বেশির ভাগ দেশ কভিড-১৯ মহামারীর বিভিন্ন প্রভাব থেকে নারীদের পর্যাপ্ত সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ হচ্ছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। মহামারী নিয়ে সরকারের প্রতিক্রিয়াগুলো ট্র্যাক করে সংস্থাটির একটি নতুন ডাটাবেজ এ তথ্য জানিয়েছে। বিশ্বজুড়ে জেন্ডার ট্র্যাকারটি দেখেছে, কীভাবে ২০৬টি দেশ নারীদের প্রতি সহিংসতার সমাধান করে এবং নারীদের অর্থনৈতিক সুরক্ষা জোরদার করে।
এর মধ্যে ৪২টি দেশে এ ক্ষেত্রগুলোর কোনোটিতেই নারীদের সমর্থন দেয়ার নীতি ছিল না। কেবল ২৫টি দেশ তিনটি বিভাগেই কিছু পদক্ষেপ নিয়েছিল। যুক্তরাজ্য সহিংসতার শিকার নারীদের সহায়তার জন্য পদক্ষেপ নিলেও তাদের মহামারী প্রতিক্রিয়া পরিকল্পনায় নারীদের অর্থনৈতিক সুরক্ষায় কোনো প্রচেষ্টা ছিল না।
কভিড-১৯ মহামারীর সময়ে ঘরে নারীদের প্রতি সহিংসতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ডাটাবেসে বলা হয়েছে, ১৩৫টি দেশ জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতার ক্ষেত্রে হেল্পলাইন ও আশ্রয়কেন্দ্রের মতো ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিল। এ মাসের শুরুতে জাতিসংঘ পূর্বাভাস দিয়েছিল, মহামারী ও এর ফলে নারীদের মধ্যে দারিদ্র্যের হার ৯ দশমিক ১ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে।
জুলাই মাসে ম্যাককিন্সের ব্যবসা ও অর্থনীতি গবেষণা শাখা ম্যাককিন্সে গ্লোবাল ইনস্টিটিউট জানিয়েছিল, এ সংকটে পুরুষদের তুলনায় নারীদের জন্য কর্মসংস্থান ১ দশমিক ৮ গুণ বেশি ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলেছে। তবে লিঙ্গসমতার বিষয়ে যদি এখন পদক্ষেপ নেয়া হয়, তবে আগামী দশকের মধ্যে বিশ্বজুড়ে জিডিপিতে ১৩ ট্রিলিয়ন ডলার যুক্ত হতে পারে।
মহামারীতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ও বয়স্ক ব্যক্তিরা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ায় ৬১টি দেশ নারীদের ওপর যত্নের বোঝা কমাতে পদক্ষেপ নিয়েছিল। জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) পরিচালক মির্জানা স্পোলজেরিক এগার বলেছেন, কভিড-১৯-এর প্রভাব হ্রাস করতে সরকারের চালু করা অনেক ব্যবস্থা দীর্ঘমেয়াদি নীতিতে পরিণত হতে পারে। এর মাধ্যমে আমাদের উন্নয়নের গতিপথ পরিবর্তন করার সম্ভাবনা রয়েছে। এবং আমাদের এ সুযোগটিকে কাজে লাগানো উচিত।
জাতিসংঘের জেন্ডার-সমতা ও নারীর ক্ষমতায়ন সংস্থা ইউএন উইমেনের ডেপুটি এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর আসা রেগনার বলেছেন, আমি মনে করি কেয়ারের বিষয়টি মাঝে মাঝে এমন কিছু হিসেবে বিবেচিত হয়, যা ৫টার পর বাড়িতে ঘটে থাকে এবং আমরা সে সম্পর্কে কিছুই করতে পারি না। সরকার যদি সত্যিই এটাকে পরিবর্তন করতে চায়, তবে তারা অনেক কিছু করতে পারে।
দ্য গার্ডিয়ান