কভিড-১৯-এ আরো কত মানুষ মরবে?

বণিক বার্তা ডেস্ক

নভেল করোনাভাইরাস মহামারী এখন নবম মাসে পা দিয়েছে। সম্প্রতি বৈশ্বিকভাবে মহামারীতে মৃত্যুর সংখ্যা মিলিয়ন পার করেছে। কিন্তু গবেষকরা সতর্ক করে বলেছেন, যে সংখ্যা দেখা যাচ্ছে তা মহামারীতে মৃত্যুর প্রকৃত সংখ্যার চেয়ে অনেক কম। সবচেয়ে বাজে যে পরিস্থিতি হতে পারে তাতে একদল মডেলার বলছেন, করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা জানুয়ারির পর থেকে এখন পর্যন্ত মিলিয়ন ছাড়িয়ে গেছে।

জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের কভিড কেস ট্রেকারের মতে, গত ২৮ সেপ্টেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে এক মিলিয়ন মৃত্যুর মাইলফলক স্পর্শ করেছে মহামারীটি।

সান্তিয়াগোতে অবস্থিত ইউনিভার্সিটি অব চিলির এপিডেমিওলজিস্ট আন্দ্রেয়া গোমেজ আয়োরার মতে, বাস্তবে সম্ভাবনা আছে যে আরো কিছু সময় আগেই সংখ্যাটি মাইলফলক ছাড়িয়ে গেছে। তিনি বলেন, করোনাভাইরাসে অনেক মৃত্যু সামনেই আসেনি। বিশেষ করে সেসব দেশে যেখানে টেস্টিং অতটা বিস্তৃত না। বিশ্বব্যাপী ডায়াগনোস্টিক সক্ষমতা বাড়ার পর থেকে মৃত্যুর সংখ্যাও ক্রমেই বেড়েছে।

তবুও এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত, বলেছেন ইয়েল ইউনিভার্সিটির মেডিসিন হিস্ট্রিয়ান নাওমি রজার্স। তার মতে, এটা এমনকি বিশেষ মহামারীর বিধ্বংসী রূপের আরো শক্তিশালী উদাহরণ।

ইউনিভার্সিটি অব ওয়াশিংটনের এপিডেমিওলজিস্ট আলী মোকদাদ বলেন, আমরা এর মাঝে অনেকগুলো মৃত্যু এড়াতে পারতাম। উদহারণস্বরূপ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কথা বলা যায়, দেশ হিসেবে যাদের মৃত্যুর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। যেটি কিনা প্রায় দুই লাখের বেশি। এটা খুব সম্ভব ছিল যে দেশব্যাপী জনসম্মুখে মাস্ক পরার আদেশ জারি করার মাধ্যমে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের হার হ্রাস করা।

তিনি সময় আরো বলেন, সামনের মাসগুলোতে আরো কত মানুষ মৃত্যুবরণ করবে তা নির্ভর করছে মহামারীর বিরুদ্ধে সরকারগুলো কী সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নেয় তার ওপর।

অন্ধকার দিনগুলো

বিভিন্ন  দেশের কভিড-১৯-সংক্রান্ত আনুষ্ঠানিক ডাটা ব্যবহার করে আইএইচএমই বিভিন্ন পরিস্থিতিতে মহামারীর প্রভাব সম্পর্কে পূর্বাভাস দিয়েছে। গবেষকদের হিসাব মতে, যদি বর্তমান ধারা আগামী জানুয়ারি পর্যন্ত অব্যাহত থাকে তবে সে পর্যন্ত সর্বমোট মৃত্যুর সংখ্যা গিয়ে দাঁড়াবে . মিলিয়নে। তবে সেটি . মিলিয়নে নামিয়ে আনা সম্ভব যদি প্রতিটি দেশ সার্বজনীনভাবে মাস্ক পরার রীতি অনুসরণ করে। তাদের মডেলটি আরো বলেছে, যদি অন্তত ৯৫ শতাংশ জনগণ সাতদিনের মধ্যে মাস্ক পরা শুরু করে তবে জানুয়ারি পর্যন্ত গিয়ে প্রত্যাশিত মৃত্যুর সংখ্যা বর্তমান পরিস্থিতির তুলনায় ৩৩ হাজার ৩০০ থেকে ১৭ হাজার ৪৫০- নেমে আসতে পারে।

কিন্তু ভিন্ন পরিস্থিতিতে অবস্থা আরো খারাপ হতে পারে। যদি সরকার সামাজিক দূরত্ব এবং সমাবেশ থেকে বিধিনিষেধ তুলে নেয় তবে মৃত্যুর সংখ্যা আরো বেড়ে যেতে পারে। যা কিনা জানুয়ারি ২০২১ সালে গিয়ে দাঁড়াতে পারে . মিলিয়নে। যেখানে বিশ্বব্যাপী দৈনিক ৭২ হাজার ৭০০ মৃত্যুর দেখা মিলতে পারে।

মোকদাদ বলেন, আমরা কঠিন একটি সময়ের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। আনুষ্ঠানিকভাবে কভিড-১৯- তালিকাভুক্ত নয় এমন মৃত্যুও মহামারী ঘটিয়েছে। অবশ্য অনেক গবেষক মনে করেন মৃত্যুর সংখ্যা এক মিলিয়ন পার করা ইতিবাচক ফলও আনতে পারে। রজার্স বলেন, আমি আশা করি, এক মিলিয়নের ধারণার মধ্যে কিছু একটা আছে। যা কিনা বেশ শক্তিশালী সংখ্যা। এটি জেগে ওঠার সম্ভাব্য একটি মুহূর্ত হতে পারে।

নেচার

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন