খুমেক ও বিশেষায়িত আবু নাসের হাসপাতাল

জনবল সংকটে বার্ন ইউনিটের স্বাস্থ্যসেবা ব্যাহত

বণিক বার্তা প্রতিনিধি খুলনা

দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের আগুনে পোড়া রোগীদের অন্যতম ভরসার স্থল খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল বিশেষায়িত আবু নাসের হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিট। কিন্তু জনবল সংকটে কাঙ্ক্ষিত সেবা পাচ্ছেন না রোগীরা। পাশাপাশি রয়েছে জায়গা সংকট। অবস্থায় ভর্তি রোগীদের চিকিৎসাসেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে দুই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে।

দুই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, জনবল জায়গা সংকটসহ নানা সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও সর্বোচ্চ সেবা নিশ্চিতের চেষ্টা করছেন তারা। রোগীর অবস্থা জটিল না হলে আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতাল থেকে ঢাকায় রেফার করা হয় না। তবে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে জরুরি প্রয়োজনে রোগীদের ঢাকায় প্রেরণ করা হয়।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আগুনে পোড়া রোগীর সুষ্ঠু চিকিৎসার লক্ষ্যে ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে আবু নাসের হাসপাতালে বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক ইউনিট চালু করা হয়। কাগজে-কলমে ইউনিটে ৩৫টি শয্যা থাকলেও জায়গা সংকটের কারণে মাত্র ২০টি শয্যা চালু করা হয়েছে। ২০টি শয্যায় সারা বছরই রোগী থাকেন। অনেক সময় শয্যার দ্বিগুণ বা তিন গুণ রোগীও ভর্তি থাকেন সেখানে। তাদের সুষ্ঠু চিকিৎসার জন্য চারজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরিবর্তে আছেন মাত্র একজন।

অন্যদিকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২০ শয্যার বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিট চালু করা হয় ২০১৪ সালে। কাগজে-কলমে ইউনিটে দুজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকসহ মোট ছয়জন থাকার কথা। কিন্তু বাস্তবে আছেন মাত্র একজন। অথচ হাসপাতালের ইউনিটে সব সময় ৫০-৬০ জন রোগী ভর্তি থাকেন।

আবু নাসের হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি রোগী পাবলার কারিগরপাড়ার আবু বক্কর বলেন, এখানে চিকিৎসা সেবা ভালো। তবে সরকারিভাবে বিনা মূল্যে ওষুধ দেয়া হয় না।

আবু নাসের হাসপাতালে ভর্তি আরেক রোগী নং কাস্টমঘাট এলাকার রিনা বেগম বলেন, হাসপাতালে জরুরি প্রয়োজনে চিকিৎসক পাওয়া যায় না। একজন চিকিৎসক থাকায় জরুরি সময়ে সেবা পাওয়া কঠিন হচ্ছে।

খুলনার আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালের পরিচালক ডা. বিধান চন্দ্র গোস্বামী বলেন, হাসপাতালে জায়গা চিকিৎসক সংকট রয়েছে। এখানে ৩৫ জনের চিকিৎসা ব্যবস্থার প্রস্তাব অনুমোদন থাকলেও ২০টি বেড রয়েছে। জায়গার অভাবে বাকি ১৫টি বেড স্থাপন করা যাচ্ছে না। একজন চিকিৎসক দিয়ে রোগীদের সেবা প্রদান করা হচ্ছে। এখান থেকে ঢাকায় স্থানান্তরের তেমন রেকর্ড নেই। এখানে রোগীর চাপ অনুযায়ী সুষ্ঠু সেবা প্রদানের জন্য জনবল বাড়ানো প্রয়োজন।

খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের প্রধান সহকারী অধ্যাপক ডা. তরিকুল ইসলাম বলেন, হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগে ২০টি বেড রয়েছে। কিন্তু করোনার মধ্যেও এখানে ৪০-৫০ জন রোগী থাকেন। করোনার আগে স্বাভাবিক অবস্থায় ৭০-৮০ জন রোগী থাকতেন।

তিনি বলেন, এখানে স্বাভাবিক চিকিৎসাসেবা দেয়ার জন্য চারজন চিকিৎসক প্রয়োজন। ছয় মাস ধরে দুজন সহকারী একজন রেজিস্ট্রারের পদ শূন্য রয়েছে। এই বার্ন ইউনিটে আট বছর ধরে কোনো নিয়োগ বা পদোন্নতি নেই।

তিনি জানান, খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বার্ন ইউনিটে মৃত্যুর হার - শতাংশ। এখানে আইসিইউ সার্পোট না থাকা, যন্ত্রপাতির অপর্যাপ্ততা রোগীর অনুরোধের কারণে - শতাংশ রোগী ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়। আর যশোর, ফরিদপুর, বরিশালসহ আশপাশের এলাকা থেকে - শতাংশ রোগী খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আসেন।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন