বিগত পঞ্চাশ-ষাট
বছরে
সারা
বিশ্বের
কৃষিতে
খুব
দ্রুত
নানা
পরিবর্তন
আনা
হয়েছে।
কৃষির
প্রাকৃতিক
বৈশিষ্ট্যে
বদল
ঘটিয়ে
কৃষির
রূপান্তর
ঘটানো
হয়েছে
কলকারখানার
আদলে।
কৃষি
আর
কৃষি
থাকেনি,
হয়ে
গিয়েছে
খাদ্য
উৎপাদনের
কারখানা
বা
ইন্ডাস্ট্রি।
কৃষি
হয়ে
উঠেছে
শিল্প-কারখানার
মতোই
খাদ্য
উৎপাদনের
ফ্যাক্টরি।
কিন্তু আদিতে
কৃষি
প্রাকৃতিক
বিবর্তনের
অন্তর্গত
প্রক্রিয়া
হিসেবে
হাজির
হয়েছিল,
যা
ছিল
মানুষের
সঙ্গে
প্রকৃতির
সম্বন্ধ
চর্চার
একটি
ধরন।
বলাবাহুল্য,
এ
সম্বন্ধ
আমূল
বদলে
দেয়া
হচ্ছে।
প্রকৃতি
হয়ে
উঠেছে
নিছকই
উৎপাদনের
উপায়
মাত্র।
অথচ
প্রাকৃতিকভাবেও
কৃষির
বিবর্তন
হয়ে
এসেছে
শত
শত
বছর
ধরে।
যার
কারণে
ফসলের
জাতের
সংখ্যা
বেড়েছে,
ধরন
বদলেছে।
মানুষ
তার
সামাজিক,
সাংস্কৃতিক,
ধর্মীয়
রীতিনীতির
সঙ্গে
মিলিয়ে
কোনো
কোনো
জাত
গ্রহণ
করেছে,
কোনোটা
করেনি।
তাই
খাদ্যের
ক্ষেত্রে
এত
বৈচিত্র্য
দেখা
যায়।
এ
বাংলাদেশের
মধ্যেই
শত
শত
রকমের
খাওয়ার
পদ্ধতি
ও
প্রকরণ
আমরা
দেখি।
অল্প সময়ে
যেসব
পরিবর্তন
দেখছি
তা
এত
দ্রুত
সময়ে
কী
করে
ঘটল?
কেনই
বা
হচ্ছে?
গত
শতাব্দীর
পঞ্চাশ-ষাটের
দশকে
কৃষিতে
খুব
দ্রুত
যেসব
পরিবর্তন
রাষ্ট্রীয়ভাবে
এশিয়ার
কৃষিপ্রধান
দেশগুলোতে
চাপিয়ে
দেয়া
হয়েছিল
তা
মূলত
এসেছিল
কৃষিকে
দেশের
অর্থনৈতিক
‘উন্নয়নের’
একটা
অংশ
করে
নেয়ার
কথা
বলে।
এ
উন্নয়ননীতি
ও
পরিকল্পনার
অনুমান
হচ্ছে
কৃষি
আর
প্রকৃতির
নিয়মে
চলবে
না,
চলবে
উন্নয়নদাতাদের
নির্দেশনায়।
সেটা
করতে
হলে
কৃষি
যেভাবে
ক্ষুদ্র
ও
মাঝারি
কৃষকরা
নিজের
মতো
করেন,
সেভাবে
করতে
দেয়া
যাবে
না।
তাদের
‘আধুনিক’
করতে
হবে,
তাদের
‘উৎপাদনশীলতা’
বাড়াতে
হবে।
দ্বিতীয়
বিশ্বযুদ্ধের
পর
গড়ে
ওঠা
ব্রেটন
উডস
প্রতিষ্ঠান
যেমন
বিশ্বব্যংক,
আইএমএফ
আধুনিক
কৃষি
বা
সবুজ
বিপ্লব
‘প্রস্তাব’
হিসেবে
নয়,
যা
নিয়ে
আলাপ-আলোচনা
হতে
পারে,
কিন্তু
তারা
দিয়েছে
‘প্রেসক্রিপশন’
হিসেবে।
ধরে
নিয়েছে
যে
উন্নয়নশীল
দেশগুলো
অসুস্থ,
তাই
তাদের
কাছ
থেকে
অর্থনৈতিক
ঋণ
পেতে
হলে
ওষুধটাও
নিতে
হবে।
এটা
উন্নয়ন
সহযোগিতা
ও
ঋণের
শর্ত
আকারে
তৃতীয়
বিশ্বের
দেশে
হাজির
করল।
তাদের
কথা,
বাঁচতে
হলে
আধুনিক
কৃষি
করতে
হবে,
এসব
দেশের
জনসংখ্যা
বেশি।
উন্নয়নের
সাহায্য
পেতে
হলে
একদিকে
জনসংখ্যা
কমাতে
হবে
(জনসংখ্য নিয়ন্ত্রণ
কর্মসূচি)
জন্মনিয়ন্ত্রণ
পদ্ধতি
ব্যবহারের
মাধ্যমে,
অন্যদিকে
কৃষিতে
সার-কীটনাশক-সেচ
ও
উফশী
বা
ইরি
ধানের
বীজের
ব্যবহারের
মাধ্যমে
খাদ্য
উৎপাদনের
‘পরিমাণ’
বাড়াতে
হবে।
কিন্তু
শেষমেশ
আধুনিক
কৃষির
প্রবর্তন
করা
হলেও
আমরা
যা
পেয়েছি
তা
হচ্ছে
মেশিন
ও
রাসায়নিক
সারের
ওপর
নির্ভরশীলতা
এবং
সার-কীটনাশক-আগাছানাশকের
বিষাক্ত
বাণিজ্য।
কৃষির
কোনো
অস্তিত্ব
আর
অবশিষ্ট
রইল
না।
আধুনিক কৃষি
বা
সবুজ
বিপ্লবের
প্যাকেজে
উচ্চফলনশীল
ধান
বা
গমের
বীজের
সঙ্গে
রয়েছে
রাসায়নিক
সার
ও
কীটনাশক।
আমাদের
কৃষকদের
হাজার
জাতের
ধানের
বীজ,
যে
বীজে
রাসায়নিক
সার-কীটনাশকের
প্রয়োজন
নেই
তারা
দ্রুত
হারিয়ে
গেল।
বিদেশের
ল্যাবরেটরিতে
তৈরি
বামুন
জাতের
ধানের
বীজ
ওজন
দেয়া
হলো।
সেই
থেকে
ধারাবাহিকভাবে
কৃষি
বিষাক্ত
হতে
থাকল।
শুরুতে কৃষিতে
যে
কৃত্রিম
বা
সিনথেটিক
সার
ব্যবহার
করা
হয়েছিল
তার
উত্পত্তি
সবুজ
বিপ্লবের
অনেক
আগের।
এ
সারের
প্রধান
উপাদান
ছিল
অ্যামোনিয়া।
সারা
বিশ্বের
কোটি
কোটি
কৃষক
জানতেই
পারেনি
যে
কৃষিতে
নাইট্রোজেন
সার
দেয়ার
নামে
যে
সার
দেয়া
হয়েছিল
তা
একটি
ক্ষতিকর
রাসায়নিক
দ্রব্য।
অ্যামোনিয়া
কৃষির
জন্য
নয়
মূলত
প্রথম
বিশ্বযুদ্ধে
(১৯১৪-১৯১৮)
রাসায়নিক
অস্ত্র
তৈরিতে
ব্যবহার
হয়েছিল।
এ
রাসায়নিক
অস্ত্র
প্রায়
১০
লাখ
মানুষ
হত্যার
কারণ
হয়েছিল
এবং
প্রথম
বিশ্বযুদ্ধকে
দীর্ঘায়িত
করেছিল।
জার্মানির
দুজন
রাসায়নিক
বিজ্ঞানী
ফ্রিত্জ
হেবার
ও
কার্ল
বোসচের
এ
আবিষ্কার
জার্মান
(বহুজাতিক) রাসায়নিক
সার
কোম্পানি
বিএএসএফ
কৃত্রিম
সার
তৈরি
করে
বাজারজাত
করেছিল।
হেবার
১৯১৮
সালে
অ্যামোনিয়া
আবিষ্কারের
জন্য
নোবেল
পুরস্কার
পেলেও
তা
বিতর্কিত
হয়েছিল।
কারণ
এ
বিষাক্ত
অস্ত্রের
উদ্ভাবনকারী
হিসেবে
ততদিনে
হেবার
একজন
যুদ্ধাপরাধী
হিসেবে
চিহ্নিত
হয়েছিলেন।
এ
অ্যামোনিয়ার
ভয়াবহতা
২০২০
সালে
এসেও
আমরা
দেখেছি।
বৈরুতের
একটি
বন্দরে
২৭৫০
টন
অ্যামোনিয়াম
নাইট্রেট
গুদামজাত
করা
ছিল
সেটারই
বিস্ফোরণ
ঘটেছিল,
যার
পরিণতিতে
১৩৫
জনের
অধিক
মানুষ
নিহত
হয়
এবং
হাজারের
অধিক
মানুষ
আহত
হয়েছে,
ঘর-বাড়ি,
অফিস-আদালত
বিধ্বস্ত
হয়।
অর্থাৎ রাসায়নিক
কৃষির
গোড়ায়
যে
অ্যামোনিয়া
ব্যবহার
হয়েছিল
তা
ছিল
মানুষ
হত্যাকারী
দ্রব্য
অথচ
খুব
সহজেই
নাইট্রোজেনের
জন্য
কৃষিতে
সার
হিসেবে
ব্যবহার
করা
হয়েছিল।
আধুনিক
কৃষির
একটি
মূলমন্ত্র
বা
ম্যাজিক
হিসেবে
এসেছে
নাইট্রোজেন
সংযোজনের
বিষয়টি।
মাটিতে
নাইট্রোজেন
বাড়ালে
ফসলের
ফলন
বাড়বে
এ
বিষয়টি
আধুনিক
কৃষিতে
খুব
গুরুত্বের
সঙ্গে
দেখা
হয়েছিল,
এখনো
হচ্ছে।
তবে
এ
ধারণা
কৃষকদের
আদিকাল
থেকেই
ছিল।
তারা
রাসায়নিক
নাইট্রোজেন
নয়,
নাইট্রোজেন
সরবরাহ
করে
এমন
ফসল
লাগিয়েই
তা
মেটাতে
পারতেন।
রাসায়নিক
সারের
অ্যামোনিয়ায়
স্বাস্থ্য
ও
পরিবেশ
ক্ষতির
বিবেচনায়
পরবর্তীকালে
অ্যামোনিয়া
সারের
ব্যবহার
কমে
আসে,
পরিবর্তে
আসে
অন্য
আর
একটি
নাইট্রোজেন
সার,
যা
ইউরিয়া
সার
হিসেবে
পরিচিত।
বাংলাদেশে
আধুনিক
কৃষিতে
যেসব
রাসায়নিক
সার
ব্যবহার
হয়
তার
মধ্যে
৭০-৭৫
শতাংশ
ইউরিয়া
সার
ব্যবহার
হয়।
ইউরিয়া
সার,
যার
রাসায়নিক
ফর্মুলা
CO(NH2)2
মূলত
নাইট্রোজেন
সমৃদ্ধ
রাসায়নিক
সার,
যা
নির্জল
অ্যামোনিয়া
দিয়েই
তৈরি
হয়।
অর্থাৎ
অ্যামোনিয়া
সার
সরাসরি
বন্ধ
হলেও
ইউরিয়ার
মাধ্যমে
তা
এখনো
কৃষিতে
বহাল
রয়েছে।
বাংলাদেশে
বছরে
২৭
লাখ
টন
সার
ব্যবহার
হয়
কৃষিতে,
অধিকাংশই
ধান
চাষে।
মাটিতে
ইউরিয়া
সার
দেয়ায়
ফসল
সবুজ
হয়ে
বেড়ে
ওঠে।
তাতে
কৃষক
মনে
করে
ফসল
ভালো
হচ্ছে।
কিন্তু
জমিতে
সার
ব্যবহারের
ফলে
ক্রমে
উর্বরতা
শক্তি
কমে
যাচ্ছে।
তার
একটি
প্রমাণ
হচ্ছে
প্রতি
হেক্টর
জমিতে
আগের
তুলনায়
বেশি
সার
দিতে
হয়।
২০০২
সালে
প্রতি
হেক্টরে
১৮৮.৬
কেজি
সার
দিতে
হতো,
২০১৬
সালে
তা
বেড়ে
হয়েছে
২৮৯.৪
কেজি,
প্রায়
১০০
কেজি
বেশি
সার
দিতে
হচ্ছে,
অথচ
ফলন
সেই
তুলনায়
বাড়ছে
না।
অন্যদিকে
মাটি
নষ্ট
হচ্ছে,
পানিতে
গড়িয়ে
গিয়ে
নদী-নালার
পানি
বিষাক্ত
হচ্ছে।
মরছে
মাছ
ও
অন্যান্য
জলজ
প্রাণী।
কৃষি
মন্ত্রণালয়ের
পরিসংখ্যানে
দেখা
যাচ্ছে,
১৯৮২-৮৩
সালে
ইউরিয়া
সার
বিক্রির
পরিমাণ
ছিল
৬
লাখ
২৯
হাজার
টন,
২০০৫-০৬
সালে
তা
বেড়ে
হয়েছে
২৪
লাখ
৫১
হাজার
টন,
অর্থাৎ
চার
গুণ
বেড়েছে।
ইউরিয়া
দেশে
উৎপাদন,
আমদানিও
করা
হয়।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধ
থেকে
কৃষিতে
সার
হিসেবে
এসেছে
বিষাক্ত
অ্যামোনিয়া;
দ্বিতীয়
বিশ্বযুদ্ধের
পর
আরো
বিষাক্ত
উপহার
অপেক্ষা
করে
ছিল
কৃষির
জন্যে।
ডিডিটি
(ডাইক্লোরো-ডাইফিনাইল-ট্রাইক্লোরোইথেন)
প্রথম
কৃত্রিম
কীটনাশক,
যা
দ্বিতীয়
বিশ্বযুদ্ধের
দ্বিতীয়ার্ধে
ম্যালেরিয়া
ও
টায়ফাস
রোগ
নিয়ন্ত্রণের
জন্য
ব্যবহার
করা
হয়েছিল।
এর
উদ্ভাবনকারী
সুইস
বিজ্ঞানী
পল
মুইলারও
নোবেল
পুরস্কার
পেয়েছিলেন
১৯৪৮
সালে
।
অথচ
এই
ডিডিটি
এতই
বিষাক্ত
যে
তার
ব্যবহারে
শুধু
মশা
বা
কীট
নয়,
অন্যান্য
প্রাণী
মারা
গেল;
এমনকি
মানুষের
স্বাস্থ্য
মারাত্মক
হুমকিতে
পড়ে
গেল।
ফলে
১৯৭২
সালে
যুক্তরাষ্ট্রের
এনভায়রনমেন্টাল
প্রটেকশন
এজেন্সি
(ইপিএ) ডিডিটি
নিষিদ্ধ
ঘোষণা
করল।
ডিডিটি
ছাড়াও
আরো
অনেক
কীটনাশক
কৃষি
ফসল
উৎপাদনে
ব্যবহার
হচ্ছে।
এবং
এগুলো
প্রতিটির
ক্ষতির
দিক
ক্রমেই
সবার
চোখের
সামনে
উঠে
আসছে।
বিশ্ব
স্বাস্থ্য
সংস্থার
তথ্যমতে
প্রতি
বছর
৫০
লাখ
কৃষি
শ্রমিক
কীটনাশক
প্রয়োগ
করতে
গিয়ে
বিষক্রিয়ায়
আক্রান্ত
হয়
এবং
২০
হাজার
শ্রমিক
মারা
যায়।
তাছাড়া
প্রায়
২০০
বিভিন্ন
ধরনের
রোগ
যার
মধ্যে
মারাত্মক
ক্যান্সার,
কিডনি
রোগ,
ত্বকের
সমস্যা,
নার্ভাস
সিস্টেম
নষ্ট
হওয়াসহ
শরীরে
বিভিন্ন
অঙ্গের
ক্ষতি
করছে।
তাছাড়া
মাটি,
পানি
এমনকি
বাতাসও
কীটনাশক
প্রয়োগে
দূষিত
হচ্ছে।
বাংলাদেশে আধুনিক
কৃষিতে
রাসায়নিক
সারের
পাশাপাশি
কীটনাশকের
ব্যবহার
করা
হয়
ব্যাপকভাবে।
তার
মধ্যে
ডিডিটি
তো
আছেই,
অন্যান্য
অনেক
কীটনাশক,
যার
ক্ষতি
পরিবেশ
ও
মানুষের
জন্য
অবর্ণনীয়।
তবুও
কৃষি
ফসল
উৎপাদনে
ব্যাপকভাবে
ব্যবহার
হচ্ছে।
বাংলাদেশে
প্রায়
৪০০
কোম্পানি
বছরে
৪০
হাজার
টন
কীটনাশক
আমদানি
করে।
তারা
খুব
ভালো
করে
জানে
যে
যারা
কীটনাশক
প্রয়োগ
করে
সে
সব
শ্রমিকের
মাত্র
১
শতাংশ
নিরাপদ
মাত্রায়
কীটনাশক
দিতে
জানে।
এ
কথা
বলছে
খোদ
কীটনাশক
আমদানিকারী
কোম্পানির
সংগঠন।
এটা
জেনেও
তাদের
ব্যবসা
চলছে।
কৃষি
মন্ত্রণালয়ের
অধীনে
প্লান্ট
প্রটেকশন
ইউনিট
কীটনাশকের
অনুমোদন
দেয়,
কিন্তু
তারা
মানুষের
শরীরে
ও
পরিবেশে
এর
ক্ষতিকর
প্রভাব
সম্পর্কে
কোনো
দায়িত্ব
নেয়
না।
আধুনিক কৃষি
ফসল
উৎপাদনের
জন্য
একের
পর
এক
কীট
‘দমন’
বা
নাশের
পদ্ধতির
ওপর
নির্ভরশীল
হয়ে
পড়ে।
কারণ
আধুনিক
কৃষিতে
যে
বীজ
ব্যবহার
করা
হয়
সেসব
বীজ
আসে
ভিন্ন
দেশ
থেকে,
ল্যাবরেটরিতে
তৈরি
করা
বীজ।
ধানের
জন্য
আসে
বামুন
জাত।
এরপর
এসেছে
হাইব্রিড।
তার
প্রধান
কাজ
হচ্ছে
ফসলের
উৎপাদনশীলতা
বেশি
দেখানো।
ধানের
ক্ষেত্রে
শুধু
ধানের
গোছা
কত
হলো
সেটাই
গুরুত্বপূর্ণ,
খড়
নয়।
অর্থাৎ
ধানের
জাত
নির্বাচনের
মধ্য
দিয়ে
গোখাদ্য
উৎপাদনের
যে
পরিকল্পনা
কৃষক
করতেন,
সেটা
আর
কার্যকর
রইল
না।
কৃষকের
ঘরে
গবাদি
পশু
পালন
অসম্ভব
হয়ে
পড়ল।
আধুনিক
ফসলের
সঙ্গে
অন্য
কোনো
ফসলও
থাকতে
পারবে
না।
এর
জন্য
সার-কীটনাশক
সব
দিতে
হবে
মাপজোঁক
করে।
যে
জমিতে
দেবে
সেই
জমিতে
অন্য
কোনো
উদ্ভিদও
যেন
সারের
ছিটেফোঁটাও
না
পায়
তার
জন্য
ধান
ছাড়া
অন্য
সব
উদ্ভিদকে
বলা
হলো
‘আগাছা’;
তাদের
উপড়ে
ফেলতে
হবে
নয়তো
পোকা
বা
কীট
যেমন
মারে
তেমনি
ঘাস
বা
অন্য
উদ্ভিদও
মেরে
ফেলতে
হবে।
এ
ওষুধও
এখন
ব্যবহার
হচ্ছে,
এর
নাম
আগাছানাশক।
ইংরেজিতে
‘হার্বিসাইড’।
শ্রমিকের
খরচ
বাঁচাতে
বিষ
দিয়ে
ঘাস
বা
অন্যান্য
লতাগুল্ম
মেরে
ফেলাই
কৃষিতে
আধুনিকতার
লক্ষণ।
আগাছানাশের প্রধান
রাসায়নিক
উপাদান
গ্লাইফোসেট
ফসলের
আশপাশে
আগাছা
মেরে
ফেলার
জন্য
ব্যবহার
হয়ে
আসছে।
অন্যান্য
অনেক
ব্রান্ডের
আগাছানাশক
থাকলেও
সবচেয়ে
বেশি
বাজারজাত
করা
হয়
একটি
বহুজাতিক
কোম্পানির
ব্রান্ড
রাউন্ডআপ,
যার
অন্যতম
প্রধান
উপাদান
হচ্ছে
গ্লাইফোসেট।
১৯৭৪
সাল
থেকেই
যুক্তরাষ্ট্রে
গ্লাইফোসেট
ব্যবহার
হয়ে
আসছে।
বাংলাদেশেও
এর
ব্যবসা
ক্রমে
বাড়ছে।
এ
গ্লাইফোসেটের
স্বাস্থ্য
ক্ষতি
এমন
পর্যায়ে
গেছে
এর
বিরুদ্ধে
মামলা
যুক্তরাষ্ট্রের
আদালতে
উঠেছে।
সানফ্রান্সিসকো
আদালতের
জুরিরা
সর্বসম্মত
রায়ে
জানান,
ক্যালিফোর্নিয়ার
এডউইন
হার্ডম্যানের
নন-হজকিনস
লিম্ফোমায়
আক্রান্ত
হওয়ার
পেছনে
ভূমিকা
রেখেছে
গ্লাইফোসেট।
অর্থাৎ
প্রমাণ
হয়েছে
যে
গ্লাইফোসেট
ব্যবহারের
কারণে
ক্যান্সার
হয়েছে।
বাংলাদেশে আগাছানাশক
ধান
চাষে
বেশি
ব্যবহার
হয়
না,
তবে
সবজি,
ফুল,
তামাক
চাষে
শ্রমিকের
খরচ
বাঁচাতে
হার্বিসাইড
ব্যবহার
করা
হয়।
শহরে
যারা
সুন্দর
বাগান
করেন,
তারাও
এ
আগাছানাশক
ব্যবহার
করে
আগাছামুক্ত
থাকেন।
কত
সুন্দর!!
সবচেয়ে
বেশি
হার্বিসাইড,
বিশেষ
করে
রাউন্ডআপ,
ব্যবহার
হয়
চা
বাগানে।
কৃষিতে কৃত্রিম
রাসায়নিক
বা
মাটিতে
নাইট্রোজেন
সার
দিয়ে
বিষাক্ত
করা
হয়েছে।
এতে
মাটি
উর্বরতা
হারাচ্ছে,
শক্ত
সিমেন্টের
মতো
হয়ে
যাচ্ছে।
তাই
প্রতি
বছর
ফসল
করতে
আরো
বেশি
সার
দিতে
হচ্ছে।
এরপর
সরাসরি
ফসলের
ওপর
আক্রমণ।
ফসলে
পোকামাকড়ের
আক্রমণের
দোহাই
দিয়ে
আরো
বিষ
এল।
আধুনিক
কৃষির
এককাট্টা
ফসলের
জমিতে
পোকাগুলোও
বেপরোয়া
হয়ে
গেল।
পোকার
আক্রমণ
বেড়েই
চলল,
সঙ্গে
বাড়ল
কীটনাশকের
ব্যবহার।
অথচ
যেসব
পোকা
ফসলের
উপকার
করতে
পারত
তারাও
বাঁচতে
পারল
না।
মৌমাছি
বিলুপ্ত
হচ্ছে
বলে
এখন
বিশ্বব্যাপী
তোলপাড়
হচ্ছে।
তারপরের
ধাপ
আরো
করুণ।
আধুনিক
কৃষি
এতই
নিষ্ঠুর
যে
যে
গাছটি
থেকে
সে
ফল
পেতে
চায়
তার
বাইরে
যারা
আছে
তাদের
টিকতে
দেয়া
হবে
না।
তাই
ঘাস
বা
লতাগুল্মও
হয়ে
গেল
‘আগাছা’।
অথচ
এ
ঘাস-লতাগুল্মের
মধ্যে
আছে
গরু-ছাগলের
খাবার,
শাক,
ওষুধি
লতা-পাতা—সব
শেষ
হতে
হবে।
এবং
তাদের
মারতে
হবে
বিষ
দিয়েই!
এ
তিন
ধরনের
বিষাক্ততা
দিয়ে
বোঝা
যায়
আধুনিক
কৃষি
বিষাক্ত
কৃষি
ছাড়া
কিছু
নয়।
কিন্তু প্রকৃতি
তাই
বলে
চুপ
করে
নেই।
বিষাক্ত
কৃষি
যতই
মারুক
প্রাকৃতিকভাবে
কৃষির
গুরুত্ব
ফিরে
আসছে।
কৃষি
আবার
বিষমুক্ত
হওয়ার
যুগ
ফিরে
আসছে।
মানুষ
বিষাক্ত
চকচকে
ফসলে
আকৃষ্ট
হতে
পারছে
না।
তারা
চায়
নিরাপদ
থাকতে,
সুস্থ
থাকতে,
তাই
তাদের
ইচ্ছা
‘বিষমুক্ত’
খাবার
পাওয়ার।
তার
জন্য
দামও
বেশি
দিতে
মানুষ
রাজি।
তবুও
মানুষ
বিষ
চায়
না।
বিষ
খেয়ে
কে
মরতে
চায়?
যেসব
কোম্পানি
বিষ
দিয়ে
মানুষকে
ক্ষতিগ্রস্ত
করেছে
তাদের
এখন
আদালতের
কাঠগড়ায়
দাঁড়াতে
হচ্ছে।
তাদের
বিরুদ্ধে
রায়
দেয়া
হচ্ছে,
তারা
দোষী
প্রমাণিত
হচ্ছে।
বাংলাদেশের মতো
একটি
অত্যন্ত
প্রাণবৈচিত্র্যে
ভরপুর
দেশের
কৃষিকে
বিষাক্ত
করেছে
তারা
কি
মানবতাবিরোধী
নয়?
তাদের
কি
বিচারের
কাঠগড়ায়
দাঁড়াতে
হবে
না?
তবে ভালো
লাগছে
যে
ছোট
ছোট
হলেও
কৃষিকে
বিষমুক্ত
করার
উদ্যোগ
নেয়া
শুরু
হয়েছে।
আশা
করি
জাতীয়
পর্যায়ে
তার
প্রতিফলন
ঘটবে।
ফরিদা আখতার:
নির্বাহী
পরিচালক,
উন্নয়ন
বিকল্পের
নীতিনির্ধারণী
গবেষণা
(উবিনীগ)