দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) থাকা অবস্থায় হামলার শিকার হয়ে মুমূর্ষু অবস্থা থেকে ‘অসাধারণভাবে’ ফিরে এসেছেন ওয়াহিদা খানম। চিকিৎসকরা বলছেন, ‘ তিনি খুব দ্রুত রিকভার করেছেন। এটা তার জন্য বিরাট একটা এচিভমেন্ট।’
আজ বৃহস্পতিবার তিনি ছাড়পত্র নিয়ে হাসপাতাল ত্যাগ করেছেন। তবে তাকে পক্ষাঘাতগ্রস্তদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসন কেন্দ্র ‘সিআরপি’ হাসপাতালে তাকে পরবর্তী চিকিৎসা নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। একই ঘটনায় আহত ইউএনও ওয়াহিদার বাবা মুক্তিযোদ্ধা ওমর আলী শেখকে (৭০) ছাড়পত্র দিয়ে সিআরপিতে যাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
আজ হাসপাতাল ত্যাগ করার সময় তিনি নিজে হেঁটেই অ্যাম্বুলেন্সে উঠেছেন। তিনি হাসপাতাল ত্যাগের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন, ইউএনও ওয়াহিদার চিকিৎসার জন্য গঠিত মেডিক্যাল বোর্ডের প্রধান ও নিউরো ট্রমা বিভাগের প্রধান ডা. মোহাম্মদ জাহেদ হোসেন।
তিনি বলেন, তিনি (ওয়াহিদা) শুরুতে ওরিয়েন্টেট ছিলেন না। দুয়েকদিন পর তিনি ওরিয়েন্টেট হলেন, তবে তিনি তার ডান পাশ একদম নাড়াতে পারছিলেন না, সেখানে ওনার পাওয়ার শূন্য ছিল। পরে এক সপ্তাহ পর থেকে তিনি ধীরে ধীরে ডানপাশটা নাড়াতে শুরু করেন। পরে ধীরে ধীরে তিনি পুরোপুরি নড়াচড়া করতে পারছেন এবং আজকে তিনি নিজেই হেঁটেই বেরিয়ে গেলেন। সুতরাং ওনার অপারেশনটা শতভাগ সফল বলে বলতে পারি।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তার ডান হাত এবং ডান পায়ে শক্তি ফিরে এসেছে। তবে শতভাগ ফিরে আসেনি, সামান্য কিছু বাকী আছে। আমরা তাকে সিআরপিতে রেফার করেছি। সেখানে তিনি ফিজিও থেরাপি নিলে আশা করি শতভাগ শক্তি ফিরে আসবে।
তিনি বলেন, আশা করছি তিনি (ওয়াহিদা) আগামী এক মাসের মধ্যে কাজে যোগ দিতে পারবেন।
প্রসঙ্গত, গত ২ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে উপজেলা পরিষদ চত্বরে ইউএনওর সরকারি বাসভবনে ঢুকে হামলা করে দুর্বৃত্তরা। ভারী ও ধারাল অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে এবং আঘাত করে ইউএনও ওয়াহিদাকে গুরুতর আহত করে তারা।
এ সময় মেয়েকে বাঁচাতে এগিয়ে এলে বাবা মুক্তিযোদ্ধা ওমর আলী শেখকে (৭০) জখম করে দুর্বৃত্তরা। পরে তারা অচেতন হয়ে পড়লে মৃত ভেবে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। ভোরে স্থানীয়রা টের পেয়ে তাদের উদ্ধার করেন।
ওয়াহিদাকে প্রথমে রংপুরে ও এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে কে ঢাকায় আনা হয়। বর্তমান তিনি ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।