সাক্ষাৎকার

পাঁচ বছরে আন্তর্জাতিক কোম্পানি হবে এনার্জিপ্যাক

ট্রান্সফরমার, জেনারেটর, ইলেকট্রিক্যাল পণ্য ও বিদ্যুৎ খাতের ব্যবসায় ৩২ বছরের বেশি সময় ধরে যুক্ত রয়েছেন হুমায়ুন রশীদ। এনার্জিপ্যাক পাওয়ার জেনারেশন লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার (সিইও) দায়িত্বে রয়েছেন তিনি। প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির প্রক্রিয়ায় রয়েছে এনার্জিপ্যাক পাওয়ার জেনারেশন লিমিটেড। সম্প্রতি প্রতিষ্ঠানের তালিকাভুক্তি, ব্যবসায়িক ভিশন ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার বিভিন্ন দিক বণিক বার্তার কাছে তুলে ধরেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এ স্নাতক। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন মেহেদী হাসান রাহাত

এনার্জিপ্যাকের শুরু ও বর্তমান বিনিয়োগ সম্পর্কে জানতে চাই

১৯৮২ সালে ট্রেডিং কোম্পানি হিসেবে এনার্জিপ্যাকের যাত্রা শুরু হয়। প্রথমে ইলেকট্রিক্যাল পণ্যের ট্রেডিং ব্যবসা করতাম আমরা। ১৯৯৫ সালে এনার্জিপ্যাক পাওয়ার জেনারেশনের নামে ডিজেল জেনারেটরের ট্রেডিং ব্যবসা শুরু করি। পাশাপাশি গ্যাস জেনারেটরও সরবরাহ করতাম। বিভিন্ন ইন্ডাস্ট্রির জন্য ইপিসি কন্ট্রাক্টর হিসেবে কাজ করেছি। ক্যাপটিভ মার্কেটে পাওয়ার জেনারেশন সলিউশনস সরবরাহ করতাম সে সময়। ২০১৫ সাল পর্যন্ত এনার্জিপ্যাক ট্রেডিং অত্যন্ত শক্তিশালী ভিত্তির কোম্পানি হিসেবে বাংলাদেশে ছিল। এ সময় ইলেকট্রনিক পণ্যের পাশাপাশি ডিজেল ও গ্যাস জেনারেটর; পাওয়ার প্লান্ট কনস্ট্রাকশন, অপারেশন, মেইনটেন্যান্স ও বিদ্যুৎকেন্দ্রে বিনিয়োগ করি আমরা। এরপর দেখলাম যে ট্রেডিংয়ের ওপর নির্ভরশীলতা বেড়ে যাচ্ছে, এ থেকে বেরিয়ে আসতে হবে ও আমাদের উত্পাদনে যেতে হবে। এ চিন্তা থেকে জেনারেটর ট্রেডিংয়ে আমাদের দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা থাকায় গ্ল্যাড ব্র্যান্ডের জেনারেটর দেশে উত্পাদন শুরু করলাম। জ্যাক ব্র্যান্ডের ট্রাক দেশে আমদানি করতাম আমরা। পরবর্তী সময়ে সেটি দেশেই সংযোজন শুরু করি। এ বছর থেকে ট্রাকের পাশাপাশি ডাবল কেবিনের পিকআপ সংযোজন শুরু করেছি। বাজারে এটি ভালো সাড়া পেয়েছে। স্টিলপ্যাক নামে এনার্জিপ্যাক পাওয়ার জেনারেশনের একটি সহযোগী প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যেটি প্রি ফ্যাব্রিকেটেড স্টিল স্ট্রাকচারের ব্যবসা করছে। আমরা স্বল্পমূল্যে আবাসন নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে কাজ করছি। আগামী বছরের শেষদিকে এটি আপনারা দেখতে পাবেন। আমাদের সবচেয়ে বড় বিনিয়োগ হচ্ছে জি গ্যাসে। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে এলপিজি বোতলজাত করে বিপণন করছে জি গ্যাস। এরই মধ্যে এতে আমাদের প্রায় ৪০০ কোটি টাকার মতো বিনিয়োগ হয়ে গেছে। সামনে আরো বিনিয়োগের প্রয়োজন হবে। বাংলাদেশে এলপিজি পেনিট্রেশন এখন ৩২ শতাংশ। ভারতে এটি ৯০ শতাংশ। বাংলাদেশে বর্তমানে এলপিজির বাজার ১০ লাখ টনে দাঁড়িয়েছে। অথচ এটি ২০১৪-১৫ সালের দিকেও মাত্র দুই থেকে আড়াই লাখ টন ছিল। মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বাড়ার পাশাপাশি দেশের যেসব এলাকায় প্রাকৃতিক গ্যাস নেই সেখানকার মানুষ তাদের প্রয়োজন মেটাতে এলপিজি ব্যবহারের দিকে ঝুঁকছে। ফলে সামনের দিনগুলোতে দেশের এলপিজির বাজার আরো বাড়বে। আপনি যদি আমাদের ব্যবসার ভবিষ্যৎ সম্ভাবনার কথা বলেন তাহলে বলব, আমাদের ব্যবসায় তুলনায়মূলক ঝুঁকি কম। কারণ আমরা ইলেকট্রনিক পণ্য, জেনারেটর এবং জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতে ব্যবসা করছি। এগুলোর প্রয়োজন কিন্তু সবসময়ই থাকবে। এক্ষেত্রে আমরা যে বিনিয়োগ করেছি, সেগুলোর ফল আসা শুরু হয়েছে মাত্র। এগুলোর পূর্ণাঙ্গ সুফল সামনের দিনগুলোতে প্রতিফলিত হবে। 

কোন ব্যবসায় বিনিয়োগের জন্য প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে পুঁজিবাজার থেকে অর্থ সংগ্রহ করছে এনার্জিপ্যাক?

বর্তমানে আমাদের মূল ফোকাস হচ্ছে জ্বালানি খাতে। জি গ্যাসের জন্য আমরা রূপগঞ্জে একটি ফিলিং স্টেশন করছি। এছাড়া সেখানে আমরা বেশকিছু লজিস্টিক ইকুইপমেন্টে বিনিয়োগ করব। এতে আমাদের ডিস্ট্রিবিউশন কস্ট কমে আসবে। এর বাইরে ব্যাংকের ঋণ পরিশোধেও কিছু অর্থ ব্যয় করতে চাই আমরা। জ্বালানির চাহিদা সবসময়ই থাকবে। ফলে আমাদের সম্ভাবনাও আকাশছোঁয়া।

এলপিজি খাতের ব্যবসায় দেশের বেশকিছু বড় গ্রুপ যুক্ত হয়েছে। ব্যবসায় প্রতিযোগিতাও দিন দিন বাড়ছে। এক্ষেত্রে এনার্জিপ্যাকের অবস্থান জানতে চাই?

খুলনার দাকোপের চুনখালিতে নিজস্ব টার্মিনাল রয়েছে আমাদের। এতে পাঁচ হাজার টনের স্টোরেজ ফ্যাসিলিটিজ রয়েছে। দেশব্যাপী আমাদের বিস্তৃত ডিস্ট্রিবিউশন নেটওয়ার্ক রয়েছে। জি গ্যাস ব্র্যান্ডের প্রতি গ্রাহকের গ্রহণযোগ্যতা অনেক বেশি। ইলেকট্রিক্যাল ও মেকানিক্যাল কোম্পানি হিসেবে আমাদের সক্ষমতা অন্যদের চেয়ে বেশি। পরিচালন দক্ষতা বাড়ানোর জন্য স্থানীয় পর্যায়ে আমাদের আরো ৮-১০টা ফিলিং স্টেশন করতে হবে। নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ ছাড়াও দেশের পশ্চিমাঞ্চলে আরো বেশ কয়েকটি স্টেশন স্থাপন করতে হবে। এতে গ্রাহকের দোরগোড়ায় এলপিজি সরবরাহে আমাদের সক্ষমতা আরো বাড়বে। তবে এজন্য আরো বিনিয়োগও করতে হবে।

বিদ্যমান ব্যবসার বাইরে অন্য কোনো খাতে আপনাদের ব্যবসা সম্প্রসারণের পরিকল্পনা আছে কি?

এখন যেসব খাতে আমাদের বিনিয়োগ রয়েছে, সেগুলোই আরো দক্ষতার সঙ্গে পরিচালনা করতে চাই। বর্তমানে আমাদের চারটি খাত থেকে আয় আসছে। এগুলো হলো স্টিল প্যাক, জি গ্যাস, জ্যাক গাড়ি ও বিদ্যুৎকেন্দ্র। আমাদের তিনটি বিদ্যুৎকেন্দ্র রয়েছে, যেগুলো থেকে আগামী ১৫ বছর আয় আসবে। এছাড়া ঠাকুরগাঁওয়ে আমাদের একটি ১১৫ মেগাওয়াটের এইচএফওভিত্তিক আইপিপি বিদ্যুৎকেন্দ্র বাস্তবায়নাধীন পর্যায়ে রয়েছে। আগামী মার্চ মাসে এটি অপারেশনে চলে আসবে বলে আশা করছি। বাণিজ্যিক যানের পাশাপাশি বাস, সিটি হলার ট্রাক, ব্যাটারিচালিত যানবাহন, এসইউভিতে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে আমাদের। আগামী বছর থেকে দেশের বাজারে কম দামে আন্তর্জাতিক মানের বাস বাজারজাত করার পরিকল্পনা রয়েছে। স্টিল প্যাকের মাধ্যমে মানুষকে স্বল্প ব্যয়ে স্বাস্থ্যসম্মত আবাসন সুবিধা দেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে আমাদের।

স্বল্প ব্যয়ে স্বাস্থ্যসম্মত আবাসনের বিষয়টি নিয়ে আপনাদের পরিকল্পনা জানতে চাই...

প্রি ফ্যাব্রিকেটেড স্টিলের বিল্ডিং যেটি প্লাগ অ্যান্ড প্লে টাইপের হবে, এমন একটি বাড়ির নকশা আমরা করে ফেলেছি। এতে জায়গা অনেক কম লাগবে। এর ভেতরে সোলার হোম সিস্টেম থাকবে, ইন্টারনেট থাকবে, বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী লাইট ও ফ্যানের মতো আধুনিক সুবিধা থাকবে। এ বাড়িটি তৈরি করতে মাত্র দুই দিন সময় লাগবে। স্টিল প্যাকের আওতায় মিরসরাইয়ে বঙ্গবন্ধু শিল্পপার্কে জমি নেয়ার জন্য আমরা সরকারের কাছে আবেদন করেছি। আমাদের আবেদন গৃহীত হয়েছে ও অচিরেই জমি পেয়ে যাব। সেখানে যৌথ উদ্যোগে একটি কনটেইনার নির্মাণ কারখানা ও একটি স্টিল প্রসেসিং কারখানা করার পরিকল্পনা রয়েছে।

এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চাই...

কনটেইনার একটি অপ্রচলিত পণ্য, যেখানে আমাদের অনেক সম্ভাবনা রয়েছে। এ খাতে বর্তমানে চীনের একক আধিপত্য। যদিও বাণিজ্য বিরোধের কারণে চীনের ওপর বিভিন্ন ধরনের ট্যারিফ ও নন-ট্যারিফ বাধা তৈরি করা হয়েছে। এতে কিন্তু আমাদের সুযোগ বেড়ে গেছে। আর স্টিল প্রসেসিং কারখানায় আমরা মিল সাইজ স্টিল প্রসেস শিট স্টিল তৈরি করে বাজারজাত করা হবে। শিট মেটালের ইন্ডাস্ট্রি এখনো দেশে আসেনি। শিট মেটালের বহুমুখী ব্যবহার রয়েছে। ফলে এখানে বিনিয়োগের বিপরীতে অনেক সুযোগ রয়েছে।

পরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়িত হলে ভবিষ্যতে কোম্পানির ব্যবসা অনেক বেড়ে যাবে...

আমরা বিশ্বাস করি আগামীতে মাথাপিছু আয় বাড়বে, অর্থনীতি বাড়বে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই বাজার বাড়বে। এগুলো ছাড়াও ট্রেডিং থেকে কিন্তু এখনো উল্লেখযোগ্য হারে আয় হচ্ছে। এছাড়া ট্রাক্টর, ফর্ক লিফট, এসকেভেটর, পে-লোডার, কম্প্রেসর ও লিফটের মতো পণ্য আমদানি ও বাজারজাত করছি। তবে এগুলোর বাজার কতদিন টেকসই হবে, সেটি জানি না। এজন্যই আমরা ট্রেডিংয়ের পাশাপাশি উত্পাদনে মনোযোগী হয়েছি। 

পুঁজিবাজারে আসতে চাইছেন কেন?

আমরা বড় হতে চাই এবং বাংলাদেশে সে সুযোগ রয়েছে। তবে ব্যাংক থেকে উচ্চ সুদে ঋণ নিয়ে বড় হওয়াটা বেশ চ্যালেঞ্জিং। এজন্য বিকল্প অর্থায়নের অন্যতম উৎস হচ্ছে পুঁজিবাজার। এখানে আসতে হলে একটি প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো, কালচার, কমিটমেন্ট, মিশন, ভিশনের প্রয়োজন হয়। এর সবগুলোই আমাদের মধ্যে রয়েছে। ২৫ বছর ধরে আমরা এ প্রতিষ্ঠানটিকে সুশাসনের সঙ্গে পরিচালনা করে আসছি। আমাদের পর্ষদে স্বনামধন্য ব্যক্তিরা স্বতন্ত্র পরিচালক হিসেবে রয়েছে। আমাদের কোম্পানির ব্যবসা ও নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্তে তারা তাদের মতামত প্রদান করছেন। আমরা পাঁচজন যারা শেয়ারহোল্ডার পরিচালক, তারা কিন্তু একই পরিবার থেকে আসিনি। আমাদের মধ্যে কোনো আত্মীয়তার সম্পর্ক নেই। অধিকাংশই প্রকৌশলী ও ব্যবসায়ী। ৩০-৪০ বছর ধরে ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। ফলে এটি পারিবারিক কোম্পানি নয়। বরং এনার্জিপ্যাক কর্মী মালিকানার কোম্পানি। আমাদের ভবিষ্যৎ রোডম্যাপ রয়েছে আগামী পাঁচ বছরে আমরা কী করব। আমাদের এখানে করপোরেট সুশাসন রয়েছে। আমরা তথ্যপ্রযুক্তিতে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি। আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যারা রয়েছেন, তারা কিন্তু সরাসরি পর্ষদে আসছেন না। তারা নিজেদের যোগ্যতা অনুসারে কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পর্যায়ে কাজ করে অভিজ্ঞতা অর্জন করছেন। যাতে করে তারা ব্যবসার খুঁটিনাটি এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়া সম্পর্কে সম্যক ধারণা অর্জন করতে পারেন। বাজার বর্তমানে যে অবস্থানে রয়েছে, সামনের দিনগুলোতে সেটি অনেক পরিবর্তন হবে। কাজেরই পরিবর্তিত পরিস্থিতি আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যাতে সঠিকভাবে খাপ খাওয়াতে পারে, আমরা তাদের সেভাবেই গড়ে তুলছি। আমি আশা করি, আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে এনার্জিপ্যাক আন্তর্জাতিক কোম্পানিতে পরিণত হবে।

সেটি কীভাবে?

আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম অনেক বেশি ভিশনারি ও এডুকেটেড। তারা বিশ্বাস করে শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্বজুড়েই ব্যবসার সুযোগ রয়েছে। মেড ইন বাংলাদেশ পণ্য তারা বিশ্বব্যাপী নিয়ে যেতে চায়। আমরা যে পণ্য তৈরি করছি, সেটি তারা আন্তর্জাতিক বাজারে নিয়ে যেতে চাই। এক্ষেত্রে আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে এ বিষয়টি অ্যাড্রেস করা। আর এজন্যই আমরা গত কয়েক বছর ২ হাজার কোটি টাকার বেশি বিনিয়োগ করেছি। এ বিনিয়োগকে যদি গাছ হিসেবে বিবেচনা করি, তাহলে ভবিষ্যতে এটি আমাদের জন্য ফল হয়ে আসবে।

বিনিয়োগকারীরা কেন আপনাদের কোম্পানিতে বিনিয়োগ করবেন?

যিনি বিনিয়োগ করবেন, তিনি নিশ্চয়ই দেখতে চাইবেন যে লভ্যাংশ পাবেন কিনা? আমি যদি লভ্যাংশ পাই, তাহলে বিনিয়োগকারীরাও লভ্যাংশ পাবেন। আর আমি যদি না পাই, তাহলে তারাও পাবেন না। আমাদের যে স্বপ্ন রয়েছে, সেটি বাস্তবায়নের জন্য অনেক বেশি খাটতে হবে। এজন্য আমাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য মানব সম্পদ থাকতে হবে। আমাদের মেশিন থাকতে হবে, সাপ্লাই চেইন থাকতে হবে। এ বিষয়গুলো আমরা এরই মধ্যে করে ফেলেছি। ফলে একজন বিনিয়োগকারী যখন বিনিয়োগ করবেন, তখন তার বিশ্বাস রাখা উচিত যে বাংলাদেশে ইলেকট্রিক্যাল ব্যবসা টেকসই হবে। তারা এমন একটি কোম্পানিতে বিনিয়োগ করছেন, যেটি প্রবৃদ্ধির মধ্যে রয়েছে। আমরা বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে একাত্মতার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। শেয়ারহোল্ডাররা আমাদের পার্টনার। আমার প্রতি তাদের আস্থা থাকতে হবে। তাদের প্রতিও আমার আস্থা থাকতে হবে। বিনিয়োগের সঙ্গে রিটার্নে যে সম্পর্ক, সেটি যাতে বজায় থাকে সেটি আমাদের লক্ষ্য রাখতে হবে।

সম্প্রতি এনার্জিপ্যাকের শেয়ারের কাট অফ প্রাইস ৩৫ টাকা নির্ধারিত হয়েছে। এ ভ্যালুয়েশন নিয়ে কি আপনি সন্তুষ্ট?

এ বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারব না। তবে আমি প্রচলিত যেসব ভ্যালুয়েশন রয়েছে, সেগুলোতে খুব একটা সমর্থন করি না। আপনার যে মেধা দেখা যায় না, এর প্রকাশ অন্যভাবে হয়। সেটি যখন প্রকাশ পাবে, তখনো সেটি বোঝা যাবে। শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) ও শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দিয়ে যে প্রথাগত ভ্যালুয়েশন হয়, সেটি কিন্তু পরিবর্তন আসা দরকার। আপনার ব্র্যান্ড ভ্যালু এটার কোনো ভ্যালুয়েশন হয় না এটাতে পরিবর্তন আসা দরকার। আপনার ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা ও বাজার সম্ভাবনা সেটিকেও ভ্যালুয়েশনের আওতায় আসা উচিত। আপনি যদি বর্তমানকে বিবেচনা করে ভ্যালুয়েশন করেন, তাহলে যথাযথ মূল্য আসবে না। এতে ভবিষ্যতে যারা পুঁজিবাজারে আসতে চায় তারা নিরুত্সাহিত হবে। তাই নতুন নতুন কোম্পানিকে পুঁজিবাজারে আনতে হলে তাদের যে ইন্টেলেকচুয়াল অ্যাসেট রয়েছে, সেটিরও ভ্যালুয়েশন করা দরকার।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন