বাংলাদেশের সঙ্গে আইবিটিএ চুক্তি চূড়ান্ত করার প্রতিশ্রুতি ইন্দোনেশিয়ার

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশ ইন্দোনেশিয়ার মধ্যে বাণিজ্য বিনিয়োগের সুযোগ-সুবিধা নিয়ে আলোচনার লক্ষ্যে ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বারস অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই) সোমবার ইন্দোনেশিয়ান চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (কাদিন) সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে বাইল্যাটারাল ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট অপরচুনিটিজ ইন দি অনগোয়িং গ্লোবাল প্যানডেমিক অ্যান্ড বিয়ন্ড শীর্ষক একটি ক্লাউড সম্মেলনে অংশ নেয়।

এতে মহামারী পরবর্তী সময়ে দুই দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার বিষয়ে আলোচনা করেন এফবিসিসিআই সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম, ইন্দোনেশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল (অব.) আজমল কবির, ইন্দোনেশিয়ার কাদিনের সভাপতি রোশন পার্কাসা রোস্লানি বাংলাদেশে নিযুক্ত ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রদূত রিনা পি সোমর্নো।

সম্মেলনে এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, ওআইসি, ডি-, আসিয়ান আঞ্চলিক ফোরাম (এআরএফ) ইন্ডিয়ান ওশান রিম অ্যাসোসিয়েশনের (আইওআরএ) সঙ্গে সম্পৃক্ততার মাধ্যমে মুসলিম ভ্রাতৃত্বের চেতনায় আমাদের দুই দেশের মধ্যে মানবিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশ ইন্দোনেশিয়ার মধ্যে ২০১৯-২০ অর্থবছরে ১৮ লাখ ডলারের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য হয়েছে। তবে বাণিজ্যে আরো উন্নয়ন ঘটাতে ওষুধ, কৃষি, পাটজাত পণ্য, চামড়াজাত পণ্য, জ্বালানি খনিজ খাতে দ্বিপক্ষীয় ভ্যালু চেইন ইনিশিয়েটিভ (বিভিসিআই) নেয়া যেতে পারে। আমরা আশা করি, ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তিতে (পিটিএ) অগ্রগতি আমাদের দ্বিমুখী বাণিজ্য আরো জোরদার করবে।

এফবিসিসিআইয়ের বর্তমান পর্ষদের ভিশন ২০৪১ চালু করাসহ অন্যান্য উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন ফজলে ফাহিম। মহামারীর সময়েও বাংলাদেশের অভূতপূর্ব সাফল্য উন্নয়নের বিষয়টি তুলে ধরে তিনি আরো বলেন, আইপি সুরক্ষাসহ আরওআই প্রযুক্তির মতো অর্থনীতির রূপান্তরের কারণে অন্যান্য সমমানের বাজারগুলোর তুলনায় বাংলাদেশ আজ বিনিয়োগকারীদের কাছে আকর্ষণীয় গন্তব্য হয়ে উঠেছে। প্রযুক্তি জ্ঞান স্থানান্তরের মাধ্যমে ইন্দোনেশীয় বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশের প্রতিযোগিতামূলক বাজারে এগিয়ে যেতে পারে এবং ১৬ কোটি গ্রাহক, ১৮০ কোটি জনসংখ্যার সার্ক আঞ্চলিক বাজার, এশিয়া-প্যাসিফিক ট্রেড এগ্রিমেন্ট সুবিধাসহ অনেক সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করতে পারে।

ইন্দোনেশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত তার বক্তব্যে বলেন, ইন্দোনেশীয় বিনিয়োগ চাহিদা পূরণের সম্ভাবনা রয়েছে বাংলাদেশের। আমি পারস্পরিক অন্তর্ভুক্তিমূলক দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের জন্য বিদ্যমান সরকারি বেসরকারি খাতকে কাজে লাগাতে উভয় খাতের প্রতিনিধিদের অনুরোধ করব।

অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে সহযোগিতার গুরুত্ব তুলে ধরে ইন্দোনেশিয়ার কাদিনের সভাপতি বলেন, আমরা আশাবাদী, ইন্দোনেশিয়া-বাংলাদেশ মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (আইবিটিএ) বিষয়ক চলমান আলোচনা দ্রুতই চূড়ান্ত রূপ পাবে, এর ফলে শুল্কহারে পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যিক সম্পর্কের উন্নতি ঘটবে। ইন্দোনেশীয় বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশের শক্তি, বিদ্যুৎ, পরিবহন, অবকাঠামো পর্যটন খাতে যৌথ উদ্যোগে আগ্রহ দেখিয়েছেন, যা উভয় দেশের জন্যই লাভজনক হতে পারে।

বাংলাদেশে নিযুক্ত ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রদূত বলেন, দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এগিয়ে গেলেও আমরা এখনো পূর্ণ সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে পারিনি, যা বর্তমানে আরো বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশে তিন দিনব্যাপী একটি বাণিজ্য মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছিল, যেখানে উভয় দেশের মধ্যে কয়েক কোটি ডলারের সম্ভাব্য বাণিজ্য সংগঠিত হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, মহামারীর কারণে বাংলাদেশের ইতিহাসে এই প্রথম আইবিটিএ চুক্তির তৃতীয় পর্যায়ে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে। তার পরও আমরা আশাবাদী, আগামী কয়েক মাসের মধ্যে একটি গঠনমূলক চুক্তি প্রণয়ন করতে সক্ষম হব, যার মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য আরো এগিয়ে যাবে।

কনফারেন্সে এফবিসিসিআই সভাপতি বাংলাদেশে কাঁচামাল আমদানি, মানবসম্পদ দক্ষতা উন্নয়ন, অটোমোবাইল, অটোমোবাইলের যন্ত্রাংশ, পাট, কৃষিজাত পণ্য প্রক্রিয়াকরণের মতো সম্ভাবনাময় খাতসহ রিসোর্স নলেজ শেয়ারিংয়ের বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন