রা রয়েছে! 

এক্ষেত্রে আরেকটা বড় সমস্যা হলো, অভিভাবকদের মনোভাব ও কার্যক্রম। নিজে দিন-রাত মাথার ঘাম পায়ে ফেলে পরিশ্রম করেন, অসংখ্য সংকট নীরবে হজম করেন; কিন্তু পরিবারের লেখাপড়া করা সন্তানটিকে তাতে কোনোভাবেই ইনভলভ করতে চান না। এমনকি তার চাহিদা মেটাতে গিয়ে পরিবার ঋণগ্রস্ত হলেও সন্তানকে তা বুঝতে দিতে চান না! ফলে তারা উভয় (শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও পরিবার) ক্ষেত্রে প্রায়ই বাস্তবতা থেকে দূরে থাকে। হয়তো সে কারণেই বৈশ্বিক, জাতীয়, এমনকি পারিবারিক সংকট অনেক সময়ই তাদের স্পর্শ করে না। ব্যতিক্রম অবশ্যই রয়েছে। তবে অধিকাংশের ক্ষেত্রে তেমনটাই লক্ষ করা যায়। 

শতাব্দীর অনাকাঙ্ক্ষিত অতিথি করোনা খুব স্বল্প সময়ে অনেক কিছুই বদলে দিয়েছে। এ ব্যাপারে সবাই একমত যে আমাদের এই গ্রহটি আর কখনই করোনাপূর্ব পৃথিবীর মতো হবে না। তাহলে স্বভাবতই মনে প্রশ্ন জাগে, প্রচলিত শিক্ষা বা দক্ষতাগুলো কি মহামারী-উত্তর পৃথিবীতেও সমভাবে কার্যকর থাকবে? এ বিষয়ে ভাবা ও প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়ার ক্ষণ আমাদের দ্বারে উপনীত হয়েছে বেশ আগে। তবুও আমরা চলছি সেই গদাই লস্করি চালে! দীর্ঘমেয়াদে তার ফল কেমন হতে পারে তা কি আমরা অনুমান করার সামান্য চেষ্টাও করছি? 

পরিবর্তন খুব স্বাভাবিক এক প্রক্রিয়া। গতিশীল বিশ্বে টিকে থাকার স্বার্থেই আমাদের নতুন নতুন দক্ষতা অর্জন করতে হয়। দুই দশক আগে খাতা-কলমে কাজ করতে অভ্যস্ত ব্যাংক কর্মকর্তা আজ (দ্বিধা ও শঙ্কা ছাড়াই) কম্পিউটারে কাজ করছেন কিংবা লম্বা দরখাস্ত লেখার পরিবর্তে খটখট করে ই-মেইল লিখে বিভিন্ন জায়গায় পাঠাচ্ছেন! তাহলে করোনা-পরবর্তী বিশ্বে পার্থক্যের জায়গাগুলো কি এমনই থাকবে নাকি ব্যাপকভাবে বদলে যাবে? 

খুব সম্ভবত, পরিবর্তনের গতি এখানে সবচেয়ে বড় ফ্যাক্টর বলে গণ্য হবে। আগে পরিবর্তন হতো ধীর লয়ে। টাইপ মেশিন ছেড়ে কি-বোর্ড ধরতে অনেকের কয়েক বছর লেগেছে। কিন্তু ফিজিক্যাল ক্লাসরুম থেকে ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে ঢুকতে সময় মিলেছে মাত্র কয়েক সপ্তাহ! প্রবল ক্যামেরা ভীতি থাকা ম্যাডামও এখন সাবলীলভাবে অনলাইন ক্লাস নিচ্ছেন—ঠিক বুঝে ওঠার আগেই কীভাবে যেন সব বদলে যাচ্ছে, তাই না?

এখন কথা হলো, খুব গতিশীল ডিসিপ্লিনের অংশীজন হিসেবে বিজনেস গ্র্যাজুয়েটরা কি এ বিষয়টা ঠিকঠাক ধরতে পারছে? গোটা দুনিয়ার অর্থনীতি-সমাজ-সংস্কৃতি সবকিছু বদলে দিচ্ছে ব্যবসায় চর্চা। তিন দশক আগের সঙ্গে আজকের জীবনধারায় যে বিরাট পার্থক্য, তা ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোর হাত ধরেই হয়েছে। এক্ষেত্রে বিজনেস প্রো-অ্যাকটিভ আর সোসাইটি রি-অ্যাকটিভ ভূমিকা পালন করে। সমাজের নির্দেশনায় পণ্য তৈরি হয় না। বরং নতুন পণ্যের ব্যবহার করতে গিয়ে সমাজ বদলে যায়। চিঠির বদলে মেসেজ, চায়ের পরিবর্তে কফি, ছাপা বইয়ের স্থলে ই-বুক কিংবা ফ্যানের জায়গায় এসি...এমন অসংখ্য বদল হয়েছে আমাদের অলক্ষে। 

তাহলে এমন পরিবর্তনে নেতৃত্ব দেয়ার জন্য বিজনেস গ্র্যাজুয়েটদের নিজেকে তৈরি করা আগেও অপরিহার্য ছিল। এখনকার পরিবর্তনগুলো হচ্ছে কল্পনার চেয়েও দ্রুততম সময়ে। গত তিন বছরে এ দেশে অনলাইন শপিংকে যতটুকু গ্রহণযোগ্য করা যায়নি, করোনা আঘাত হানার তিন মাসের মধ্যেই তার চেয়ে বেশি হয়েছে। অর্থাৎ পরিবেশ-পরিস্থিতির চাহিদা ধরতে পারা ও বিজনেস মডেলে তার প্রয়োগ করার মধ্যেই নিহিত রয়েছে ভবিষ্যতের সফলতা বা ব্যর্থতার মূল সূত্র। তাছাড়া বেশ আগেই আমরা চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের যুগে প্রবেশ করেছি। ফলে প্রযুক্তির উত্কর্ষ বহুক্ষেত্রে শারীরিক শ্রমের প্রয়োজনীয়তা হ্রাস করছে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা মানুষের বিশ্লেষণক্ষমতা ও সৃজনশীলতাকে চ্যালেঞ্জ করছে।

এ অবস্থায় প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রগুলোয় দক্ষ হওয়ার বিকল্প কোনো পন্থা রয়েছে কি? না, নেই। তাছাড়া সেই মানুষগুলোকে হতে হবে নিজ নিজ ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ পর্যায়ের দক্ষ। পাশাপাশি সমন্ব্বয় ঘটাতে হবে অপরিহার্য মানবীয় গুণাবলির। কারণ প্রযুক্তি যতই উন্নত হোক না কেন, তা মানবিক হতে পারে না। ফলে আগামীর বিশ্বে টেকনিক্যাল দক্ষতার পাশাপাশি জীবন্ত নেটওয়ার্ক সৃষ্টিতে সক্ষম মানুষের চাহিদা বাড়বে। লিডারশিপ, কমিউনিকেশন, টিমওয়ার্ক, প্রেজেনটেশন প্রভৃতি দক্ষতাবিহীন গ্র্যাজুয়েটরা প্রতি ধাপে আটকে যাবে। এখন প্রশ্ন হলো, আমাদের বিজনেস স্কুলগুলো সেজন্য ঠিক কতটা প্রস্তুত?

এখনো আমরা শেখার চেয়ে সনদকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি। মগজের ধার বাড়ানোর পরিবর্তে ডিগ্রির ভার দিয়ে সাফল্যকে বগলদাবা করতে চাইছি। কিন্তু বিশ্ব শ্রমবাজার ক্রমেই উন্মুক্ত হচ্ছে। প্রতি বছর আমাদের অর্জিত রেমিট্যান্সের এক-তৃতীয়াংশ ভিনদেশী কর্মীরা নিয়ে যাচ্ছেন। নেপালের মতো রাষ্ট্র (যাদের অনেক শিক্ষার্থী এখনো আমাদের দেশে পড়ছে) শিক্ষাকে বাস্তবমুখী করতে ব্যাপক বিনিয়োগ করছে। ভারত, শ্রীলংকা, থাইল্যান্ড তাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে বিশ্বমানের করার জন্য নিবিড়ভাবে কাজ করছে। তাদের গ্র্যাজুয়েটদের মোবিলিটি যত বাড়বে, আমাদের সনদনির্ভর গ্র্যাজুয়েটরা তত কোণঠাসা হয়ে পড়বে। ফলে শুধু উচ্চতর সিজিপিএ আগামীতে টিকে থাকা বা প্রত্যাশিত সফলতা পাওয়ার জন্য মোটেই যথেষ্ট হবে না।

বিজনেস গ্র্যাজুয়েটদের অনেকেই সেটা এরই মধ্যে আঁচ করতে সক্ষম হয়েছে। তারা নিজেদের মানোন্নয়নে বিশেষভাবে মনোযোগী হয়েছে। কারণ আকস্মিক বন্যায় যখন ঘরদোর তলিয়ে যায়, তখন কে উদ্ধার করতে এল, আর কে এল না—তা নিয়ে হিসাব-নিকাশ করার সুযোগ থাকে না। তখন নিজেকে রক্ষার প্রশ্নটা মুখ্য হয়ে ওঠে। আর সে কারণেই তারা শুধু গত্বাঁধা সিলেবাস আর ওজনদার গ্রেডের আশায় দিন কাটাচ্ছে না। 

করোনাকালে তারা নিজেদের পছন্দের বিষয়ে অনলাইনে অসংখ্য কোর্স করছে। ইউটিউবে টিউটোরিয়াল দেখে নেট থেকে ডামি বা পুরনো ডাটাসেট নিয়ে সেগুলো চর্চা করছে, সমমনাদের নিয়ে আইডিয়া শেয়ারিং সেশন করছে, পরস্পর মিলে বিভিন্ন কেস সমাধান ও প্রেজেন্টেশন করছে, নানা কনটেস্টে অংশ নিচ্ছে, ওয়েবিনারে এক্সপার্টদের পরামর্শ শুনছে...এভাবে আবদ্ধ সময়কে নিজেদের সমৃদ্ধ করার লক্ষ্যে বিনিয়োগ করছে। আসন্ন কঠিন লড়াইয়ের জন্য নিজেদের প্রস্তুত করছে।

এখন কথা হলো, আগামীতে কোন ধরনের দক্ষতা বেশি দরকার হবে? ব্যবসায়ের ধরন যা-ই হোক না কেন—করোনা টেকনোলজিক্যাল লিটারেসিকে অপরিহার্য করে তুলেছে। সঙ্গে ফিন্যান্সিয়াল লিটারেসি মাস্ট। কারণ এই হাতিয়ারগুলোর দক্ষ ব্যবহারই ভবিষ্যৎ প্রতিষ্ঠানগুলোর সফলতা ও ব্যর্থতা নিরূপণ করবে। এখন কথা হলো, কোন পর্যায়ের দক্ষতা থাকা দরকার? এর জবাব হলো, যত গুড় তত মিষ্টি! কারণ রেডি একজন কর্মী পেলে প্রতিষ্ঠান অবশ্যই আনাড়ি কাউকে রিক্রুট করতে চাইবে না। তাই যত পারা যায় এ বিষয়গুলোয় দক্ষতা অর্জনে মনোযোগী হতে হবে। 

প্রযুক্তির ক্ষেত্রে অনেকেরই ভুল ধারণা রয়েছে। তারা ভাবে, আমি তো সারা দিনই ফোন বা কম্পিউটার নিয়ে থাকি। কিন্তু তাকে যদি বলা হয় বাংলা টাইপ করতে জানো? জবাব শুনে হতাশ হতে হবে। অনেককে দেখেছি বাসায় একাধিক কম্পিউটার থাকার পরেও এক পৃষ্ঠা বাংলা টাইপ করার জন্য দোকানে গিয়ে ঘণ্টা ধরে বসে থাকতে! কোর্সের প্রেজেন্টেশনের জন্য বন্ধুদের খাইয়ে পাওয়ার পয়েন্ট স্লাইড তৈরি করে নেয়। এক্সেলে ডাটা এন্ট্রি দিতে গিয়ে গলদ্ঘর্ম হয়। এসপিএসএসের নাম শুনলেই ভয় পায়। কিন্তু বহু প্রতিষ্ঠানে চাকরির প্রথম সপ্তাহ থেকেই এগুলো ব্যবহার করতে হয়। অনেকে তখন শিখতে গিয়ে খেই হারিয়ে ফেলে। কারণ প্রশিক্ষণ তো নিতে হয় যুদ্ধ শুরুর পূর্বে, তাই না? 

এক্ষেত্রে প্রথমে নিজের পছন্দ অনুযায়ী সম্ভাব্য পেশা নির্ধারণ করা দরকার। তারপর সেই ফিল্ডে কাজ করা কিছু মানুষের সঙ্গে নেটওয়ার্ক সৃষ্টি করতে হবে। তাদের কাছ থেকে ধারণা নিতে হবে যে ওই পেশায় ঠিক কোন কোন ধরনের টেকনিক্যাল ও হিউম্যান স্কিল দরকার হয়। তারপর সমমনা কয়েকজন সহপাঠী-বন্ধু মিলে সেগুলোর উন্নয়নে নিবিড়ভাবে কাজ করতে হবে। গুগল ও ইউটিউব থেকে প্রাথমিক ধারণা নেয়ার পর সিলেক্টিভ অনলাইন কোর্স করতে হবে। ফিজিক্যাল ট্রেনিং এমনকি ভলান্টারিংয়ের সুযোগ থাকলে সেগুলোয় সক্রিয়ভাবে অংশ নিতে হবে। কারণ বাস্তবে কাজ না করলে আসলে দক্ষতা পাকাপোক্ত হয় না; আত্মবিশ্বাস জন্মায় না। 

এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ক্লাব ও সহপাঠ্যক্রমিক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত শিক্ষার্থীরা নিজের অজান্তেই অসংখ্য বিষয়ে দক্ষ হয়ে ওঠে। ফলে একা একা সাফল্যের চূড়ায় পৌঁছার ভাবনা বাদ দিতে হবে। কারণ একক পরিবারে বেড়ে ওঠা অধিকাংশ ছেলেমেয়ে কর্মক্ষেত্রে টিম মেম্বার হিসেবে ভালো করছে না। তাছাড়া বর্তমান তরুণদের সম্পর্কে একটা বড় অভিযোগ হলো, তারা মনোযোগ দিতে চায় না; অধিকাংশেরই ধৈর্য কম। সামান্যতে হাল ছেড়ে দেয়ার প্রবণতা লক্ষণীয়। সেক্ষেত্রে বেশি বেশি চর্চার মাধ্যমে ধৈর্য বাড়াতে ও জড়তা কাটাতে হবে। নইলে আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা সত্যিই খুব কঠিন হবে।

আমাদের গ্র্যাজুয়েটদের সম্পর্কে নিয়োগকর্তাদের একটি মনোভাবের কথা শেয়ার করে শেষ করব। তারা শাবিপ্রবির গ্র্যাজুয়েটদের ব্যাপারে দুটো বিষয়ে বেশ ইতিবাচক ধারণা পোষণ করেন। সেগুলো হলো: প্রযুক্তিবান্ধব ও যোগাযোগ দক্ষতা। অর্থাৎ অন্যান্য (অধিকাংশ) বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রযুক্তি পণ্য ব্যবহারের ক্ষেত্রে ভীতি বা এড়িয়ে যাওয়ার প্রবণতা লক্ষ করা যায়। কিন্তু সাস্টের শিক্ষার্থীরা সেগুলো উপভোগ করে, দায়িত্ব নিতে এগিয়ে আসে। 

অন্যদিকে যোগাযোগের ক্ষেত্রে তাদের জড়তা তুলনামূলকভাবে বেশ কম। লক্ষণীয় বিষয় হলো, এর সিংহভাগই কিন্তু তারা শেখে ক্লাসরুমের বাইরে। অর্থাৎ যাদের সঙ্গে আড্ডা দেয়, আলোচনা করে, বিভিন্ন ইভেন্টে দলগতভাবে কাজ করে, তাদের গুণগুলো ক্রমেই রপ্ত হয়ে যায়। তাই কাদের সঙ্গে তুমি নেটওয়ার্ক গড়ে তুলছ, তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বিজনেস গ্র্যাজুয়েটরা এ বিষয়গুলো মাথায় রেখে অগ্রসর হলে মহামারী-পরবর্তী বিশ্বে শুধু দেশ নয়, আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও সম্মানজনক জায়গা করে নিতে সক্ষম হবে বলে আশা করা যায়। 


মো. আব্দুল হামিদ: শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের শিক্ষক ও ‘পোস্ট ক্রাইসিস বিজনেস’ বইয়ের লেখক

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন